মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার শিকারদের স্মরণ

Bikini Atoll

বিকিনি অ্যাটল পারমাণবিক পরীক্ষার অকুস্থল, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। ছবি: রন ভ্যান ওরস/ ইউনেস্কো। সৃজনী সাধারণ একইরকম ভাগাভাগির অনুমতি ৩.০ আন্তসরকারি সংস্থা

প্রশান্ত মহাসাগরীয় সম্প্রদায়গুলি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের বিকিনি অ্যাটলে পারমাণবিক পরীক্ষার ৭০তম বছর চিহ্নিত করে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার দাবি তুলে ধরেছে৷

পারমাণবিক মুক্ত ও স্বাধীন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দিবস ১ মার্চ হলেও, দিনটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে মার্কিন সামরিক বাহিনীর তৈরি তাপ-পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার সাংকেতিক নাম ক্যাসেল ব্রাভোর শিকারদের সম্মানে পারমাণবিক শিকার স্মরণ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বিকিনি অ্যাটলে ফেলা ১৫-মেগাটন বোমাটি ছিল হাজার হাজার হিরোশিমা বোমার সমতুল্য। এটি একটি মাশরুম ক্লাউড তৈরি করে বায়ুমণ্ডলে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছে এবং এর তেজস্ক্রিয় বিস্তৃতি নিকটস্থ জনবসতিপূর্ণ অ্যাটলকে প্রভাবিত করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে ৬৭টি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করে।

পরীক্ষাগুলি কমপক্ষে দুটি দ্বীপকে বাষ্পীভূত করে এবং তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত সম্প্রদায়গুলিকে স্থায়ীভাবে স্থানচ্যুত হতে বাধ্য করে। পরমাণু পরীক্ষা কারণে পরবর্তী কয়েক দশক ধরে ক্যান্সার ও অন্যান্য গুরুতর রোগ বেড়ে যায়।

ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও পরীক্ষার বিষাক্ত পরিণতিগুলি আজ পর্যন্ত ক্ষতি করে যাচ্ছে। সুশীল সমাজ গোষ্ঠী আইসিএএন জোর দিয়ে বলেছে ক্যাসেল ব্রাভো পরীক্ষা “মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে জীবনকে উপড়ে ফেলা, মাটি  দূষণ ও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এর পরিণতির সাথে জনগণের লড়াইয়ের একটি গল্প।”

ফিজি ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের জনসমাবেশগুলি ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়ে ক্যাসেল ব্রাভো পরীক্ষার ৭০তম বার্ষিকী পালন করেছে৷

এফডব্লিউআরএম আজ সুভার ইউএসপি লাউকালা ক্যাম্পাসে নিউক্লীয় শিকারদের সাথে সংহতি মিছিলে স্লোগানের নেতৃত্ব দিয়েছে।

১৯৫৪ সালের ১ মার্চ ক্যাসেল ব্রাভো বিস্ফোরণের ৭০ বছর হয়ে গেছে। #পরমাণুমুক্তপ্রশান্তমহাসাগর #জনগণেরক্ষমতা

বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া কিছু প্রবীণ ও তাদের বংশধররাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল।

আমরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় পারমাণবিক পরীক্ষার শিকার প্রবীণ ও তাদের বংশধরদের আজকের @ইউনিদক্ষিণপ্রশান্তমহাসাগরে নিউক্লীয় শিকারদের স্মরণ দিবসে সংহতি মিছিলে যোগদান স্বীকার করি।

আমরা যেনো ভুলে না যাই। #নিউক্লীয়ন্যায়বিচার #নতুনপরিচ্ছন্নপথ #নিউকমুক্তশুক্রবার #নিউকমুক্তপ্রশান্তমহাসাগর

ক্যাথি জোয়েলের পরিবারকে ১৯৫৪ সালে তাদের সম্প্রদায় থেকে উৎখাত করার সময় তার বয়স ছিল ছয় বছর।

আমার মনে আছে আমার দ্বীপের উপর দিয়ে প্লেন উড়তে দেখে আমি সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উচ্ছেদ করে। এখন পর্যন্ত জন্মভূমি আমাকে টানে। আমি সবসময় আমার জন্মভূমির কথা ভাবি, আর আমাদের রাষ্ট্রপতির সহায়তায় আমি একদিন আমার জন্মভূমিতে আবার পা রাখতে চাই।

ব্রাভো পারমাণবিক পরীক্ষা রঞ্জেলাপ ও আইলিংনাইসহ #মার্শালদ্বীপপুঞ্জের উত্তর প্রবালপ্রাচীরে তেজস্ক্রিয় পতন ছড়ানোর সময় ক্যাথি জোয়েলের বয়স ছিল ছয় বছর।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ফোরামের মহাসচিব হেনরি পুনা উল্লেখ করেছেন পারমাণবিক পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি পর্যাপ্তভাবে সমাধান করা হয়নি।

প্রশান্ত মহাসাগরের প্রতি বিদেশীদের ব্যাপক অসম্মান আমাদের ইতিহাসকে নোংরা করেছে। স্পষ্টভাবেই আমাদের গবেষণাগারের মতোএকটি পরীক্ষার স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন আমাদের অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে, আমাদের অবহিত সম্মতি ছাড়াই কেন এই ভয়ঙ্কর কাজের জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর কোণের সবচেয়ে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ মানুষদের বেছে নেওয়া হয়েছিল?

অতীতের অভিযোগগুলি মেটাতে আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও দুঃখজনকভাবে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে পারমাণবিক উত্তরাধিকার সমস্যাগুলি সমাধানের শর্তগুলি অপর্যাপ্ত থাকায় তা অসমাপ্ত রয়ে গেছে।

শান্তি আন্দোলন আওতারোয়া পারমাণবিক মুক্ত ও স্বাধীন প্রশান্ত মহাসাগর দিবসের রাজনৈতিক তাৎপর্য তুলে ধরেছে।

পারমাণবিক মুক্ত ও স্বাধীন প্রশান্ত মহাসাগর দিবসটি স্মরণ করিয়ে দেয় দাম্ভিক ঔপনিবেশিক মানসিকতা এখনো পারমাণবিক মুক্ত বা স্বাধীন না হওয়া প্রশান্ত মহাসাগরে আজও অব্যাহত এই ভয়াবহতা শুধু সংঘটিত নয়, প্রকৃতপক্ষে উৎসাহিত পর্যন্ত করেছে।

এটি পূর্বপুরুষদের থেকে পাওয়া জীবনযাত্রা ও অস্তিত্বের উপায়গুলি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর নিশ্চিত করার জন্যে অক্লান্ত প্রচেষ্টা করে তাদের জীবন, ভাষা ও জমির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা আদিবাসী প্রশান্ত মহাসাগরীয় জনগণের সাহস, শক্তি এবং সহনশীলতা উদযাপন করার একটি দিন।

গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক জলবায়ু ও পারমাণবিক প্রচারক শন বার্নিও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের মানুষের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন

মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের গর্বিত লোকেরা তাদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাড়ির সাথে তাদের গভীর এবং গভীর সংযোগ ধরে রেখেছে, স্থানচ্যুতি এবং দূষণের মাধ্যমে সেই সংযোগটি ধ্বংস করার সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও। সেই একই সংকল্প এখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাবের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .