উত্তর-পূর্ব নাইজার সাহেলে সশস্ত্র হামলা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত

চিন্তাবারাদেনে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আসা উদ্বাস্তু শিশুরা। খামেদ নাজিমের ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

সাহেলের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নাইজার এখন পশ্চিমের পছন্দের অংশীদারের ভূমিকা পালন করছে। ফরাসি সৈন্যরা মালির বারখানে বাহিনী থেকে ২০২২ সালের আগস্টে এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে বুরকিনা ফাসো থেকে প্রস্থানের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়া মোহাম্মদ বাজুমের দেশ সাহেলের নিরাপত্তা মিশনে পশ্চিমা বাহিনীর নতুন ঘাঁটি হিসেবে কাজ করছে।

পশ্চিম আফ্রিকার মালি, বুরকিনা ফাসো, মৌরিতানিয়া, আইভরি কোস্ট, চাদ, (উত্তর) নাইজেরিয়া, (উত্তর) বেনিন ও (উত্তর) টোগোসহ প্রায় দশটি দেশে চলমান সাহেল যুদ্ধ মূলত একটি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংঘাত। এটি সশস্ত্র দলগুলোকে এসব দেশের সরকারগুলির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।

নাইজার সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি ফরাসি সাংবাদিক অলিভিয়ের দুবোয়া ও মার্কিন মানবিক কর্মী জেফরি উডকেকে মুক্তি প্রভাবিত করতে এবং অন্যান্য অনেক নিরাপত্তা পদক্ষেপের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করতে বুরকিনা ফাসো ও মালি থেকে বহিষ্কৃত ফরাসি সৈন্যদের আতিথেয়তা দিলেও প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তা সংকটও দেশটিকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে।

বিভিন্ন সময়ে নাইজার জিহাদি হামলার সম্মুখীন হলেও এটি প্রতিদিন মালির বেশিরভাগ অংশসহ সীমান্তবর্তী দেশগুলি থেকে হাজার হাজার শরণার্থীকে স্বাগত জানায়। বারখানে বাহিনী চলে যাওয়ার পর থেকে উত্তর মালি কার্যকরভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় মেনাকা অঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকা সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। মেনাকা শহররের প্রায় পুরোটাই বৃহত্তর সাহারার ইসলামি স্টেটের (আইএস-জিএস) হাতে যারা ৭০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দার এই শহরের চারপাশে অবরোধ তৈরি করতে সক্ষম।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) অনুসারে ৩১ মার্চ, ২০২৩ তারিখে ২০ হাজারেরও বেশি মালির শরণার্থী, প্রায় ১৬,০০০ নাইজেরীয় শরণার্থী এবং ৩,০০০ এর বেশি নাইজেরীয় প্রত্যাবর্তনকারী প্রায় ৩৭৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে দেশটির রাজধানী নিয়ামিতাহুয়া অঞ্চলে নিবন্ধিত হয়েছে।

মালি ও বুর্কিনা-ফাসোর সংঘাতের উদ্বাস্তুরা তাহুয়া অঞ্চলের চিন্তাবারাদেন শহরে (রাজধানীর ১২৫ কিমি উত্তর-পূর্বে) এবং নিয়ামি থেকে ৪৮০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে গৃহীত হচ্ছে। উদ্বাস্তুদের এই গ্রহণের আয়োজনের প্রেক্ষাপটটি আরো ভালভাবে বোঝার জন্যে, গ্লোবাল ভয়েসেস হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চিন্তাবারাদেন শহর পর্ষদের পৌর কাউন্সিলর খামেদ কিলি কিলি নাজিমের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

জাঁ সোভোঁ (জেএস): সাহেল দেশসমূহের অংশ হওয়া সত্ত্বেও নাইজার জিহাদি আক্রমণে কম প্রভাবিত বলে মনে হয়। আপনি এটা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? 

Khamed Najim (KN) : Il faut saluer la politique du gouvernement nigérien qui à choisi d'être avec tous ces partenaires, européens, américains dans cette guerre contre le terrorisme. Actuellement il demeure le pays le plus sécurisé du sud du Sahara car aucun citoyen nigérien n'a fui le pays pour chercher refuge ailleurs. Récemment j'étais en déplacement au Nord du pays pour voir l'afflux des réfugiés maliens qui arrivent chaque jour à Tchintabaraden. La stabilité politique dont le Niger fait montre et sa coopération avec tous ces partenaires au développement et de lutte contre le terrorisme lui confèrent aussi cet avantage.

খামেদ নাজিম (কেএন): আমাদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে ইউরোপীয় ও মার্কিনী অংশীদারদের সাথে দাঁড়ানো নাইজারীয় সরকারের নীতিকে স্বাগত জানাতে হবে। নাইজারের একজন নাগরিককেও দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে পালিয়ে যেতে হয়নি বলে বর্তমানে এটি দক্ষিণ সাহারার সবচেয়ে নিরাপদ দেশ। সম্প্রতি আমি মালির উদ্বাস্তুদের আগমন দেখতে দেশের উত্তরে চিন্তাবারাদেনে রাস্তার উপরে ছিলাম। নাইজার প্রদর্শিত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এসব অংশীদারদের সাথে গড়ে ওঠা সহযোগিতাও এটিকে সুবিধা প্রদান করে।

জেএস: এই সুবিধাটি আজকে প্রতিবেশী দেশের উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানোর সুযোগ দেয়। আপনি কি ভয় পান না এই আতিথেয়তা নাইজারের প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরক্তি উৎপাদন করতে পারে?

KN: Effectivement, nous craignons cela, mais nous n'avons pas le choix. Tchintabaraden est l'une des plus grande commune du Nord du Niger, majoritairement Touaregs. La culture Touareg impose l'obligation à l'hospitalité et le respect des règles internationales. Nous sommes rassurés car l’État du Niger et ses partenaires sont à pied d’œuvre pour contrôler ces réfugiés dès leurs arrivés et de leurs séjours.

কেএন: আমরা আসলে ভয় পেলেও আমাদের কোন বিকল্প নেই। তুয়ারেগ সংখ্যাগরিষ্ঠতাসহ উত্তর নাইজারের বৃহত্তম সম্প্রদায়গুলির একটি হলো চিন্তাবারাদেন। তুয়ারেগ আতিথেয়তার সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। আমরা আশ্বস্ত হচ্ছি নাইজার রাষ্ট্র ও এর অংশীদাররা এই উদ্বাস্তুদের প্রথম আগমন থেকে তাদের এখানে অবস্থান পর্যন্ত সঙ্গতি বিধানের জন্যে প্রস্তুত রয়েছে।

জেএস: স্থানীয় জনগণ ও উদ্বাস্তুদের সহাবস্থানে কোনো উত্তেজনার ঝুঁকি আছে কি?

KN : Actuellement tous les moyens nécessaires sont mis en œuvre pour apporter à ces familles l'aide nécessaire pour leur survie et permettre à ces milliers d'enfants d'avoir des soins adéquats et l'accès à l'école. Il faut noter que certains sont entrain de partir vers l'Algérie voir la Libye. En ce qui concerne les risques de tensions, cette situation ne fera pas l'objet d'une crise à l'intérieur du Niger. Nous sommes rassurés du moment que les autorités sont constamment sur place en train d'accompagner, de sensibiliser ces réfugiés et la population locale sur la cohésion sociale, le vivre ensemble et la prévention des conflits. Toute belle âme, humaine qui a la piété doit être fière d'aider ses semblables ou ses frères africains. Et c'est ce que nous faisons à Tchintabaraden

কেএন: বর্তমানে এই পরিবারগুলির বেঁচে থাকার জন্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং এই হাজার হাজার শিশুর পর্যাপ্ত যত্ন ও স্কুলে প্রবেশাধিকারের প্রয়োজনীয় সমস্ত উপায় রয়েছে। অবশ্যই উল্লেখ্ করতে হবে অনেকে আলজেরিয়া অথবা লিবিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উত্তেজনার ঝুঁকি হিসেবে এই পরিস্থিতি নাইজারের অভ্যন্তরীণ সংকটের উৎস হবে না। কর্তৃপক্ষ ক্রমাগত সরেজমিন উপস্থিত থেকে উদ্বাস্তু ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে সামাজিক সংহতি, একসাথে বসবাস ও সংঘাত প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতনতা প্রচারে নিযুক্ত রয়েছে বলে এই মুহুর্তে আমরা আশ্বস্ত। প্রতিটি ভদ্র, নিষ্ঠাবান আত্মা অবশ্যই আমাদের পাশের মানুষ বা আমাদের আফ্রিকীয় ভাইদের সাহায্য করে গর্বিত হবে। আর চিন্তাবারাদেনে আমরা সেটাই করছি।

জেএস: জিহাদিদের মোকাবেলায় নাইজার পশ্চিমা দেশগুলো থেকে কী ধরনের সমর্থন পাচ্ছে?

KN : Dans sa lutte contre les djihadistes, le Niger travaille avec plusieurs partenaires, pas seulement les Occidentaux. Hormis les partenaires comme la France et les États Unis (qui ont déjà deux bases stratégiques dans le pays), il y a aussi la Turquie, l'Inde, la Chine. Tous ces partenaires interviennent dans plusieurs domaines, principalement la défense, la formation, la fourniture des matériels de guerre et le renseignement.

কেএন:

জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নাইজার শুধু পশ্চিমাদের সাথে নয় বেশ কয়েকটি অংশীদারের সাথে কাজ করছে। (ইতোমধ্যে দেশে দুটি কৌশলগত ঘাঁটি থাকা) ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো অংশীদার ছাড়াও রয়েছে তুরস্ক, ভারত ও চীন। এসব অংশীদাররা প্রধানত প্রতিরক্ষা, প্রশিক্ষণ, যুদ্ধের সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও তথ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে।

জেএস: এটি কি নাইজারের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষণ?

KN: Sans doute, cette situation est le signe d'une montée en puissance du Niger. De par le passé, ce sont les pays voisins qui jouissaient de ce privilège au vu de leur position stratégique avec ces grandes puissances. Mais les récentes crises offrent une opportunité à notre pays de se positionner comme grand acteur dans cette lutte contre le terrorisme dans le Sahel. En si peu de temps, il a réalisé des prouesses qui rassurent ces grandes puissances. Nous espérons qu'il fera encore plus que ce qu'il a déjà réalisé dans le Sahel. Les réfugiés qui sont actuellement dans le pays se sentent en sécurité. En plus aucun Nigérien n'a fui son pays pour se réfugier ailleurs.

কেএন: নিঃসন্দেহে এই পরিস্থিতি নাইজারের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষণ। অতীতে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলিই পরাশক্তিগুলির সাথে তাদের কৌশলগত অবস্থানের কারণে এই সুবিধা ভোগ করলেও সাম্প্রতিক সঙ্কটগুলি আমাদের দেশের জন্যে সাহেলের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেকে একটি বড় খেলোয়াড় হিসেবে অবস্থান করার সুযোগ দিয়েছে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে এটি এমন কাজ করেছে যা এই পরাশক্তিগুলিকে আশ্বস্ত করে। আমরা আশা করি এটি সাহেলে ইতোমধ্যে যা অর্জন করেছে তার থেকেও বেশি কিছু করবে৷ বর্তমানে দেশে থাকা শরণার্থীরা নিরাপদ বোধ করছে। তার ওপর কোনো  নাইজারীয় তাদের দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও আশ্রয় নেয়নি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .