পুলিশের অনুমতি ছাড়াই শহরে নাগরিকদের প্রতিবাদের একমাত্র জায়গা হং লিম পার্কে ২৩ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের জলবায়ু সমাবেশে ১,৪০০ জনেরও বেশি লোক যোগ দেয়। সিঙ্গাপুরে ২০১৯ সালের পরে এটাই প্রথম জলবায়ু সমাবেশ।
আয়োজকরা বলেছে সমাবেশটি “সবার জন্যে একটি সবুজ ও সুন্দর সিঙ্গাপুরের জন্যে দাঁড়াতে চাওয়া জলবায়ু-সচেতন সাধারণ সিঙ্গাপুরবাসীদের জন্যে।” তারা আরো বলেছে এই বছরের থিম অন্তর্ভুক্তি প্রচার করতে চায়:
আমরা আজ একত্রিত হয়েছি কারণ আমরা বিশ্বাস করি সিঙ্গাপুরকে অবশ্যই গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে আরো শক্তিশালী ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলিকে শক্তিশালী সহায়তা প্রদান করতে হবে।
অন্যতম সংগঠক ক্রিস্টিয়ান-মার্ক জেমস পল টেকসই গণমাধ্যম প্রকাশনা ইকো-বিজনেসকে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে স্বল্প-আয়ের পরিবার ও সম্প্রদায়ের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ কঠোর প্রভাব সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন:
জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়েও আমরা সমানভাবে চিন্তিত। এই কারণেই আমরা জলবায়ু ন্যায়বিচারের বার্তা প্রচার করার চেষ্টা করি, কারণ আমরা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের কথা ভাবলে তা আমাদের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উপায়েই করতে হবে।
সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে আরেকটি দাবি হলো এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশীদের প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় কীভাবে অবদান রাখে তা স্বীকার করা:
সিঙ্গাপুর কয়েক দশক ধরে সস্তা অভিবাসী শ্রম ব্যবহার করে বন উজাড় ও বালি খননের মাধ্যমে আমাদের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীদের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করে উপকৃত হয়েছে। এবং সবশেষে সিঙ্গাপুরের সম্পদ আংশিকভাবে পেট্রোকেমিক্যালের হাব এবং একটি সামুদ্রিক ও বিমান চলাচলের কেন্দ্র হয়ে ওঠার মাধ্যমে তৈরি – যার সবই জীবাশ্ম জ্বালানী-নিবিড় শিল্প।
Incredible turnout from yesterday’s Climate Rally at Hong Lim Park.
It’s great to see such passionate people coming together for Climate Action for a green, just, and more sustainable world.💚#SGClimateRally #ClimateJusticeNow pic.twitter.com/lyfZk7Xeyy— Greenpeace Southeast Asia (@GreenpeaceSEA) September 24, 2023
হং লিম পার্কে গতকালের জলবায়ু সমাবেশে অবিশ্বাস্য উপস্থিতি।
একটি সবুজ, ন্যায্য ও আরো টেকসই বিশ্বের জন্যে জলবায়ু অভিযানের জন্যে এই ধরনের উৎসাহী লোকদের একত্রিত হতে দেখে খুব ভালো লাগছে৷ 💚#এসজিজলবায়ুসমাবেশ #এখনিজলবায়ুন্যয়বিচার
সমাবেশের বার্তা প্রদানের জন্যে অংশগ্রহণকারীদের জলবায়ু জরুরি অবস্থা বোঝাতে লাল পোশাক পরে সংসদ সদস্যদের কাছে একটি করে পোস্টকার্ড লিখতে বলা হয়। চার ঘণ্টার অনুষ্ঠান শেষে আয়োজকরা ৩০৯টি পোস্টকার্ড সংগ্রহ করে।
বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য সমাবেশে উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির জেরাল্ড গিয়াম ফেসবুকে এই উদ্যোগের প্রশংসা করে লিখেছেন:
চমৎকার অগ্রবর্তী এই উদ্যোগটি শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন ও একটি সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরে প্রভাবিত শ্রমিক ও আদিবাসী গোষ্ঠীর মতো অন্যান্য গোষ্ঠীর জন্যেও উদ্বিগ্ন।
সামাজিক গণমাধ্যমে সমাবেশের মন্তব্য, ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করা কিছু অংশগ্রহণকারী এই প্রতিবাদটিকে “কর্পোরেটবিরোধী, যুব-চালিত বার্তাপ্রেরণ করে কর্তৃপক্ষকে সবুজ-ধোলাইয়ের জন্যে দায়ী” বলে বর্ণনা করেছে। একটি প্রধান থিম শ্রমিক ও অভিবাসীদের কল্যাণে সমর্থন প্রকাশ করেছে:
ফেসবুকে হুনি সুই হুন লিম সমাবেশে তার পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে লিখেছেন:
আরো #বাস্তুতন্ত্রযোদ্ধা, তরুণ কণ্ঠ, নতুন গ্রুপ ও উদ্যোগ দেখে আনন্দিত। এটি বিভিন্ন কারণসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা হলেও এর মূল বিষয় সহযোগিতা। আমরা সবাই একটি বাস্তুতন্ত্রের অংশ বলে আমরা একা কাজ করতে পারি না। অহংকার ও সঙ্গতি বিধান একসাথে মেলে না বলে এটিকে আমি একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখি। #সবুজহওয়া নিয়ে আরো সচেতনতা ও উদ্বেগ দেখে আনন্দিত।
সিঙ্গাপুর জাগো সংবাদ মঞ্চ পূর্ববর্তী প্রজন্মের পরিবেশবাদীদের উত্তরাধিকার স্বীকার করেছে:
আরো বেশি লোক আন্দোলনে যোগ দিলেও সরকারের বিরোধিতা করে তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার রুখে দেওয়ার সাহস, পরিবেশগত সমস্যাগুলির প্রতি অধিকতর সচেতনতা আনতে আবেদন ও অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং নীতিনির্ধারণে নাগরিকদের আরো বেশি ভূমিকা রাখার ব্যাপারে সরকারকে সংকেত দেওয়ার জন্যে দৃঢ় নীতি সুপারিশ তৈরি করে এটি সম্ভবের পথ তৈরি করা আমাদের পূর্বসূরীদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
সংবাদ প্রতিবেদনে ২০১৯ এর সমাবেশের ২,০০০ জন অংশগ্রহণকারীর তুলনায় এই বছরের সমাবেশে কম লোক জড়ো হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা আশা করছেন সাম্প্রতিক সমাবেশের ফলে সৃষ্ট উদ্দীপনা জলবায়ু সমস্যা নিয়ে বৃহত্তর সচেতনতা তৈরি করবে। সংগঠকরাও সম্মিলিত কর্মকাণ্ড সংগঠিত করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে:
আমরা মনে করি বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ ও সমাবেশগুলি সরকারকে শক্তিশালী জলবায়ু নীতি প্রণয়নের জন্যে চাপ দিতে সাহায্য করার মতোই সম্মিলিত পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।