বাকু সংযোগ: আজারবাইজানের আবজাস মিডিয়ার সমর্থনে সারাবিশ্বের সাংবাদিকরা একত্রিত

ছবি আরজু গেবুলায়েভা

হুমকির সম্মুখীন সাংবাদিকদের কাজ অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা সাংবাদিকদের একটি নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ গল্প ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪  “বাকু সংযোগ” নামে একটি নতুন বৈশ্বিক অনুসন্ধানী প্রকল্প চালু করেছে। নিষিদ্ধ গল্প অনুসারে, প্রকল্পটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে আজারবাইজানি রাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তু হওয়া একটি স্বাধীন সংবাদ সংস্থা আবজাস মিডিয়ার সাংবাদিকদের শুরু করা কাজ শুরু করে৷ নভেম্বর মাসে আবজাস মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক ও সম্পাদককে বানোয়াট দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় যারা এখনো বাকুতে বিচারের অপেক্ষা করছে৷ চালু হওয়ার পর থেকে ১৫টি গণমাধ্যম সংস্থার প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক এই প্রকল্পে যোগ দিয়ে আবজাস মিডিয়া দলের শুরু করা তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

আবজাস মিডিয়া দল অন্যদের তাদের কাজ চালিয়ে যেতে বলার পরে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আবজাস মিডিয়া দলকে সম্বোধন করে প্রকল্পের সূচনা ঘোষিত একটি চিঠিতে নিষিদ্ধ গল্পের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক লরেন্ট রিচার্ড লিখেছেন:

প্রিয় এলনারা, হাফিজ, সেভিঙ্ক, মোহাম্মদ, নারগিজ, উলভি,

আপনারা সম্ভবত আজারবাইজানি জেল থেকে এই কয়েকটি লাইন পড়বেন, আপনারা আপনাদের তদন্তে অক্লান্তভাবে যে অবস্থার শিকারের কথা নিন্দা করে এসেছেন। আপনাদের কাজ একদিন আপনাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আপনাদেরকে কখনোই পিছিয়ে দেয়নি।

আমরা আপনাদের দৃঢ় সংকল্প ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কাছে আপনাদের আহ্বান সমুন্নত না করে পারছি না।  গত দুই মাসে ১৪টি গণমাধ্যম সংস্থার ৪০ জন সাংবাদিক আপনাদের তদন্ত কাজের জন্যে নিষিদ্ধ গল্পে যোগ দিয়েছে।

আপনারা যা আর লিখতে পারবেন না, সীমানা ছাড়িয়ে আমরা তাই লিখেছি। এই শাসকগোষ্ঠী আপনাদের বন্দী করে রাখার কারণটিই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে।

আমরা নিয়মিত আপনার দেশ আজারবাইজানে যাওয়া আমাদেরসহ সকল রাজনীতিবিদ ও বহুজাতিকদের সীমানা ছাড়িয়ে এমন প্রশ্ন করেছি যা আপনারা আর জিজ্ঞাসা করতে পারবেন না।

গ্রেপ্তার আপনাদের গল্প বন্ধ করতে পারেনি।

আপনারা শীঘ্রই মুক্তি পাবেন এই আশায়,

লরেন্ট রিচার্ড

ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের নিপীড়ন আবজাস মিডিয়াকে তার সংবাদকক্ষ আজারবাইজানের বাইরে স্থানান্তরে প্ররোচিত করেছে। গণমাধ্যম সংস্থাটির সম্প্রতি নিযুক্ত প্রধান সম্পাদক সুপরিচিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক, লায়লা মুস্তাফায়েভা বলেছেন সংস্থাটি ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা একটি নতুন দলের সাথে তার স্বাধীন প্রতিবেদন চালিয়ে যাবে। আবজাস মিডিয়ার জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঞ্চটির সকল সম্পাদকীয় কর্মী, ব্যবস্থাপনা ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে চলমান অপরাধমূলক অভিযোগের কারণে “কারাবন্দী আবজাস মিডিয়ার ব্যবস্থাপনা [দলের] অনুরোধে লায়লা মুস্তাফায়েভা অন্তর্বর্তী সময়ে অস্থায়ী প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নতুন সম্পাদকীয় দলের কাজ তদারকি করবেন।” একটি সার-সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে মুস্তাফায়েভা কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি হলো, “আমরা আমাদের কথা লিখিতভাবে বলতে যাচ্ছি।”

আজারবাইজানে সম্প্রতি গ্রেপ্তার অন্তত এগারোজন সাংবাদিকের মধ্যে আবজাস মিডিয়ার সাংবাদিকরা থাকলেও সমালোচকদের চুপ করিয়ে দেওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস সম্পন্ন কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় সংখ্যাগুলি দ্রুত ও প্রায়শই পরিবর্তিত হয়। সাম্প্রতিকতম দেশভিত্তিক প্রতিবেদনে সীমান্তবিহীন প্রতিবেদক লিখেছে, “রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ বহুত্ববাদের সকল চিহ্ন মুছে ফেলতে ২০১৪ সাল থেকে নির্মমভাবে কোনো অবশিষ্ট সমালোচকদের নীরব করার চেষ্টা করেছেন।” সংস্থাটির ২০২৩ সালের সূচকে দেশটি ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫১তম স্থানে রয়েছে। একটি পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনটি গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে।

আইনি রাজনৈতিক বিরোধিতার প্রায়-সম্পূর্ণ অনুপস্থিতিতে বর্তমান রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভের আরো সাত বছরের মেয়াদ নিশ্চিত করতে ৭ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত আগাম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে এই গ্রেপ্তারগুলি ঘটেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .