নির্যাতনে ইরানি ব্লগার সাত্তার বেহেশ্তির মৃত্যু

সাত্তার বেহেস্তির ব্লগের স্ক্রিনশট, এইচটিটিপিঃ//মোগালহ৯১.ব্লগস্পট.এসই

বিরোধী ওয়েবসাইট দল কর্তৃক নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা একজন ব্লগারের আকস্মিক মৃত্যুর ভীতিজনক খবর প্রথম পোস্ট করার পর ইরানি নেট নাগরিকেরা গুরুতর একটি অনলাইন ঝড় [ফার্সী] শুরু করেছে। সাত্তার বেহেশ্তির পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকারমানবাধিকারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৮ শে অক্টোবর, ২০১২ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের দশ দিন পর ঘোষণা দেওয়া হয় যে তিনি মারা গেছেন।

সাত্তার বেহেশ্তি। সূত্রঃ সাত্তার বেহেশ্তির জন্য ফেসবুক গণসংযোগ

৪১ জন রাজনৈতিক কারাবন্দী সাহসিকতার সাথে বলেছেন যে তাঁরা স্বচক্ষে সাত্তারের দেহে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন।

রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডার সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা ইরানি কর্তৃপক্ষকে ব্লগারের মৃত্যুর সঠিক ঘটনা সুস্পষ্টভাবে জানানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রার্থনা করেছে যেন এই অপরাধের অবশ্যই বিচার করা হয়।

বেহেশ্তির ব্যক্তিগত ব্লগ [ফার্সী] সহ তাঁর সাইবার-স্বক্রিয়তাই হয়তো তাঁর এই নৃশংস গ্রেফতার, অত্যাচার ও এর চূড়ান্ত ফল হিসেবে ৩৫ বছর বয়সে মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাঁর সংক্ষিপ্ত নীতিবাক্যগুলো ফার্সী হতে অনুবাদ করলে দাঁড়ায়ঃ “সমালোচনা। ইরান ও ইরানিরা দীর্ঘজীবি হোক। আমার জীবন ইরানের জন্য।” ২৬ শে অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর শেষ পোস্টটি প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর দুই দিন পর তিনি গ্রেফতার হন।

তাঁর শেষ পোস্টটিতে তিনি ইরানের পার্লামেন্ট প্রধান আলি লারিজানির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন লারিজানি এবং ইসলামিক গণপ্রজাতন্ত্র এতোটাই ভন্ড যে তারা মানবাধিকার লংঘনের জন্য অন্যান্য দেশের সমালোচনা করে। বেহেশ্তি লিখেছেন [ফার্সী]:

আপনারা সৌদি আরব, বাহরাইন… পশ্চিমা দেশগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা বলেন, যেন আপনারা ইরানে ভূস্বর্গ বানিয়ে রেখেছেন। না, আপনারা তা পারেননি। যদি আপনারা সত্যিই পৃথিবীতে স্বর্গ তৈরী করে থাকেন তবে মানুষকে কেন তা ইরানে এসে দেখে যেতে বলছেন না?

এই “অপরাধের” প্রেক্ষিতে ইরানি নেট নাগরিকদের দেখানো প্রতিক্রিয়া আমাদের আবারো মনে করিয়ে দিয়েছে যে ব্লগাররা তাদের ভার্চুয়াল কার্যক্রমের জন্য জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিতে পারেন।

ফেসবুকে [ফার্সী] একটি পেজ শুরু করা হয়েছে যার শিরোনাম হলো “যারা সাত্তার বেহেশ্তির মৃত্যুর জন্য দায়ী তাদের বিচার হওয়া উচিৎ ”।

আহমাদ শারিফি (@শারিফি১২৩) টুইট করেছেনঃ

وبلاگ نویس مملکت رو گرفتن به جرم وبلاگ نویسی تو زندان اوین کشتن. بعد رییس جمهور مملکت رفته اجلاس جهانی دموکراسی از دموکراسی غرب انتقاد میکنه

তারা একজন ব্লগারকে জেলহাজতে নিল ও সেখানেই তাকে মেরে ফেললো। এরপর পশ্চিমা গণতন্ত্রের সমালোচনা করে ইন্দোনেশিয়াতে গণতন্ত্রের জন্য বিশ্ব সম্মেলনে গেলেন আমাদের প্রেসিডেন্ট।

হাসান এজরাই তাঁর গুগল+প্রোফাইলে [ফার্সী] পোস্ট করেছেনঃ

সেখানে কি ঘটছে যে প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ খুন হচ্ছে? তারা কারাবন্দী লোকদের সাথে আসলে কি ধরণের আচরণ করে? তারা জাহরা বানী ইয়াঘুবের সাথে কি করেছিলো যার কারণে তিনি মারা গেলেন? তারা জাহরা কাজেমির সাথেই বা কি করেছিলো যার কারণে সেও মৃত্যু বরণ করলো? এছাড়াও জেলহাজতে থাকা অন্যসব বন্দীদের সাথেও তাঁরা কি আচরণ করে? বিচার বিভাগের এ ব্যাপারে আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। তাই উচিৎ নয় কি? ঠিক আছে, তাঁদের উচিৎ নয়। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

অমিদ রেজা মীর সায়াফি নামে আরো একজন ব্লগার সন্দেহজনক ঘটনায় তিন বছর আগে ইরানের এক কারাগারে মারা গিয়েছিলেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .