ইরাকের খসড়া সাইবার অপরাধ আইনের বিরুদ্ধে বলছে সক্রিয় কর্মীরা

বাগদাদ। মোহাম্মদ হুজামের ছবি [সিসি বাই-এসএ ৪.০ (https://creativecommons.org/licenses/by-sa/4.0)]।

বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা ইরাকি পার্লামেন্টকে একটি বিতর্কিত সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত খসড়া আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। আইনটি গৃহীত হলে অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রণীত খসড়া আইনটিতে পাঠ্যাংশে শুধু অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত বক্তব্য সম্পর্কিত অপরাধের জন্যে দীর্ঘ কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এর ৩নং ধারা “দেশের স্বাধীনতা, সংহতি ও নিরাপত্তা, বা তার সার্বিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক, বা নিরাপত্তাজনিত স্বার্থসমূহের ক্ষতি” অথবা “সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব উস্কে দেয়া, নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানো, বা দেশের সুনাম ক্ষুন্ন” করার জন্যে “কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট” ব্যবহার করার দায়ে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিশাল জরিমানার কথা বলা হয়েছে।

ধারা ৪ এবং ধারা ৬ অনুসারে “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ধারনা” প্রচার (ধারা ৪) অথবা “ইলেকট্রনিক আর্থিক ব্যবস্থার আস্থা দুর্বল করে দেয়ার উদ্দেশ্যে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর ঘটনা প্রকাশ বা প্রচার” (ধারা ৬) করায় অভিযুক্ত হওয়ার শাস্তি একই।

এই বছরের গোড়ার দিকে উপসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্র সতর্ক করে দিয়েছে যে:

সন্ত্রাসবাদের একটি স্পষ্ট ও প্রকাশ্য সংজ্ঞা ছাড়া রাজনৈতিক বিরোধী এবং অন্যান্য কর্মীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে এই আইনটি ব্যবহার করা সহজ হবে।

ইতোমধ্যে ইরাকের ইন্টারনেট সম্পর্কিত অধিকার নড়বড়ে অবস্থানে রয়েছে। গত গ্রীষ্মে কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখে বসরা ও অন্যান্য শহরে দুর্নীতি ও কঠোর জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

গৃহীত হলে খসড়া আইনটি শুধু ইরাকের নাগরিকদের যোগাযোগের অধিকারগুলির ব্যবহার, অবাধে কথা বলা এবং অনলাইন তথ্যে প্রবেশাধিকার কঠিন করে তুলবে মাত্র।

এই মাসের গোড়ার দিকে এখনি_প্রবেশ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ইরাকি মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ মন্দিরসহ ৯টি মানবাধিকার গোষ্ঠী ইরাকি সংসদকে খসড়া আইনটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে:

…আইনটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনলাইনে তাদের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতাগুলি ব্যবহার করতে শংকিত করবে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারগুলিকে অন্তঃসার শূন্য করবে। ইরাকে তথ্য স্বাধীনতার অধিকার ভোগের পাশাপাশি প্রকাশ্য কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অধিকারের উপর আইনটি সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

১৪ মার্চ তারিখে খসড়া আইনটি নিয়ে সংসদে বিতর্ক করার কথা ছিল। কিন্তু পরে দিনের কার্যসূচী থেকে এটা বাদ দেওয়া হয়।

ইরাকি প্রতিনিধি পর্ষদের প্রাতিষ্ঠানিক টুইটার অ্যাকাউন্ট কোন আইন তা নির্দিষ্ট না করে “কিছু আইনের সমালোচনা” করার জন্যে যারা তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে। বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠী এবং সক্রিয় কর্মীরা এই প্রতিক্রিয়াটিকে স্বাগত জানালেও তারা এখনো উদ্বিগ্ন রয়েছে।

ক্ষুদ্র বিজয়: #ইরাকের মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক এবং স্থানীয়  ও আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের প্রচারণা @সংসদের কার্যসূচী থেকে খসড়া সাইবার অপরাধ আইনটিকে সরিয়ে দিতে সফল হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ, খসড়া আইনটিকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে ফেলা!

সংসদে খসড়া আইনটিতে কোন পরিবর্তন আনা হবে কিনা বা এটি নিয়ে আবার কখন বিতর্ক হবে সেটা স্পষ্ট নয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .