পরাধীনতা পর্যবেক্ষক প্রতিবেদন: প্রবেশাধিকার

ছবির সৌজন্যে আমেয়া নাগরাজন

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে। এই অংশটি পরাধীনতা পর্যবেক্ষকের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসা প্রবেশাধিকার সম্পর্কিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের নির্বাহী সারাংশ। এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

ডিজিটাল যুগ বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্যে বিশাল নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। কর্তৃত্ববাদী শাসন নেটকে নীরব করার জন্যে তাদের নিজস্ব বর্ণনা ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাওয়ায় ইন্টারনেট ও গণমাধ্যম বন্ধ বাড়ছে। অর্থনৈতিক লাভ ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক কারণে স্বৈরাচারী সরকার প্রবেশাধিকারে সীমাবধতা আরোপ করে।

বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণের জন্যে ইন্টারনেট বন্ধ ও পরিষেবায় বাধা ক্রমেই সাধারণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নিবর্তনমূলক শাসকগোষ্ঠী সমালোচকদের নীরব ও ভিন্নমত দমনের উপায় হিসেবে পরিষেবায় বাধা আরোপ করে। একইভাবে তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের মতামত ও ধারণা প্রচারের অধিকারকে প্রভাবিত করে বলে ইন্টারনেট অবরোধগুলি মানবাধিকারের জন্যে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিকারক।

এই প্রতিবেদনে ইন্টারনেট বন্ধ ও পরিষেবা বিঘ্নের ঘটনাগুলির মূল অনুসন্ধানগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ এটি মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে ইরানের ইন্টারনেট বাধা ও রুশ উইকিপিডিয়া অবরোধের উপর ভিত্তি করে ব্যাখ্যা করে কীভাবে ইন্টারনেট অবরোধগুলি জনগণকে দমন করতে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সীমিত করতে নিবর্তনমূলক শাসকগোষ্ঠীর জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হয়ে উঠেছে। সংক্ষেপে, এই প্রতিবেদনটি জনগণের উপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও দমন-পীড়ন বজায় রাখতে কীভাবে শাস্তিমূলক কর ও অত্যধিক আইন প্রণয়ন কর্তৃত্ববাদী চর্চা তৈরি করে তা ব্যাখ্যা করবে।

***

ডিজিটাল যুগ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় একাধারে অভূতপূর্ব সুযোগ ও বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। ইন্টারনেটের অবাধ মতপ্রকাশ ও তথ্য বিনিময়ের একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা থাকলেও এটি স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে ভিন্নমত দমন ও তাদের নিজস্ব বর্ণনা চাপিয়ে দেওয়ার একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করে বলে ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারে সীমাবদ্ধতা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। ইন্টারনেট বন্ধ ও পরিষেবায় বিঘ্নতা বাধা বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণের ক্রমবর্ধমান সাধারণ নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে এবং মানবাধিকারের উপর তাদের প্রভাব উল্লেখযোগ্য।

এই প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে মাহসা আমিনির মৃত্যুতে ইরানের প্রতিক্রিয়া ও রুশ উইকিপিডিয়া অবরোধ কীভাবে ইন্টারনেট অবরোধগুলি নিবর্তনমূলক শাসকগোষ্ঠীর জনগণকে দমনের প্রভাবশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এমন ইন্টারনেট বন্ধ ও পরিষেবায় বিঘ্নতার উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলি তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম ঘটনায় স্বৈরাচারী শাসক ভিন্নমত দমন  ও তথ্যের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ক্ষমতার উপর তার দখল বজায় রাখতে ইন্টারনেট অবরোধ প্রয়োগ করে। দ্বিতীয় ঘটনায় সরকার ইউক্রেন আগ্রাসনের বর্ণনা নিয়ন্ত্রণ ও যুদ্ধ সম্পর্কে বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি দমন করতে প্রবেশাধিকারে বাধা প্রয়োগ করে।

রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও দমন-পীড়ন বজায় রাখতে কর্তৃত্ববাদী চর্চা হিসেবে শাস্তিমূলক কর কীভাবে ব্যবহার করা যায় তাও প্রতিবেদনটিতে আলোচনা করা হয়েছে। উগান্ডা, বেনিন ও জাম্বিয়ার মতো দেশগুলি সামাজিক গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট বান্ডেলগুলিতে কর প্রয়োগ করে এই মঞ্চগুলিতে প্রবেশাধিকারকে বিলাসবহুল করে নাগরিকদের স্বাধীনভাবে নিজেকে প্রকাশ ও অনলাইনে তথ্য ভাগাভাগি করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে৷ এই শাস্তিমূলক কর ব্যবস্থা ডিজিটাল বিভাজনকে প্রসারিত করে, সমাজের দরিদ্রতম সদস্যদের অনলাইন যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত করছে। ফলে অনলাইনে মতপ্রকাশের অধিকার কিছু নির্বাচিত কয়েকজনের জন্যে সংরক্ষিত একটি বিশেষাধিকারে পরিণত হচ্ছে যা তথ্যের সমান প্রবেশাধিকারে গণতান্ত্রিক নীতিকে ক্ষুন্ন করে এবং নাগরিকদের মধ্যে ধারণার আদান-প্রদানে বাধা দেয়।

অন্যান্য চর্চার মধ্যে রয়েছে প্রায়ই তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও ভিন্নমত দমনে কর্তৃত্ববাদী শাসনের একটি উপায় হিসেবে কাজ করা ইন্টারনেট সেন্সর আইন। তুরস্ক, চীন ও ইরানের মতো দেশগুলি শিশুদের সুরক্ষা, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও ঘৃণাত্মক বক্তৃতা মোকাবেলার মতো বিভিন্ন অজুহাতে সামাজিক গণমাধ্যম, স্বাধীন সংবাদ সাইট ও বিদেশী মঞ্চগুলিকে সেন্সর করে কঠোর প্রবিধান ও জরিমানা প্রয়োগ করেছে৷ জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু প্রতিরোধ বৈধ উদ্বেগের বিষয় হলেও ইন্টারনেট সেন্সর আইনের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধিতাকে দমন ও তথ্যের প্রবেশাধিকার সীমিত করা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্যে হুমকিস্বরূপ।

উপসংহারে বলা যায় ইন্টারনেট বন্ধ ও পরিষেবা বিঘ্ন বিশ্বব্যাপী নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠীর সাধারণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, যার লক্ষ্য সমালোচকদের চুপ ও ভিন্নমত দমন করা। সমান্তরালভাবে কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলি অর্থনৈতিক লাভ ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কারণে এই ব্যবস্থাগুলি প্রয়োগ করে। এই চর্চাগুলি মানবাধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করে, মতামত ও ধারণার প্রচারে বাধা দেয় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সীমিত করে।

এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

পরাধীনতা পর্যবেক্ষক

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে।

প্রবেশাধিকারের উপর প্রতিবেদনের একটি পিডিএফ ডাউনলোড করুন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .