আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের যুগান্তকারী কূটনৈতিক চুক্তিতে বন্দী ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিনিময়

মুক্ত গ্রাঞ্জ বুননে তৈরি “ইইউ গ্রাঞ্জ পতাকা” – www.freestock.ca সিসি বাই ২.০ এর অধীনে অনুমতিপ্রাপ্ত

আজারবাইজান ১২ জুন, শনিবার, উভয় দেশের মধ্যে গত বছরের তীব্র যুদ্ধে তাদের উদ্ধারকৃত জমিতে আর্মেনীয় বাহিনীর বসানো প্রায় এক লক্ষ ভূমিমাইন চিহ্নিত মানচিত্রের বিনিময়ে ১৫জন আর্মেনীয় বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অ্যান্টনি ব্লিংকেন, ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিল রেকার, ইউরোপীয় পর্ষদের সভাপতি চার্লস মিশেল, জর্জীয় প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি এবং ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (ওএসসিই) এই চুক্তিটির মধ্যস্থতা করেছে।

ইউরোপীয় পর্ষদের সভাপতি চার্লস মিশেল টুইটারে এই নতুন চুক্তির প্রশংসা করেছেন:

আমি আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার একইধরনের মানবিক সাড়ার – আটককৃতদের মুক্তির বিনিময়ে মাইন বসানো অঞ্চলের মানচিত্রগুলি প্রদানের – প্রশংসা করি

বিশ্বাস নবায়নের দিকে প্রথম পদক্ষেপ @রাষ্ট্রপতি_আজারবাইজান এবং @নিকোলপাশিনিয়ান (সাবেক আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী)

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই প্রক্রিয়াটিকে সমর্থন করেছে এবং এর অগ্রগতি বাড়াতে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।

আজারবাইজা্নের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও চুক্তিটির প্রশংসা করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, “মাইন মানচিত্র প্রাপ্তি মাইন অপসারণকর্মীসহ আমাদের কয়েক হাজার নাগরিকের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি মি. ইলহাম আলিয়েভের শুরু করা আগডামের বিভিন্ন পুনর্গঠন প্রকল্প এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণের ফিরে আসা ত্বরান্বিত করবে।”

নতুন চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে আর্মেনিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান তার ফেসবুক পাতায় এখনো ফিরে না আসা আত্মীয়দের পরিবারগুলির কাছে ক্ষমা চেয়ে মুক্ত ১৫ জন আর্মেনীয় বন্দীর একটি ছবি এবং সৈন্যদের নামের একটি সম্পূর্ণ তালিকা শেয়ার করেছেন।

গত বছর আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সংঘটিত দ্বিতীয় কারাবাখ যুদ্ধ শেষে বন্দী প্রত্যাবর্তন এবং ভূমিমাইনের মানচিত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর মস্কোর মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ছয় সপ্তাহের লড়াইটি শেষ হয়, যাতে আজারবাইজান কারাবাখের কিছু অংশ এবং এর আগে আর্মেনিয়ার দখলে নেওয়া সাতটি জেলাগুলির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

এই মাসের শুরুতে আজারবাইজান মাইন বিস্ফোরণের ফলে দু'জন সাংবাদিক ও একজন সরকারি কর্মকর্তার মৃত্যুর এবং কমপক্ষে চার জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। এই ঘটনাগুলির ফলে মাইন বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়িয়েছে।

আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ বলেছেন, বিস্ফোরণের খবর ও হতাহতের খবর পেয়ে তিনি “অত্যন্ত মর্মাহত”:

#আজারবাইজানের #কালবাজার এলাকায় একটিভূমি-মাইন বিস্ফোরণে ২জন সাংবাদিকসহ আজারবাইজানের ৩জন নাগরিক নিহতের কথা জানতে পেরে গভীরভাবে দুঃখিত।

মাইনক্ষেত্রগুলির মানচিত্র হস্তান্তরের জন্যে আমরা #আর্মেনিয়ার প্রতি আহ্বান জানাই। যতদিন তারা এই অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করতে থাকবে, ততদিন আরো জীবন বিপদের মুখে থাকবে!

আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ আটককৃতদের কয়েকজনকে সন্দেহভাজন বন্দি বিবেচনা করায় আজারবাইজানীয় কারাগারে এখনো আর্মেনীয় যুদ্ধবন্দি এবং অন্যান্য আটকের সংখ্যা অস্পষ্ট থেকে গেছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে আজারবাইজান মোটামুটি ৬৯ জন যুদ্ধবন্দি ও অন্যান্য আটক হস্তান্তর করেছে। ৮ জুন তারিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান বলেছেন যে বাকি যুদ্ধবন্দিদের জন্যে তিনি তার ছেলেকে বিনিময় করতে প্রস্তুত।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে নতুন এই অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যদিকে জর্জীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড জাকালিয়ানি এক বিবৃতিতে তিবিলিসিতে কূটনীতিকদের কয়েক মাস ধরে এই চুক্তির জন্যে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .