ইয়েমেনের প্রসিদ্ধ রাজনৈতিক কর্মী হানি আল-জুনিদ তাঁর ফেসবুক মেসেজ ইনবক্সে মৃত্যু হুমকি দেয়া একটি বার্তা পেয়েছেন। তিনি আল-শারায়ে নামক স্বাধীন স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক। আল-জুনিদ বলেছেন, এই হুমকিকে তিনি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। একজন বেনামী ব্যক্তি তাকে এই হুমকি দিয়েছে।
২১ ডিসেম্বরে দেয়া এই হুমকিতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে, “আল-জুনিদের মৃত্যু দ্রুত ঘনিয়ে আসছে।” জেনারেল আলি মহসিন আল-আহমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য আল জুনিদ বেশ সুপরিচিত। তিনি সানা’আ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আল-আরাতিত র্যালিতে হামলাকারী সামরিক বাহিনীর প্রথম রণতরী ডিভিশনের সেনাপতি ছিলেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তিনি শ্লেষাত্মক, পার্থিব এবং সমাজতান্ত্রিক বিষয়ক লেখালেখির [আরবি] জন্য পরিচিত।
সেই হুমকি দেয়া বার্তায় লেখা [আরবি] হয়েছেঃ
“نهايتك قريبة. وحياة امك ماتفلت. والله مانخليك الا تجس مشلول في البيت. ماتقدر ترفع ايد ولاتحرك رجل. كلام انتهى. رصاصة في العمود الفقري وانتهى امرك”
“শীঘ্রই আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আপনি এ থেকে পালাতে পারবেন না। সৃষ্টিকর্তার দোহাই যে আমরা আপনাকে সম্পূর্ণ অক্ষম করে ঘরে বসিয়ে রাখবো। আপনি আর এক হাত বা এক পাও নড়াচড়া করতে পারবেন না। আপনার জীবনের সময় নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। আপনার মেরুদণ্ডে একটি গুলি করা হবে আর আপনি শেষ হয়ে যাবেন।”
আল-জুনিদ হুমকি পাওয়ার সাথে সাথে সেই বার্তাটির একটি ছবি তুলে তাঁর ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেনঃ
“هذا الشخص ليس صديقي في الفيس بوك ولا اعرفه، ودخل فجئة يكلمني أنه بردان ويشتي خمر. أنا قلت له أن عليه التواصل مع علي محسن الأحمر، أو عبدالوهاب طواف كونهم المهربين الوحيدين لهذا الأمر، تحدثنا قليلا وعندما توقفت عن الحديث معه افصح عن الرسالة التي كلف بها وهي تهديدي أن نهايتي باتت قريبه.”
“এই ব্যক্তি আমার কোন বন্ধু নয়। আমি তাকে একেবারেই চিনি না। সে আমাকে এমন ভাবে বার্তা পাঠানো শুরু করেছে যেন, সে খুব শীতার্ত এবং একটুখানি ওয়াইন চায়। আমি তাকে বলেছি, যেহেতু আলি মহসিন এবং আব্দেলওয়াহাব তাওয়াফ ওয়াইনের একমাত্র চোরাকারবারি, তাই আপনার উচিৎ হবে তাদের সাথে যোগাযোগ করা। তাঁর কিছুক্ষণ পরেই সে বললো যে, আমি শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবো।”
তবে সবসময়ই আল-জুনিদ বলে আসছেন, তাকে নিশ্চুপ রাখার এ ধরনের চাতুরীতে তিনি কখনই ভয় পান না। তিনি ব্যাখ্যা করেছেনঃ
“بصراحة تصلني تهديدات بين وقت وآخر لكني لا اعيرها أي اهتمام، بس هذه المرة شعرت أن الأمر جدي، وأحب أن اقول لهذا المسخ أن تهديده لم يخيفني وانا مستعد للتضحية”
“সত্যি করে বলছি, প্রতি বারেই আমি এমন হুমকি পেয়ে থাকি। তবে আমি কখনো এগুলো গ্রাহ্য করিনি। যেভাবেই হোক, এইবার আমার মনে হচ্ছে ব্যাপারটি বেশ গুরুগম্ভীর। আমি এই জঘন্য ব্যক্তিকে বলব, তাঁর এই হুমকিতে আমি ভয় পাই না। আমি নিজেকে উৎসর্গ করতে তৈরি।”
২০১১ সালের অভ্যুত্থানের পর ইয়েমেন যখন পূর্ণ বাকস্বাধীনতা উপভোগ করছিল, ঠিক তখন প্রচার মাধ্যমের বিরুদ্ধে এ ধরনের হুমকি এবং সহিংসতার ঘটনাগুলো নুতন পাওয়া এই স্বাধীনতাকে নির্জীব করে তুলছে। আল-জুনিদের প্রতি হুমকির ঘটনাটি এই হামলার ঘটনা প্রবাহেরই একটি অংশ। অন্যান্য হুমকিগুলো বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমকে দেয়া হয়েছে। সানা’আ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভ থেকে ফেরার পথে একদল অপরিচিত লোক আল-জুনিদের উপর শারীরিক হামলা চালায়। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে আয়োজিত এই বিক্ষোভে সামরিক শাসনের অবসানের দাবি জানানো হয়।