ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে সৈন্য পাঠাতে অস্বীকার করায় পাকিস্তান সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।
দরকারের সময়ে পাশে না থাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আনোয়ার গারগাশ টুইটারে পাকিস্তানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটা এমন এক সময় যখন উপমহাসাগরীয় অঞ্চলের বিনিয়োগকে পাকিস্তানের স্বাগত জানানো উচিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা ইয়েমেনের যুদ্ধে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোকে সমর্থন দেয় নি।
১২০,০০০ অনুসরণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি টুইট করেন:
قرار البرلمان الباكستاني و الذي ينص علي (الحياد في الصراع اليمني) و يعرب (عن دعمه الصريح للسعودية) متناقض و خطير و غير متوقع من اسلام أباد.
— د. أنور قرقاش (@AnwarGargash) April 10, 2015
পাকিস্তানের সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ইয়েমেনের যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকবে। অন্যদিকে সৌদি আরবের প্রতি তাদের সমর্থনের বিষয়টি পরস্পরবিরোধী এবং বিপজ্জনক। ইসলামাবাদের কাছ থেকে এটা আশা করিনি।
গত শুক্রবার পাকিস্তানের সংসদে ইয়েমেনের যুদ্ধে যোগদানের বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, পাকিস্তান ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপে অংশ নিবে না। উল্লেখ্য, সৌদি নেতৃত্বাধীন ইয়েমেন যুদ্ধের তিন সপ্তাহ চলছে।
গত ২৬ মার্চ থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বিমান আক্রমণে ইয়েমেনে ইতোমধ্যে শ’খানেক মানুষ নিহত হয়েছেন। গালফ আরব জোটে মিশর, জর্ডান, মরক্কো, তুর্কি, সুদান এবং সৌদি আরব রয়েছে। এই জোট হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিমান আক্রমণ পরিচালনা করছে। হুতি’রা গত জানুয়ারি থেকে ইয়েমেনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
অন্য একটি টুইটে গারগাশ বলেন:
الخليج العربي في مواجهة خطيرة و مصيرية و أمنه الإستراتيجي علي المحك، ولحظة الحقيقة هذه تميز الحليف الحقيقي من حليف الاعلام والتصريحات.
— د. أنور قرقاش (@AnwarGargash) April 10, 2015
উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলো বিপজ্জনক ও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছে। দেশগুলোর কৌশলগত নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে। এই কঠিন সময়েই বের হয়ে আসছে কে প্রকৃত বন্ধু আর কাদের বন্ধুত্ব শুধুমাত্র গণমাধ্যমের বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
গারগাশ হুঁশিয়ারি দিয়েও টুইট করেছেন:
باكستان مطالبة بموقف واضح لصالح علاقاتها الاستراتيجية مع دول الخليج العربي، المواقف المتناقضة و الملتبسة في هذا الامر المصيري تكلفتها عالية.
— د. أنور قرقاش (@AnwarGargash) April 10, 2015
উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলোর সাথে কৌশলগত সম্পর্কের সুবিধা নিতে পাকিস্তানকে পরিষ্কার অবস্থান নিতে হবে। এ ধরনের পরস্পরবিরোধী এবং অস্পষ্ট অবস্থান নেয়ায় পাকিস্তানকে চরম মূল্য দিতে হবে।
অন্য একটি টুইটে পাকিস্তান ইরানের পক্ষ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন:
يبدو ان أهمية طهران لاسلام أباد و انقرة يفوق أهمية دول الخليج، بعدنا الاقتصادي و الاستثماري مطلوب، و يغيب الدعم السياسي في اللحظة الحرجة.
— د. أنور قرقاش (@AnwarGargash) April 10, 2015
ইসলামাবাদ ও আঙ্কারার কাছে উপসাগরীয় দেশগুলোর চেয়ে ইরানই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ও বিনিয়োগ তাদের জন্য অপরিহার্য হলেও সংকটের সময়ে আমরা তাদের রাজনৈতিক সমর্থন পাচ্ছি না।
ইয়েমেনের যুদ্ধে সমর্থন দিলেও তুর্কি যুদ্ধে সরাসরি জড়াবে বলে জানিয়েছে। তবে তারা সৈন্য পাঠানোর পরিবর্তে লজিস্টিক এবং গোয়েন্দা সহযোগিতা দিবে।
এদিকে পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের প্রতি অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন। এদের একজন মিশরের নাগরিক আহমেদ খলিল। তিনি তার ৭৭,০০০ অনুসরণকারীর উদ্দেশ্যে টুইট করেছেন:
باكستان رفضت الاشتراك في العدوان على اليمن ، نامل ان يرفض الجيش المصرى الاشتراك فى العدوان ، جيشنا للدفاع عن حدودنا فقط
— Ahmad (@ahmad_khalil) April 10, 2015
ইয়েমেনের যুদ্ধে অংশ নিতে পাকিস্তান অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা আশা করবো, আমাদের মিশরীয় সেনাবাহিনীও যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানাবে। আমাদের সেনারা শুধু আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
বাহরাইনি কলামিস্ট কাসিম হোসাইন পরিস্থিতি “জটিল” হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেছেন:
#bahrain: من اخبارالجمعة:برلمان باكستان يمتنع عن تأييد الحرب باليمن ويدعو للحياد والسعودية تمنع طائرة باكستانية من دخول اراضيها.الامورتتعقد
— قاسم حسين (@kassimhussain1) April 10, 2015
পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ ইয়েমেনের যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এবং এ ব্যাপারে তারা নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। অন্য দিকে সৌদি আরব পাকিস্তানের বিমানকে তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে।
ফুয়াদ ইব্রাহিম বিস্মিত হয়ে তার ২০,৮০০ অনুসরণকারীদের উদ্দেশ্যে টুইট করেছেন:
هل بدأ ال سعود يفقدون صوابهم..اليوم منعوا طائرة باكستانية تقل معتمرين بحجة "الحفاظ على سلامة الأجواء".. تعاقب باكستان لرفض الانخراط في الحرب
— fouad Ibrahim (@fuadibrahim2011) April 10, 2015
সৌদি আরব কি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে? আজকে “আকাশসীমার নিরাপত্তার” অজুহাতে হজ্জ্ব যাত্রীদের নিয়ে আসা পাকিস্তানের বিমানকে বাধা দিয়েছে। পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করার শাস্তি পাচ্ছে।
পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা ডন-এর ভাষ্যমতে, গত শুক্রবার সৌদি আরব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় পাকিস্তানের একটি যাত্রীবাহী বিমানকে সৌদি আকাশে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে।