সম্প্রতি ৪ জন ইরানিয়ান-আমেরিকান নাগরিক মুক্তি পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক জেসন রেজাইয়ানও রয়েছেন। গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল। ১৮ মাস জেল খাটার পর ইরানের সাথে মার্কিন সরকারের বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় তিনি ছাড়া পেলেন।
“জাতীয় স্বার্থের” অংশ হিসেবে এই বন্দি বিনিময় হয়েছে বলে তেহরানের প্রসিকিউটর জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই কার্যক্রমের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ৭ জন ইরানি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে।
রেজাইয়ান ছাড়াও মুক্তিপ্রাপ্ত আর তিনজন হলেন সাঈদ আবেদিনি, আমির মিরজাই হেকমতি এবং নসরাতুল্লাহ খোসরাভি। এছাড়া ম্যাথু ট্রেভিথিক নামের একজন মার্কিন শিক্ষার্থীকেও মুক্তি দিয়েছে ইরান। ম্যাথু’র পরিবারের পক্ষ থেকে তার আটকের কথা জনসমুখে প্রকাশ করতে না চাওয়ায় একপর্যায়ে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দির তালিকা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়েছিল। অবশ্য পরে সে মুক্তি পেয়েছে।
ইরান কর্তৃক বন্দিদের মুক্তিদান কার্যক্রম অনেককে আশাবাদী করে তুলেছে। বিশেষ করে যেসব পরিবারের সদস্যরা এখনো ইরানের জেলে বন্দি রয়েছেন। তবে যেসব রাজনৈাতিক বন্দিদের শক্তিশালী বিদেশি লবিং নেই, তাদের সংকটাবস্থা এখনো কাটেনি।
ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানের নির্বাহী পরিচালক হাদী ঘাইমি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ইরানের এই পদক্ষেপ যদি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মিটমাটের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে, তাহলে ইরানকে জাতীয় মিটমাটের পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই ইরানে বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন, তাদের মুক্তি পাওয়ার পথ সুগম হবে। উল্লেখ্য, গ্লোবাল ভয়েসেস ইরানের রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি প্রচারণায় একজন অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
ক্যাম্পেইন তালিকায় এমন কিছু ব্যক্তির নাম রয়েছে, যারা শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনার কারণে গ্রেফতার হয়েছেন:
- পদার্থবিজ্ঞানী ওমিদ কোকাবি
- নারী অধিকারকর্মী বাহারেহ হেদায়েত
- সাংবাদিক আইসা সাহারখিজ
- মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদী
- মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আবদুলফাত্তাহ সোলতানি এবং মোহাম্মদ সেইফজাদেহ
- গ্রিন মুভমেন্ট নেতা মির হোসাইন মৌসাভি, মেহদী কাররাউবি এবং জাহরা রাহনাভার্ড
সাঈদ মালেকপুর, অ্যাটেনা ফারঘাদানি এবং মোস্তফা আজিজি’র মতো যেসব মানবাধিকারকর্মী অন্যায়ভাবে আটক হয়েছেন, অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, গ্লোবাল ভয়েসেস অ্যাডভোকেসি তাদের গল্পগুলো নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে এসেছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানের তথ্যমতে, এখনো অনেক দ্বৈত ও বিদেশি নাগরিক ইরানের জেলে বন্দি রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হলেন ইরানিয়ান-আমেরিকান সিয়ামাক নামাজি। তিনি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আটক হয়েছেন। ৭৬ বছর বয়সী ইরানিয়ান-ব্রিটিশ নাগরিক কামাল ফরাউঘিও এই তালিকায় রয়েছেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে আটক রয়েছেন। এছাড়া লেবাননের নাগরিক নাজার জাকাও রয়েছেন। নাজার জাকা আমেরিকায় বসবাস করেন। তিনি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরানে অনুষ্ঠিত একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেসময়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়