আজ (২২শে ফেব্রুয়ারী) কায়রোর জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা খান আল খলিলির নিকট অবস্থিত আল হুসেইন মসজিদের বাইরে এক বোমা বিস্ফোরণে একজন ফরাসি পর্যটক মারা গেছে এবং আহত হয়েছে প্রায় ২০ জন লোক।
প্রকৃতপক্ষে ঘটনাস্থলে কি ঘটেছে জানার জন্য বিশ্ববাসী উন্মুখ হয়ে ছিল এবং মিশরের ব্লগাররা তাই ছিল বেশ কর্মঠ। তারা ঘটনার নতুন মোড়, তথ্য, বিশ্লেষণ এবং উদ্বিগ্নতা সম্পর্কিত খবর আদান প্রদান করছিল।
জেইনোবিয়া টুইটার এ একটা মেসেজ পোষ্ট করে যখন এসব শুরু হয়েছিল, যে প্রতিবেদনে আছে, “আল আজহারের ক্যাফেতে বিস্ফোরণ জাতীয় কিছু একটা ঘটেছে।” মিনিটখানেক পরে আরাবায়ী অন্য একটি নিশ্চিতকরন মেসেজে ঐটির অনুকরণ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, “কায়রোর আল মাশাদ আল হুসেইনী রোডে ঘটেছে বিস্ফোরণ”।
মোফটাসাই প্রথম ধারনা করে যে এই বিস্ফোরণ এবং নতুন বিতর্কিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন এর মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে, যা কয়েকদিনের মধ্যেই মিশরীয় সংসদে আলোচিত হবে। বিপুল আপত্তির মুখেও খসড়া আইনটি তৈরী হয়।
কোনকিছুই তখনও সুনিশ্চিত নয়, এবং গুজব ছড়াচ্ছিল; যাইহোক, জেনোবিয়া চেষ্টা করছিল বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর নতুন তথ্যগুলোর দ্রুত অথচ বিস্তারিত বিবৃতি হিসেবে একত্রে সংকলন করতে।
অ্যারাবিষ্ট, যে কিনা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিল এবং দুটো বিস্ফোরণই নিজ কানে শুনেছিল, সে লেখে:
আমি কায়রোর মধ্যাংশে একটি প্রধান পর্যটক গন্তব্যস্থল-খান আল খালিলির নিকট বোমা বিস্ফোরণের খবর শুনেছি। এ সম্পর্কে যত বেশী খবর পাব তা সন্নিবেশিত করা হবে।
আপডেট ১: আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলেছে যে
১১ জন মারা গেছে, তিনজন মিশরীয়, একজন ফরাসী,১৮ জন আহত, একজন ফরাসী মারা গেছে এবং অন্যদের খবর জানা যায়নি।আপডেট ২: ইতিমধ্যেই মৌলবাদীরা বলছে যে জরুরী আইন সংসদে আলোচিত হবার দিন সুবিধাজনকভাবে এক মাসের কাছাকাছি হয়ে উঠেছে।
আপডেট ৩: চারজন মারা গেছে (জার্মান এবং ফরাসী), ১২ জন আহত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয়তার।
মোফতাসা এরপর টুইটারে বিস্ফোরক এলাকার একটি আলোকচিত্রের লিংক পোষ্ট করে।
এবং যখন কায়রোতে বসবাসরত একজন আমেরিকান বিশেষজ্ঞ মোসফর সবার আগে টুইটারের ব্লগারদের বলেছিল #কায়রোবম্ব নামক ট্যাগ ব্যবহার করতে তখন আরাবাউই বলেছে ব্লগারদের একটি ডিলিসিয়াস ট্যাগ ‘এল হুসেইন এক্সপ্লোশন’ ব্যবহার করতে একই ইউ আর এল এর অধীনে একত্রিত করার জন্য।
ইয়াসারি মাশরি, কার্ল, মশফর, মারী, রোব, স্যান্ড মঙ্কি এবং গ্রে উল নিকারস হলেন ঘটনাটি নিয়ে ব্লগ লেখার মধ্যে প্রথম, তাই সেটা হোক তাদের বন্ধু এবং পরিবারের শান্তি জাগানোর উদ্দেশ্যে অথবা আলোচনা করতে যে তারা যদি ভাবে বিস্ফোরণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কিনা। গ্রে উল নিকারস মিশরের সর্বশেষ ঘটনাগুলোকে সংযুক্ত করে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লিখেছে, চেষ্টা করেছেন সেগুলোকে সাম্প্রতিক বোমা বিস্ফোরণের সাথে সম্পর্কযুক্ত করতে।
যেহেতু অনেকেই ধারণা করেছেন যে এটা ঘটেছে একটা সন্দেহমূলক সময়ে বিশেষ করে যখন রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থার (যা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইলী যুদ্ধের সময়, সাথে সাদাতের যুগে সংপ্তি বিরতি ছিল) বৃদ্ধি আবার পুনরায় বিবেচিত হতে যাচ্ছিল। মুবারকের সরকার অনেক বছর ধরে আশ্বাস দিয়ে আসছে মার্শাল ল কে পাল্টিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সামনে আনতে, যা ন্যুনপক্ষে মিশরীয় সংবিধানের এর অধীনে জনগণের কিছুটা রক্ষা কবচ হতে পারবে। সরকার এখন বর্তমানে যা ইচ্ছে করার জন্যে জরুরী অবস্থা ডাকতে পারে, যেটাকে পাঠক বুঝতে পারবে অনেকের মধ্যে দ্যা ফিলিপ রিজক এবং দিয়া গাড এর অপহরণের ঘটনায়। আমেরিকা এবং ইসরায়েলী প্রশাসকদের আনীত পরিবর্তনের সাথে এবং সাথে উচ্চকণ্ঠ, ক্ষমতাধর এবং আন্ত:বাধা প্রদানকারী, ঘরোয়াভাবে এবং গাজার সীমান্ত বরাবর – মনে হয় প্রবীণ মুবারকের শাসন হতাশ হচ্ছে এবং কোন শন্কার রাজনীতির ব্যবস্থা না করে ক্ষমতা ধরে রাখার খুব সামান্য উপায় খুঁজে পাচ্ছে। আমি মনে করি সাম্প্রতিক প্রকাশিত তারকা রাজনৈতিক বন্দী আয়মান নূর কে বিবেচনা করা উচিৎ স্বৈরতন্ত্রের উচ্চ পর্যায়ের ভীতির প্রমাণ হিসেবে।
এই ঘটনার আরও খবর খুঁজে দেখুন এর ডেলিসিয়াস ফিডএর মাধ্যমে।
এই পোষ্টটি লেখার পূর্বেই ২১ বছর বয়সের একজন ফরাসী বালিকার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এবং প্রায় ২০ জন বিভিন্ন জাতীয়তার ব্যক্তি আহত হয়েছে। যাই হোক, বিস্ফোরণের জন্য কারা দায়ী তার উপসংহার নির্ণয়ে দ্রুত অগ্রসারমান হলে এখনও খুব প্রীতিময় হবে।
ছবি পাওয়া যাবে আহমেদ আবদেল ফাতার ব্লগে এবং পাঠকরা টুইটারে মিশরীয় ব্লগারদের খুঁজে পাবেন এখানে।