
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শিশু যিশু। বেথেলহেমে শান্ত বড়দিন: গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি শিরোনামে আল জাজিরা ইংরেজির ইউটিউব চ্যানেলের একটি ভিডিওর পর্দাছবি। ন্যায্য ব্যবহার।
একটি বিষয়বস্তু ভাগাভাগি চুক্তির অংশ হিসেবে মূলত ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে নিউ আরবে প্রকাশিত এই নিবন্ধটির একটি সম্পাদিত সংস্করণ গ্লোবাল ভয়েসসে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে।
এবছর বড়দিনের প্রাক্কালে ফিলিস্তিনি ছিটমহলে ইসরায়েলের নৃশংস হামলার মধ্যে বেথেলহেমের একটি গির্জা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজার পরিস্থিতির মতো একটি জন্মের দৃশ্য তৈরি করেছে।
যিশুর বাণী লুথারীয় খ্রিস্ট গির্জায় জন্মের দৃশ্যে ধ্বংসাবশেষ ও ধ্বংসস্তূপে রাখা ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি কেফিয়েহে মোড়ানো একটি খেলনা শিশুকে দেখা যাচ্ছে। কেফিয়াহ ফিলিস্তিনি পরিচয়, ইতিহাস ও সংগ্রামের প্রতীক বোঝালেও ধ্বংসস্তুপ ইসরায়েলের নির্বিচার যুদ্ধে ৭,৭২৯ জন শিশুসহ অন্তত ১৯,৪৫৩ জন নিহত [লেখা প্রকাশ পর্যন্ত] গাজায় ধ্বংসলীলার প্রতিনিধিত্ব করে।
যিশু হিসেবে খেলনা শিশুটি গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজার হাজার শিশুর প্রতিনিধিত্ব করে।
গির্জার যাজক রেভারেন্ড ডক্টর মুনথার আইজ্যাক নিউ আরবকে বলেছেন তিনি এই ধারণাটি এটি তার ধর্মসভার সাথে ভাগাভাগি করেছেন।
“গত সপ্তাহে গির্জার পরিবারগুলি মিলে একসাথে এটি তৈরি করে। এটি ছিল আমাদের পরিবারগুলির জন্যে একটি মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা। রবিবার পরিষেবা চলার সময় কিছু লোক কান্নায় ভেঙে পড়ে,” তিনি বলেন।
বেথেলহেমকে যিশুর জন্মস্থান মনে করা হয়। সাধারণত তার জন্ম উদযাপন করতে প্রতি বছর পশ্চিম তীরের শহরটিতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করলেও গত মাসে বেথেলহেম ও রামাল্লার পৌরসভা এবং গির্জাগুলি গাজার সাথে সংহতি জানিয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বড়দিনের উদযাপন বাতিল ঘোষণা করে পরিবর্তে অনুদান সংগ্রহ করতে সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছে।
“এবছর বেথেলহেমে কোন দর্শনার্থী নেই। যুদ্ধের কারণে তীর্থযাত্রীরা এবছর বেথেলহেমে আসছে না,” রেভারেন্ড আইজ্যাক বলেছেন। “কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ ও সাধারণভাবে গণমাধ্যমের মাধ্যমে এই চাড়িটির প্রতি প্রাপ্ত মনোযোগ ও প্রতিক্রিয়ায় আমরা বিস্মিত ও অভিভূত হয়েছি। আমাদের বার্তা বিশ্বের কাছে পৌঁছেছে বলে আমরা আনন্দিত। এবছর বড়দিনের উৎপত্তিস্থল ফিলিস্তিনে বড়দিনের এই অবস্থা,” তিনি নিউ আরবকে বলেছেন।
যাজক বলেছেন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য “অন্তত এখন পর্যন্ত আসেনি।” তবে তিনি শহরের কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অভিযোগ করেছিলেন, কারণ ইসরাইল জেরুজালেমের উপর কঠোর অবরোধ এবং যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছে।
“আমরা কঠোর অবরোধের মধ্যে আছি। বেথেলহেমে পর্যটক নেই। [ইসরায়েলি বাহিনীর] জেরুজালেম বন্ধ করার পর থেকে সেখানে প্রচুর বেকারত্ব দেখা দিয়েছে।”
পশ্চিমা খ্রিস্টান গির্জাগুলি ২৫ ডিসেম্বরে বড়দিন উদযাপন করলেও অর্থোডক্স গির্জা ও অন্যান্য খ্রিস্টান সম্প্রদায় জানুয়ারিতে ছুটি পালন করে।
ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, অবরোধ ও অর্থনৈতিক কষ্টের কারণে আজকে শুধু অল্প সংখ্যক ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান গাজা ও পশ্চিম তীরে রয়ে গেছে।