ইরান: ধর্মীয় নেতার প্রতিবাদমূলক হাঁটা কর্মসূচী জেলে শেষ হয়েছে

আলি রেজা জাহানশাহী নাম্নী একজন ইরানী ধর্মীয় নেতাকে দুই সপ্তাহ আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ইরানের দক্ষিণের শহর শিরজান থেকে তেহরানের উদ্দেশ্যে ৯৬০ কিমি (৫৯০ মাইল) লম্বা প্রতিবাদ হাঁটা শুরুর কিছু পর। তিনি শিরজানে বেআইনি ভুমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন, আর অভিযোগ করেছিলেন যে সরকার এটা থামাতে যথেষ্ট কিছু করেনি। ৩০ কিমির মতো হাঁটার পর আবাদেহ শহরের কাছে জাহানশাহীকে গ্রেপ্তার করা হয়।


উপরে জাহানশাহীর ছবি এবং একটি হাদিসের উদ্ধৃতি যাতে লেখা যে অন্যায় জুলুমের কবলে পরা মানুষকে রক্ষা করা একজন ধর্মীয় নেতার দায়িত্ব

বেশ কিছু রক্ষণশীল আর ইসলামপন্থী ব্লগাররা তার প্রতিবাদের পক্ষে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন, আর কর্তৃপক্ষকে তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। অন্য ইসলামী ছাত্র আর ধর্মীয় নেতারা তার মুক্তির জন্য বিক্ষোভ করছেন। ব্লগার আর ছাত্রদের মধ্যে অনেকে এসোসিয়েশন অফ জাস্টিস সিকার্স স্টুডেন্টস নামে একটা রক্ষনশীল আর ইসলামী দলের সদস্য যারা ইরানী কর্তৃপক্ষকে দূনীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার সমালোচনা করেছেন।

অন্যদিকে তার গ্রেপ্তারের ব্যাপারটা নিরপেক্ষ বা পরিবর্তনশীল ব্লগাররা ধরতে গেলে একেবারেই উল্লেখ করেন নি। এর ফলে বোঝা যায় যে ইরানী ব্লগোস্ফীয়ার কিভাবে মেরুকৃত।

ব্লগার মোস্তাজাফিন (ফার্সী ভাষায় যার মানে অত্যাচারিত) যিনি জাহানশাহীর প্রতিবাদের খবরটা অনুসরণ করছিলেন, তার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছেন আর বলেছেন যে ১৮টা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ম্যাগাজিন একটা ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে যেখানে তারা তার বিপ্লবী প্রতিবাদ হাঁটাকে সমর্থন করেছেন।

তিনি ঘোষণাপত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন:

“শিরজানে আমরা দেখেছি যে কিভাবে ক্ষমতার চক্র আর পুঁজিবাদিরা বেআইনিভাবে জমি দখল করেছে যা ইরানি লোকের সম্পত্তি… এরা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের আইন আর ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।”

মোস্তাজাফিন জাহানশাহীর প্রতিবাদ কর্মসূচীর ব্যাপারে বলেছেন:

“দুই বছর ধরে তিনি ইরানী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন বিশাল অর্থনৈতিক দুর্নীতির প্রতি, কিন্তু কেউ কিছু শোনেনি… শিরজানে যা হয়েছে তা সমগ্র ইরানে কি ঘটছে তার একটি উদাহরণ।”

মারকাজিনিউজ লিখেছে যে ছ'জন নিরাপত্তা সংস্থার এজেন্ট জাহানশাহীকে গ্রেপ্তার করেছে যখন সে মসজিদে ছিল আর তাকে জোর করে গাড়িতে তুলেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কারন তার কাজ নাকি ধর্মীয় নেতার কাজের পরিপন্থী।

জাস্টিস সিকার্স স্টুডেন্টস এর একটি বিবৃতি থেকে মারকাজিনিউজ উদ্ধৃতি দিয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রাক্তন নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি বলেছিলেন যে ধর্মীয় নেতাদের গরীব আর খালি পায়ে চলা মানুষদের ভুলে যাওয়া উচিত না। ঘোষণায় বলা হয়েছে যে তারা কর্তৃপক্ষের অজুহাত আর সহ্য করবে না, আর তাদের বৈপ্লবিক দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবে।

ব্লিগ্নেহস্টিজ একটা ব্যাজ বানিয়েছেন ধর্মীয় নেতার সমর্থনে যাতে লেখা আছে, ”শিরজানের দূর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইএ আমরা জাহানশাহীর সাথে আছি।” এই ব্লগার আরো বলেছেন যে কিছু ছাত্র আর ধর্মীয় নেতা তার কাজকে সমর্থন করেছে আর তার সাথে কিছু দূর হেঁটেছে দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে।

কাশ্মার বিশেষ ধর্মীয় আদালতের সমালোচনা করেছেন যারা জাহানশাহির গ্রেপ্তার আর আটকাদেশ জারি করেছে আর প্রশ্ন করেছে যে তারা দূর্নীতিগ্রস্ত ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।

মুসলিম ব্লগার্স অ্যাসোসিয়েশনএকটি ব্যাজ প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে যে শিরজানে বিক্ষোভরত ধর্মীয় নেতার পরিবর্তে দূর্নীতিগ্রস্ত ধর্মীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা উচিত ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .