অস্ট্রেলিয়ান তরুনদের নিয়ে আরেকটি ভালো গল্প। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাসকারী ১১ বছর বয়সী একজন কিশোরী আন্তর্জাতিক নারীদের খেলা বিষয়ক একটি অনলাইন ম্যাগাজিন শুরু করেছে।
অ্যাবি নামের এ কিশোরী যখন লক্ষ্য করলো মেয়েদের খেলা বিষয়ক কোন ম্যাগাজিন নেই তখনই সে এমন একটি উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবল। এই চিন্তা থেকেই সে শুরু করলো তাঁর ম্যাগাজিন ‘হার ওয়ে':
ম্যাগাজিনটির খরচ ২.০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (১.৫০ ইউএস ডলার) এবং এর অর্ধেক দান করা হয় ইউনিসেফ আয়োজিত অস্ট্রেলিয়ার নারীদের ক্ষমতায়নে আয়োজিত ক্রিকেট খেলার উদ্যোগে।
Meet the 11-year-old who created Her Way magazine to tell stories about women's sport https://t.co/mHRkz7INUm
— Genevieve Poole (@GenevievePool12) October 1, 2021
পরিচিত হয়ে নিন ১১ বছর বয়সী একজনের সঙ্গে যে হার ওয়ে নামের একটি ম্যাগাজিন শুরু করেছে নারীদের খেলার খবর প্রকাশের জন্য। — জেনেভিভি পোল
সাউথ সিডনি ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলা রাগবি লিগ খেলোয়াড় ক্যাটি ব্রাউন অ্যাবির ইন্টারভিউ নিয়েছেন যা তার রিয়েল টক পডকাস্টে প্রকাশিত হয়েছে।
If you want a feel good podcast – meet Abbie, the creator of @HerwayMagazine
She’s 11-years-old and smashin’ ceilings! ???
Thanks for chatting to me on Real Talk – full episode ??https://t.co/vovlbcxhtq pic.twitter.com/1K3z0MQRTh— Katie Brown ??♀️ (@katiebrownaus) September 28, 2021
মন ভালো করা একটি পডকাস্ট শুনতে চাইলে – পরিচিত হয়ে নিন অ্যাবির সঙ্গে যে ‘হার ওয়ে’ নামের একটি ম্যাগাজিন চালু করেছে। সে মাত্র ১১ বছর বয়সী। ???
ধন্যবাদ আমার সঙ্গে রিয়েল টকের কথা বলার জন্য – পুরো পর্ব ?? — ক্যাটি ব্রাউন
অ্যাবিকে নিয়ে বিশেষ সংবাদ প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল টিন নেটওয়ার্ক স্টুডিও ১০:
ম্যাগাজিনের বাইরে রয়েছে হার ওয়ে’র ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট। এ সোশ্যাল মিডিয়াগুলো পরিচালিত হয় অ্যাবি’র ‘অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে’।
খেলাধুলার জগতে অ্যাবির পদচারণা নতুন নয়। ৮ বছর বয়সী হিসেবে ২০১৯ সালে অ্যাবি অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল লিগে (এএফএল) অসকিকার এ বর্ষসেরা মনোনয়ন পেয়েছিল এবং ন্যাশনাল টেলিভিশনে ইন্টারভিউ দিয়েছিল যা প্রায় ৭০ লাখ দর্শক দেখেছেন। সে ইন্টারভিউ’র ইউটিউব সংস্করণ পাওয়া যাবে এখানে।
সে বছরে অ্যাবি মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এএফএল গ্র্যান্ড ফাইনালে খেলেছে অর্ধেক সময়। পরবর্তীতে অ্যাবিকে প্রিমিয়ারশিপ মেডেল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় মজা করে বলেছে, ‘তুমি খুবই ভালো যে কোন ছেলের জন্য’। পুরো ঘটনাটি সে তার ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যায় প্রকাশ করেছে।
অ্যাবি ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন খেলার খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছে নিজের ম্যাগাজিনের জন্য। অস্ট্রেলিয়ান গলফার এবং ২০১৯ সালের ওমেন পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপের বিজয়ী হান্নাহ গ্রিনকে নিয়ে বিশেষ ফিচার তার ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যায় প্রকাশ করেছে। আরো বিস্তারিত ইন্টারভিউ ম্যাগাজিনের পরবর্তী সংস্করণে প্রকাশিত হবে।
ডেলাইট সেভিংস নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের সতর্ক করতে মজা করে একটি বিশেষ টুইট করেছে অ্যাবি। যে টুইটকে দারুন বলেছে অস্ট্রেলিয়ান ওমেনস ক্রিকেট দল:
Good reminder!!
— Australian Women's Cricket Team ? (@AusWomenCricket) October 2, 2021
সবাইকে মনে রাখবেন – ডে লাইট সেভিংস আজ রাতে শুরু হবে, তাই যখন এলিস পেরির হাত ২টার দিকে বাঁকা হয় তখন তা ৩টা হয়ে যায়
@AusWomenCricket – মনে করিয়ে দেয়ার দারুণ প্রদর্শন !!
তার রয়েছে আরও জনপ্রিয় ভক্ত:
OMG @Anthony_Wiggle just liked a tweet of mine. Five years ago my sister and I dressed up like Emma at a Wiggles show ??
— HerWay_Magazine (@HerwayMagazine) October 3, 2021
ও মা গো! অ্যান্থনি উইগল (টিভি তারকা) আমার একটি টুইট পছন্দ করেছে। পাঁচ বছর আগে আমি এবং আমার বোন উইগেলস অনুষ্ঠানে এমার মতো পোশাক পরেছি।
অ্যাবি বর্তমানে প্রস্তুতি নিচ্ছে বড় খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশেষ কাভারেজ দেয়ার বিষয়ে সোচ্চার হতে। সে কথাটিই স্পষ্ট হয়েছে অনেকটাই সম্প্রতি প্রকাশিত এক টুইটে। বিশেষ করে ৭ স্পোর্টস নামক জাতীয় টিভিকে উদ্দেশ্য করে এ টুইট করা হয়েছে।
Why do horses get chosen over women? #7sport
— HerWay_Magazine (@HerwayMagazine) October 2, 2021
কেন ঘোড়াকেই পছন্দ করা হয় নারীদের আগে? – হারওয়ে ম্যাগাজিন
ইতিমধ্যে অনলাইনে নিজের অনেক অনুসারী তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছেন:
In a week where an 11 year old girl has started an online magazine for women’s sport (so refreshing) @HerwayMagazine , @SMHsport could only manage 2 tiny stories on women’s sport – ½ page out of 14 pages
— Nic Wakefield Evans (@Nicwe) October 2, 2021
এক সপ্তাহ আগে ১১ বছর বয়সী একটি মেয়ে নারীদের খেলা বিষয়ক একটি অনলাইন ম্যাগাজিন চালু করেছে (দারুণ খবর)। ঐদিকে সিডনি মর্নিং হেরালদ ২টি ছোট সংবাদ নারীদের খেলা নিয়ে প্রকাশ করেছে যা তাদের ১৪ পাতার মধ্যে আধা পাতা জুড়ে রয়েছে। — নিক ওয়েকফিল্ড ইভানস
গ্লোবাল ভয়েসেসের পক্ষ থেকে অ্যাবির কাছে তাঁর ম্যাগাজিন ও নিজের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।
কেভিন রিনি (কেআর): তুমি কেন তোমার উদ্যোগটি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন হিসেবে ভেবেছো?
অ্যাবি: শুরুতে আমি একটি সত্যিকারের প্রকাশিত ম্যাগাজিনের কথা ভেবেছিলাম, কারণ ম্যাগাজিন সংগ্রহ করতে আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এমন একটি উদ্যোগের যাতে সাধারণ মানুষ দ্রুত সংগ্রহ করতে পারে এবং কম খরচে ম্যাগাজিন পেতে পারে। এক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিই সেরা। পাশাপাশি, তরুণরা সবসময়ই বিভিন্ন যন্ত্রের পর্দায় চোখ রাখছে। তাদের জন্য অনলাইনে ম্যাগাজিন পড়াটা খুব সহজ হয়।
কেআর: তুমি কিভাবে তোমার কর্মীদের নির্বাচন করেছো? প্রযুক্তি ভিত্তিক সহায়তা কিভাবে পাচ্ছো?
অ্যাবি: মূলত আমি এবং আমার বাবাই পুরো কাজটি করে থাকি। বাবাই মূলত আমাকে বিভিন্ন ধরনের সংবাদের গবেষণার কাজে সহায়তা করেন এবং বিভিন্ন ছবি সংগ্রহ করতে সাহায্য করে থাকেন। পাশাপাশি আমি যখন বিভিন্ন খেলায় যাই, বিভিন্ন জনদের সঙ্গে কথা বলি বাবা ছবি তুলে সহায়তা করেন। মা ম্যাগাজিনের লেখাগুলো বানানসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখে দেন।
কেআর: ব্যক্তিগত ভাবে বা প্রকাশ্যে তোমার অন্যান্য পরিকল্পনা কি? বিশেষ করে নিজের ক্যারিয়ার/পড়াশোনার বিষয়ে তুমি কি ভাবছো?
অ্যাবি: আমি নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এখনো তেমন চিন্তিত না। যদি আমি পেশাগত ভাবে খেলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে না যাই তাহলে খেলাধুলা বিষয়ক সাংবাদিকতায় যুক্ত হতে পারি। অবশ্য আমি শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষ, প্রাণী ও শিশু নিয়ে কাজ করতেও আগ্রহী। এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয় আছে যা করতে আমি পছন্দ করি।
কেআর: বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলা বা তাদের ডাকতে তোমার কেমন লাগে?
অ্যাবি: আমি এ কাজটাকে খুব পছন্দ করি এবং আমি এমন কিছু করতে চাই যা আমি পড়বো এবং অন্যান্য পাঠকরাও পড়বে। এর বাইরে আসলে আমি তেমন কিছু ভাবি না।
কেআর: হার ওয়ে’র এ পথচলা নিয়ে তোমার আর কোন মন্তব্য আছে?
অ্যাবি: যে প্রতিক্রিয়া আমি পেয়েছি ম্যাগাজিন বিষয়ে তা সত্যিই অনেক বড়। আমি এমন প্রতিক্রিয়া আশা করিনি। আমি ভেবেছি সবমিলিয়ে ২০ জন মানুষ ম্যাগাজিনটি পড়বে। কিন্তু দেখা গেল সারাবিশ্ব থেকেই ম্যাগাজিনটি অনেকেই কিনছে, পড়ছে এবং আমি অনেকের ইন্টারভিউ নিতে পারছি। এটা সত্যিই দারুণ, যা আমি আশাও করিনি।
অ্যাবি’র উদ্যোগ ইতিমধ্যে আরো তরুন অষ্ট্রেলিয়ানদের উদ্ধুদ্ধ করছে। মেলবোর্ণের তিনজন টিনেজার অ্যাবির উদ্যোগে উদ্ধুদ্ধ হয়ে মেকিং অ্যা স্প্ল্যাশ অনলাইন নামের কোভিড-১৯ ডেটা ট্রেকিং ভিত্তিক ওয়েবসাইট তৈরি করেছে।
অষ্ট্রেলিয়ার তরুণরা এ ধরনের নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে যা সত্যি দারুণ খবর। অ্যাবি সত্যিই একটি দারুণ একটি কাজ করছে!