জ্যামাইকার বন্য পাখি সুরক্ষার একটি আবেদন

জ্যামাইকাতে পেচারি নামে পরিচিত সুদর্শন ধূসর কিংবার্ড। ছবি: ওয়েন্ডি লি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

জ্যামাইকার বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন অনুসারে “দেশীয় সকল পাখি সুরক্ষিত।” এর মধ্যে দ্বীপের স্থানীয় তোতা ও ছোট্ট তোতা, পেঁচা, সামুদ্রিক পাখি ও সৈকতের পাখি রয়েছে। এমনকি শুধু অল্প সময়ের জন্যে বসবাসকারী পরিযায়ী পাখিরাও আইনটির আওতায় থাকলেও মুরগির মতো গৃহপালিত পাখিদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

আইন অনুসারে ১৬৮৭ সালে প্রথম সুরক্ষিত জ্যামাইকার প্রজাতি সাধারণভাবে “জন ক্রো” নামে পরিচিত তুর্কি শকুন (Cathartes aura)৷ আকারে বড় হলেও মৃতভোজী এই পাখিগুলিকে “নিরাপদ” বলে মনে করা হয়। জরিমানা ৪৩৬ বছর আগে ছিল ৫ পাউন্ড, যার অর্ধেক লঙ্ঘনের অভিযোগকারী ব্যক্তিকে দেওয়া হতো। তবে তার মান আজকের প্রায় ৫৫ হাজার টাকার সমান।

শৈশবে বাটুল দিয়ে পাখি মারার অনেকটা সাধারণ অভ্যাসের কথা উল্লেখ করে পাখি পালনে উৎসাহী ও গ্লোবাল ভয়েসেসের অবদানকারী এমা লুইস বলেছেন জ্যামাইকাবাসীদের “বন্য পাখিদের সাথে নির্মম সম্পর্ক” থাকলেও তিনি স্বীকার করেন প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে প্রথার জনপ্রিয়তা মার খাচ্ছে:

অল্প বয়স্করা [বালকরা] ঘরকুনো জীবনধারা গ্রহণ করায় সম্ভবত পাখিরা একটু ফুরসৎ পেয়েছে।

তবে সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে জীববিজ্ঞানী ড্যামিওন হোয়াইটের ভাগাভাগি করা দুটি ভিডিও সম্পর্কে লুইস বলেছেন “[তাকে] ভেতর থেকে হতবাক করেছে”:

একটিতে “খালি হাতে” পাখি ধরতে পারেন বলে একজন যুবক গর্ব করছিলেন। উদ্দিষ্ট পাখিটি ছিল গাছের ডালে চুপচাপ বসে বিশ্রামরত একটি ছোট্ট উত্তরের পোটু [Nyctibius jamaicensis]। হঠাৎ বিপদ বুঝতে পেরে এটি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ধরার সময় যুবকটি সম্ভবত পাখিটিকে আঘাত দেয়। পাখিটি বেঁচে আছে কিনা জানি না। এই আইনটিতে আপনি দেশীয় পাখিদের হত্যা বা আহত করার জন্যে একা ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি পাবেন।

পোটুরা নিশাচর বলে তারা “চোখ বন্ধ করে, সম্পূর্ণ নিশ্চল ও সোজা হয়ে এক ধরনের ধ্যানের ঘোরে” সারাদিন কাটায়। প্রায়শই একটি পেঁচার (পাটু) স্থানীয় নামের সাথে এটির নাম বিভ্রান্তি তৈরি করলেও এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতি। শুধু একটি ডিম পাড়া পাখিটির প্রজাতিকে সুরক্ষা আরো জরুরি করে তোলে।

এদিকে দ্বিতীয় ভিডিওটিতে একজন লোককে গর্বিতভাবে সুতোয় একটি মৃত ধূসর কিংবার্ড (Tyrannus dominicensis) প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। ঘটনাক্রমে লুইসের ব্লগের নাম – জ্যামাইকাতে পেচারি নামে পরিচিত – বংশবৃদ্ধির জন্যে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে উড়ে আসা একটি গ্রীষ্মকালীন পরিযায়ী পাখি। এই ধরনের বন্যপ্রাণী শিকারীরা পাখিরা ডালে নামলে তাদের ধরার জন্যে প্রায়শই গাছের ডালে – বেআইনিভাবে – “আঠা” লাগালে তারা “বাঁচার চেষ্টা ও যন্ত্রণায় মারা না যাওয়া বা মানুষ সংগ্রহ না করা পর্যন্ত” আটকে থাকে।

লুইসের সন্দেহ এই পাখি চোরাকারবারীরা মাত্র চারটি প্রজাতির সীমিত সংখ্যক ঘুঘুকে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হলেও শিকারের মরসুমের সুযোগ নেয়। লুইসের মতে “ইংরেজ উচ্চ শ্রেণীর পাখিদের গুলি করতে দেওয়া নব্য ঔপনিবেশিক উচ্ছিষ্ট” ১৯ আগস্ট শুরু এবং ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া জ্যামাইকার শিকারের মরসুমটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় পরিবেশ ও পরিকল্পনা সংস্থা (এনইপিএ)। ইতোমধ্যে এটি দিনের নির্ধারিত সময়ের বাইরে এবং একটি আবাসিক এলাকার কাছাকাছি শিকারের অন্তত তিনজন শিকারীর নিয়ম অমান্যের ঘটনা উদ্ধৃত করেছে।

বিপরীতক্রমে বেঁচে থাকতে ভয় না পাওয়া এলাকাগুলিতে পাখিরা বিস্তার লাভ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, লুইসের পাখি-বান্ধব বাগানটি সম্প্রতি দুটি পরিযায়ী প্রজাতি: আমেরিকান রেডস্টার্ট (Setophaga ruticilla) এবং প্রেইরি ওয়ারব্লার (Setophaga discolor) এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে যারা তার দেওয়া “ওয়ারব্লার হোটেল” নামের একটি নির্জন কাঁটাঝোপে বাসা বেঁধেছে৷ তিনি অনুমান করে তারা ২০২৪ সালের মার্চ বা এপ্রিল পর্যন্ত থেকে বংশবৃদ্ধির জন্যে টেক্সাস বা লুইজিয়ানার কিছুটা উত্তর দিকে চলে যাবে।

মার্কিন পক্ষী ও প্রকৃতিবিদ রজার টোরি পিটারসনের জ্ঞানের মুক্তো উদ্ধৃত করে লুইস পাখি সম্প্রদায়কে রক্ষা করার গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন:

বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের অধীনে সকল দেশীয় পাখি সুরক্ষিত। গল্পটি শেষ।

আমাদের পাখিরা সমস্যায় পড়েছে। আসুন তাদের রক্ষা করি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .