ইরানে জাতিসংঘের মিশন এর এক ঘোষণায় জানা যাচ্ছে যে ইরান সরকার সেখানে নিবন্ধিত সকল শরণার্থীকে সালামাত বীমা নামক প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত করবে। ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইরানের স্বাস্থ্য বিষয়ক বীমা সংগঠন এবং জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর)-যৌথ ভাবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইরানে অবস্থিত সকল নিবন্ধিত আফগান এবং ইরাকি শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ইরানের ইসলামপন্থী মতাদর্শের সংগঠন ও মেহের সংবাদ প্রকাশনার এক অংশ ইংরেজি দৈনিক তেহরান টাইমস এই কর্মসূচির বিষয়ে ইউএনএইচসিআরএর প্রতিনিধি সিভাঙ্কা ধানাপালার ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতাকে বর্ণনা করেছে এভাবে:
ইরানের এই অবদানকে স্বীকার করে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক বিশেষ দূত ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের সরকারের সকল সেবার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যা ইরান তার গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এক শরণার্থী জনগোষ্ঠীকে প্রদান করে আসছে। দীর্ঘ তিন দশক ধরে এই সমস্ত শরণার্থীরা এখানে বসবাস করছে। তাদের যে ধরণের সুবিধা প্রদান করা হয়ে এবং শরণার্থীদের সার্বজনীন এক বীমায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি কেবল আঞ্চলিক পর্যায়ে নয়, বিশ্বের মাঝে এক উদাহরণ। শরণার্থীদের ইরান এমন এক সেবা প্রদান করছে যা এর আগে কেউ প্রদান করেনি এবং আমি আন্তরিক ভাবে আশা করি যে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো ইরানের এই উদাহরণ গ্রহণ করবে।
এই প্রকল্পের অর্ধেক অর্থ জোগান দেবে ইরান সরকার, পাশাপাশি ইউএনএইচসিআর ৮.৩ মিলিয়ন ডলার এই প্রকল্পে প্রদান করবে। নিবন্ধিত সকল শরণার্থী এই বীমার সুযোগ নিতে পারবে, তারা এই স্বাস্থ্য বীমা করতে পারবে, যে বীমার অধীনে থাকবে “হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা সেবা এবং সাময়িক ভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ, যা কেবল ইরানের নাগরিকদের জন্য সহজলভ্য।
ইউএনএইচসিআর-এর ওয়েবসাইট অনুসার ইরান হচ্ছে “বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এবং দীর্ঘ সময় ধরে বাস করা শরণার্থীদের এক বাসস্থান ”। ইরানে প্রায় ১০ লক্ষ আফগান শরণার্থীর বাস। পাশাপাশি দেশটিতে অনিবন্ধিত ১৪ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ শরণার্থী বাস ও কাজ করে।
অতীতে আফগান শরণার্থীদের প্রতি ইরানের আচরণ সমালোচিত হয়েছিল। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হিউম্যান রাইট ওয়াচের তথ্য যা মূলধারায় বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করা হয় এবং কখনো আফগানদের উপর অত্যাচার এর হয় একই সাথে ইরানী সমাজ এবং সরকার দ্বারা। .
২০১৫ সালের ঘটনাবলিকে মাথায় রেখে ইউএনএইচসিআর বিস্তারিত রূপে আশা প্রকাশ করছে যে ইরানে নীচের চিত্র অনুসারে মূলত আফগান, ইরাকি এবং পাকিস্তানী শরণার্থী গ্রহণ করবে।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের শুরু থেকে এই গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দেশটির শরণার্থীদের গ্রহণ না করায় ইরানের সমালোচনা করা হয়েছে। এই বিষয়টি এসেছে এই বাস্তবতা থেকে যে ইরান এই গৃহযুদ্ধ প্রবল ভাবে জড়িয়ে পড়েছে, যে দেশটি সিরীয় সরকারের এক সহযোগী এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি বাশার-আল-আসাদের সমর্থক।
ঘটনা হচ্ছে, শরণার্থীদের জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা চালু করা একই সাথে ইরান এবং এই অঞ্চলের জন্য এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তবে এখনো ইরান প্রতিবেশী সিরিয়ার শরণার্থী সঙ্কটের সমাধানে এগিয়ে এসে নিজের ভাবমূর্তি উন্নত করতে পারে।