
গত সপ্তাহে পাপুয়া নিউ গিনিতে উপজাতীয় সহিংসতা বেড়েছে। এবিসি সংবাদের অনুসন্ধানী ইউটিউব ভিডিও থেকে গৃহীত পর্দাছবি। ন্যায্য ব্যবহার।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ পাপুয়া নিউ গিনির বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন নিহত এবং বহু পাহাড়ি সম্প্রদায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সরকার বলেছে ১৮ ফেব্রুয়ারির গণহত্যা ছিল দেশের সবচেয়ে খারাপ উপজাতীয় সহিংসতার রেকর্ড।
পুলিশ ১৯ ফেব্রুয়ারি এনগা প্রদেশে ৫০ টি মৃতদেহ উদ্ধারের কথা বললেও স্থানীয় নেতাদের প্রতিবেদন ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত ভূমি বিরোধ সিকিন ও কাইকিন উপজাতি এবং অ্যাম্বুলিন উপজাতির মধ্যে সহিংসতার সূত্রপাত করে। পুলিশ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলি থেকে যুদ্ধরত গোষ্ঠীগুলির ভাড়াটেদের ভাড়া করার কথা জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ যোদ্ধাদের সামরিক মানের অস্ত্রের ব্যবহার উল্লেখ করেছে, যা অস্ত্র সরবরাহকারীদের অপরাধ এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের কালো বাজারের অস্তিত্ব নির্দেশ করে।
পুলিশ কমিশনার ডেভিড ম্যানিং সম্প্রদায়েগুলির নেতাদের কাছে সহযোগিতার অনুরোধ করেছেন:
দুষ্ট লোকদের থেকে উদ্ভূত এই জাতিগত লড়াইগুলি শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের জন্যে উত্তেজিত লোকদের নিজেদের লোকদের মৃত্যুর কারণ হয়।
হুমকি ও ভয়-ভীতি থাকার কারণে আমি জানি এটা কঠিন, তবুও সম্প্রদায়ের নেতাদেরকেই হোতাদের সনাক্ত করতে এগিয়ে এসে পুলিশের সাথে কাজ করতে হবে।
তবে প্রাক্তন বিরোধীদলীয় নেতা বেলডেন নামা নাগরিকদের সুরক্ষায় সিদ্ধান্তহীনতার জন্যে নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন:
আমরা একই পুরানো লোক, সৈন্য ও পুলিশ পাঠালেও তারা অকুস্থলে উপজাতীয় যোদ্ধা ও অনেক লোকের সাথে মিলে যাচ্ছে এবং কোন গ্রেপ্তার করছে না।
সৈন্য ও পুলিশ তাদের বন্দুক নিয়ে বন্দুকসহ যোদ্ধাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, আসলে আমরা যাচ্ছিটা কোথায়?
একটি সম্পাদকীয়তে পোস্ট-কুরিয়ার উপজাতীয় নেতাদের দেওয়া ঐতিহ্যগত নেতৃত্বের পতন সম্পর্কে লিখেছে:
দুঃখজনকভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কর্তৃত্বের উপর ঐতিহ্যগত বা সম্প্রদায়ের নেতৃত্বের প্রভাব ভেঙে পড়েছে, কারণ অতীত ও বর্তমান সরকারগুলি এই ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিদের কার্যকরভাবে আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে পাপুয়ার যোগ্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অংশীদারিত্বে কাজ করার জন্যে সম্পদ, দক্ষতা, জ্ঞান ও আইন দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
নিঃস্ব, নিরক্ষর ও আনুষ্ঠানিক সমসাময়িক শাসন ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন, সম্প্রদায়ের নেতারা তাদের গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ন্যায়বিচার পরিচালনা ও অপরাধ মোকাবেলা করতে প্রতিদিন একটি প্রতিকূল যুদ্ধ করছে।
অন্য একটি সম্পাদকীয়তে পোস্ট-কুরিয়ার সরকারকে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার দিতে বলেছে:
আমাদের পরামর্শ, ওয়াপেনামান্দায় উপজাতীয় যোদ্ধাদের সংঘটিত সন্ত্রাসের মুখে এখনি পরিস্থিতির মোকাবিলা করাটাই সঠিক কাজ। আইনের পুরো পুলিশ, সেনা ও ওয়ার্ডার বাহিনী পাঠিয়ে এনগামে একটি পূর্ণ-জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেই বেআইনি উপজাতীয় যোদ্ধাদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন।
সোজা গিয়ে সমস্যা সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলা করুন। বন্দুকধারীদের জানিয়ে দিন এই দেশে আমাদের দেশের নাগরিকদের রক্ষা করার মতো আইন আছে।
#Wapenamanda #massacre: #PNG leaders #angry over #tribal #war ‘barbarity’ #AsiaPacificReport #pngpostcourier @kenneth_gorethy #tribalwarfare #highlands #Enga @newsroom_the @PACNEWS2 @PngPles @PNGReport https://t.co/E0pydydQSr pic.twitter.com/CM1j8OHPMC
— David Robie (@DavidRobie) February 20, 2024
#ওয়াপেনামান্দা #গণহত্যা: #পিএনজি নেতৃবৃন্দ #আদিবাসী #যুদ্ধের ‘বর্বরতা’ নিয়ে #ক্ষুব্ধ #এশিয়াপ্রশান্তমহাসাগরীয়প্রতিবেদন #পিএনজিপোস্টকুরিয়ার @কেনেথ_গোর্থি #উপজাতীয়যুদ্ধ #পাহাড়ি #এনগা @সংবাদকক্ষ_দ্যা @পিএসিসংবাদ২ @ পিএনজিপ্লেস @ পিএনজিপ্রতিবেদন
রাজনীতিতে পাপুয়া নিউ গিনির নারীর প্রতিষ্ঠাতা ডরোথি টেকভি পাহাড়ি পরিবারগুলিতে সংঘর্ষের প্রভাব সম্পর্কে গণমাধ্যমকে বলেছেন:
যেকোনো নারী আবেগপ্রবণ হয়ে যাবেন…এবং আমি পাপুয়া নিউ গিনি জুড়ে নারীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। সব ধরনের সহিংসতা যথেষ্ট হয়েছে।
আমরা আমাদের সংসদ সদস্যদের কাছে জবাবদিহি চাইছি। তারা সরকারে থাকুক বা বিরোধী দলে থাকুক তাতে কিছু যায় আসে না। এটি একটি জাতীয় সংকট।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ফোরামের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি পাপুয়া নিউ গিনির উপজাতি সহিংসতার সর্বশেষ ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটিতে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রিচার্ড হাওয়ার্ড উল্লেখ করেছেন, “আধুনিক অস্ত্রের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার উপজাতীয় লড়াই ও মানবজীবনে তাদের প্রভাব বাড়িয়ে তোলে।”
পাপুয়া নিউ গিনির জন্যে উত্তাল ছিল দুই মাস। জানুয়ারিতে রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে সংঘটিত দাঙ্গা ও লুটপাটে অন্তত ২০ জন নিহত হয়। বিমানের জ্বালানি সংকটে জর্জরিত পরিবহন খাত। সাম্প্রতিক উপজাতীয় সংঘর্ষ সরকারের স্থিতিশীলতা ও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।