উহান থেকে কোভিড -১৯ দিনলিপি: ‘মহামারী থেকে বাঁচা যায় কিন্তু উৎপীড়ন, ভয় ও ঘৃণা থেকে নয়’

একটি উঠোনে বাচ্চারা লাফালাফি খেলছে। (ছবির কৃতজ্ঞতা: গুও জিং। অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।)

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা নারীবাদী পণ্ডিত এই জিয়াওমিং এবং নারীবাদী কর্মী গুও জিং রচিত ধারাবাহিক দিনলিপির মধ্যে নীচের পোস্টটি ত্রয়োদশ। দুজনই কোভিড -১৯ মহামারীর কেন্দ্রস্থল উহান শহরে বসবাস করছেন। এখানে ধারাবাহিকটির প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়চতুর্থ, পঞ্চম,  ষষ্ঠ. সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম একাদশ এবং দ্বাদশ অংশের সংযোগ রয়েছে।

কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক প্রভাব সম্পর্কে গ্লোবাল ভয়েসেসের বিশেষ কভারেজটি দেখুন।

এই কিস্তিটি ২০২০ সালের ২০ মার্চ থেকে ২২ মার্চ তারিখের মধ্যে লেখা হয়েছে। চীনা ভাষায় লেখা মূল দিনলিপিগুলি ম্যাটার নিউজে প্রকাশিত হয়েছে।

গুও জিং: ২০ মার্চ, ২০২০

有人在群里发消息:治好回家后复发后有症状大家知晓还好点,还有回家复发无任何症状那才真可怕,建议不要过早溜娃溜狗,引起重视不能最后放松警惕啊!
有几个人应和了起来。每次发类似信息的都是那几个人。我开始替那些依然走不出家门的人担心,不知道他们内心的自我封锁什么时候可以结束

কেউ একজন আমাদের অনলাইন গ্রুপকে একটি বার্তা পাঠিয়েছে: কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য লাভ করা কিছু কিছু রোগী লক্ষণসহ বা কোন লক্ষণ ছাড়াই আবার সংক্রমিত হতে পারেন। পরেরবার আক্রান্ত হওয়া আরো ভয়াবহ। খুব তাড়াতাড়ি বাচ্চাদের বাইরে বা কুকুরগুলিক্র হাঁটাতে না নিয়ে যাওয়াই ভাল। আমাদের সতর্কতা শিথিল করা উচিৎ নয়।
বার্তাটি কিছু প্রতিধ্বনি তুলেছিল। এরকম বার্তা সাধারণত দলের অল্প কিছু লোক পাঠিয়ে থাকে। যারা বাড়ির বাইরে পা বাড়ানোর সাহস করে না তাদের বিষয়ে আমি উদ্বিগ্ন হতে শুরু করি। কখন তাদের মন শান্ত হবে

গুও জিং: ২১ মার্চ, ২০২০

封锁让很多人没有收入,可很多支出又没法停。封锁给越来越多的人带来了经济危机。湖北封城将近2个月,很多行业也受到重创。湖北的一个朋友说,她家附近的一个养鸡户由于封城买不到饲料,开始把家里的鸡便宜卖给别人,甚至送人。
人们承受着封锁带来的经济负担、心理压力,这些重压已经到了危及生命的程度。很多国家和地区都在给居民发放补贴。发放补贴是展现政府责任的措施。我们要把走投无路的人拉回来,而不是推出去。

লকডাউন অনেক লোককে উপার্জনহীন করে ফেলেছে, কিন্তু খরচের বিল আসা থেমে নেই। লকডাউনটি আরো বেশি বেশি লোককে আর্থিক সংকটে ফেলছে। হুবেই প্রদেশ প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে, ফলে অনেক ব্যবসায়িক খাতের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। আমার এক হুবেইয়ের বন্ধু নিকটস্থ একজন পোল্ট্রি খামারী লকডাউনের সময় মুরগির খাবার কিনতে না পারায় তার মুরগি সস্তায় বিক্রি বা এমনকি বিনামূল্যে বিক্রি শুরু করার কথা বলেছিল।
মানুষ বিশাল আর্থিক ও মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছে এবং চাপটি জীবনের হুমকির পর্যায়ে চলে গেছে। অনেক দেশ তাদের দেশবাসীদের ভর্তুকি দিয়েছে। এ জাতীয় ব্যবস্থা সরকারের দায়িত্বের বহিঃপ্রকাশ। যারা তাদের সমস্যার সমাধান নিজেরা করতে পারে না এমন লোকদের দূরে সরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে আমাদের তাদের সাহায্য করা উচিৎ।

এই জিয়াওমিং: ২২ মার্চ, ২০২০

武汉被封城60天了,小区里生活平静。莺飞草长,门前的日本晚樱马上就是繁花满树。人们都宅在家中,网格员让大家每日在小程序里填写报表。为了得到今后顺利出行的机会,我也每日汇报个人隐私:在家吗?在家。体温正常吗?正常。住房是自己的还是别人的?居家自住。家中几个人?……除此之外,每天还在湖北健康码小程序上打卡。总之,我们的个人信息比玻璃都透明。
我们一直在放弃,等待上级有关部门决定自己的命运。如今的等待就是小区解封,可以自由出行,可以去超市买菜,外出见朋友;至少,湖边跑个步什么的。忍了这么久,动力是什么呢?无非是不得病,活下去。
可是,我们活下去了,世界改变了。你还相信一切会是从前的样子吗?
作为一个户籍广州现居武汉的人,我被告知,现在既不能去北京,也不能回广州。…如果武汉新增病例已经归零,如果健康码以及每日小区疫情报表都管用,如果说我们是健康的;为什么不能回到户籍或工作所在地?
另一个如果是:我们依然被假定为无症状的病毒携带者;那么,归零的统计、健康码打卡以及每日报表,不是浪费了很多人的时间吗?
又或者,我们属于疫区居民,不管健康与否,对其他地区总是一个风险人群。
在这个想象意义大于统计意义的推论中,个人的喜怒哀乐、个人权利和尊严,都无足轻重,不在考量的范围内。它依然在全社会范围内,支持对湖北人的地域偏见和恐惧。
一个人可能从新冠肺炎中幸存下来,却难以在排挤、恐惧和仇恨中活下去。
当人们无法应对一种困难,一个简单的办法就是找替罪羊。统治者也可以以此转移公众焦虑,缓解真正的危机,逃避被问责。这是原始的做法,但很方便。
人民的希望未必仅在于瑞德西韦,希望之有无,还在于我们内心是否保有对疾病带来的伤亡而深感悲痛的能力。……总之,把对方看做人之同类的情感,是缓解他人病苦的起点。

উহান লক হয়ে যাওয়ার পর থেকে আজ ৬০তম দিন। আমার আবাসিক এলাকার জীবন শান্তিপূর্ণ। পাখি উড়ে যায়, ঘাস জন্মায় আমার দরজার সামনে জাপানি চেরি গাছ শীঘ্রই ফুলে ফুলে ভরে যাবে। সবাই ঘরে আটকে আছে। আমাদের লকডাউন খুলে দেওয়ার পরে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দানের বিনিময়ে গ্রিড নিয়ন্ত্রণকারীরা [দ্রষ্টব্য: ছোট ছোট এলাকার সামাজিক ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা] প্রতিদিন আমাদের অনলাইনে হালনাগাদ করতে বলেন। প্রতিদিন আমি আমার ব্যক্তিগত তথ্যের প্রতিবেদন দিই: আপনি কি বাড়িতে আছেন? হ্যাঁ। আপনার তাপমাত্রা কি স্বাভাবিক? হ্যাঁ। আপনি কি আপনার নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নাকি অন্য কারো অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন? আমি আমার নিজের অ্যাপার্টমেন্টে থাকি।  আপনার অ্যাপার্টমেন্টে কতজন লোক ্থাকে?… এছাড়াও, আমাকে প্রতিদিন “হুবেই স্বাস্থ্য কোড” এর অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনটিতে চেক ইন করতে হয়। সংক্ষেপে, আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য কাঁচের চেয়েও স্বচ্ছ।
আমরা হাল ছেড়ে দিতে থাকি। আমরা আমাদের ভাগ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে কর্মকর্তাদের অপেক্ষায় থাকি। এখন আমরা আমাদের আবাসিক এলাকার লকডাউন তুলে নেওয়ার জন্যে অপেক্ষা করছি। তারপর আমরা স্বাধীনভাবে বাইরে যেতে, সুপারমার্কেটগুলিতে খাবার কিনতে এবং বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যেতে পারবো। হায়, আমরা হ্রদের ধারে দৌড়াতে যেতে পারি। কী আমাদেরকে এসব সহ্য করতে অনুপ্রাণিত করেছে? আমরা অসুস্থ হতে চাই না এবং আমরা মহামারী থেকে বাঁচতে চাই।
এবার আমরা বেঁচে গেছি এবং বিশ্বের পরিবর্তন হয়েছে। আপনি কি বিশ্বাস করেন সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে?
গুয়াংঝুতে আমার পরিবারের নিবন্ধন রয়েছে তবে বর্তমানে উহান শহরেই থাকি। আমাকে জানানো হয়েছে আমার এখন বেইজিং বা গুয়াংঝুতে যাওয়ার অনুমতি নেই … নতুন নিশ্চিত ঘটনার সংখ্যা এখন শূন্য হওয়ার পর তথাকথিত স্বাস্থ্য কোড এবং কমিউনিটির মহামারী প্রতিবেদন ব্যবস্থা নির্ভরযোগ্য হলে আমাদের স্বাস্থ্যবান এবং ভাইরাসমুক্ত থাকার কথা। আমরা কেন যেখানে পারিবারিক নিবন্ধন রয়েছে সেখানে  বা যেখানে আমাদের কাজ করার কথা সেখানে ফিরে যেতে পারি না?
আমাদেরকে লক্ষণবিহীন ভাইরাস বাহক হিসাবে সন্দেহ করা হয়ে থাকলে প্রতিদিন আমাদের অবস্থা এবং স্বাস্থ্য প্রতিবেদন হালনাগাদ করার যুক্তিটাই বা কী?
সম্ভবত মহামারীর স্থানীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নির্বিশেষে অন্যান্য জায়গাগুলিতে ঝুঁকি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
উপরের সবগুলি পরিস্থিতি হলো সেই যৌক্তিকতার ফল যা পরিসংখ্যানের চেয়ে মানুষের কল্পনাশক্তিরা দ্বারা বেশি নিয়ন্ত্রিত। এই জাতীয় যৌক্তিকতায় আলাদাভাবে ব্যক্তিগত আবেগ, অধিকার এবং মর্যাদাবোধকে এড়িয়ে যাওয়া হয়ে থাকে। হুবেই থেকে আসা লোকদের প্রতি সংস্কার এবং ভয় মানুষের মনে বাসা বেঁধে আছে।
কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বাঁচা যায় কিন্তু উৎপীড়ন, ভয় এবং ঘৃণা থেকে নয়।
জনগণ কোন কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে না পারলে এর থেকে পরিত্রাণের একটি সহজ উপায় হিসেবে একটি বলির পাঁঠা খুঁজে বের করে। জনসাধারণের দৃষ্টি সরানো, রাজনৈতিক সঙ্কট প্রশমিত করতে এবং দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যেতে সরকারও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে। এটি একটি আদিম পদ্ধতি হলেও পরিত্রাণ লাভের জন্যে খুবই সুবিধাজনক।
আমাদের আশা শুধু রেমডেসিভির ড্রাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের আশা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যে অনুশোচনা বোধ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে…সহানুভূতি হলো অন্যদের বেদনা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রারম্ভিক উপায়।

গুও জিং: ২২ মার্চ, ২০২০

今天,中国民航局等五部门发公告称,国际航班目的地为北京的航班需从天津、石家庄等12个指定的第一入境点入境,在第一入境点做完检疫并符登机条件的旅客可搭乘原航班入京。看到这个消息的时候,我脑海中浮现了一些北京人用趾高气扬的口气说着:“我们北京人……”。
这些北京人确实有得意的资本,毕竟北京为了控制入境感染人数的增加,能把别的城市作为过滤器,还有哪个城市可以做到呢?北京各方面的资源都很多,应对疫情上的资源也不会少,可是却在这种时候将风险转移出去。这是极其不好的示范。

আজ,চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ পাঁচটি সরকারি বিভাগ ঘোষণা করেছে যে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক বিমানগুলি প্রথমে তিয়ানজিন এবং শিজিয়াঝুয়াংসহ অন্যান্য বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হবে। যাত্রীরা কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতি শেষ এবং সমস্ত পরিদর্শন পাস করে তবেই তারা একই ফ্লাইটে বেইজিংয়ে যেতে পারবে। এই সংবাদটি এক অভিজাতপন্থী ও অহঙ্কারী বেইজিংয়ের চেহারা নিয়ে “আমরা বেইজিংবাসী…” আওয়াজ তুলে আবারো আমার মনে ফিরে এসেছে।
এসব বেইজিংবাসী তাদের শহরে আমদানি করা ঘটনার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে অন্যান্য শহরগুলিকে ছাঁকনি হিসেবে ব্যবহার করতে পারার ক্ষমতা নিয়ে গর্ব করতে পারার মতো একটি (রাজনৈতিক) রাজধানীকে উপভোগ করে। অন্য কোন শহরের এরকম শক্তি নেই। বেইজিং বিভিন্ন দিক থেকে সম্পদশালী, এবং মহামারী সামাল দেওয়ার জন্যে তাদের প্রচুর চিকিৎসা সংস্থানও রয়েছে। তবে তারা এখনো অন্যান্য শহরগুলিতে ঝুঁকি স্থানান্তর করার চেষ্টা করছে। এটা একটা খুব খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .