বর্তমান রাষ্ট্রপতি মিয়া সান্দুর নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ও সংহতি পার্টি (পাস) মোলদোভাতে এই রবিবারের অন্তর্বর্তী সংসদীয় নির্বাচনে নিশ্চিত বিজয়ের জন্যে প্রস্তুত।
১১ জুলাইয়ের ভোটের পর থেকে এখন পর্যন্ত সমস্ত ব্যালট গণনা করা হয়েছে। এতে সান্দুর ইউরোপপন্থী দল ৫৩% এর সামান্য কম ভোট লাভ করে মোলদোভা সংসদের ১০১টি আসনের মধ্যে ৬৩টি পেয়ে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইগর ডোডন এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির ভোরোনিনের নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বিরোধী দল সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্টরা (বিইসিএস) ২৭% এর চেয়ে কিছু বেশি ভোট পেয়েছে। শীঘ্রই সরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নতুন সরকার গঠনের দু’টি ব্যর্থ চেষ্টার পর সান্দু ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের ডাক দেন। ভোটের পরে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন যে তার মধ্য-ডানপন্থী পিএএস পার্টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে এবং সাবেক সোভিয়েত এই দেশটিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেষ্টা করবে।
২০২০ সালের নভেম্বরে রুশপন্থী ডোডনকে পরাজিত করার পরে রাষ্ট্রপতি হওয়া সান্দু একটি ফেসবুকের বিবৃতিতে বলেছেন যে রবিবারের নির্বাচনটি ছিল “চোরদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার এবং একটি সামগ্রিক ও ভাল সরকার নির্বাচনের সুযোগ।”
মোলদোভার নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যে দেখা যায় যে বিদেশে বসবাসরত দুই লাখেরও বেশি প্রবাসী সদস্যসহ ৪৮ শতাংশের বেশি যোগ্য ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। যোগ্য ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩২ লক্ষ নাগরিক।
একটি স্বাধীন মোল্দোভার প্রেস সংস্থা আইপিএন-এর পক্ষ থেকে মতামত এবং বিশ্লেষণে অংশ নিতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডায়োনিস সেনুসা বলেছেন, কম ভোট পড়ার আশঙ্কার মধ্যেও পিএএসের সাফল্য অনেকটাই “ভোট প্রদানে উৎসাহ প্রদান করা রাষ্ট্রপতি মিয়া সান্দু‘র প্রতিচ্ছবির উপর নির্ভরশীল।”
25) It’s an important element. About an hour before the end of the vote, President Sandu used her Facebook platform (268k followers), asking people to convince their friends and relatives to go vote. This happened while many wondered about the slowdown in participation.
— Dionis Cenusa (@DionisCenusa) July 11, 2021
২৫) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘন্টা আগে রাষ্ট্রপতি সান্দু তার ফেসবুক মঞ্চ (২ লক্ষ ৬৮ হাজার অনুসারী) ব্যবহার করে লোকজনকে তাদের বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদের ভোট দিতে যেতে রাজি করাতে বলেন। অনেকেই অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করার সময় তিনি এটা করেন।
সেনুসা আরো উল্লেখ করেন সান্দুর দলটি ” দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী প্রথম ইইউপন্থী দল।”
কাঠামোগত সংস্কার এবং বৃহত্তর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপর জোর দিয়ে মোল্দোভা একটি নতুন রাজনৈতিক আবর্তে প্রবেশ করছে যা পশ্চিমা দেশগুলি থেকে সহায়তা ও বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। ইউরোপীয় এজেন্ডা যে অতীতের তুলনায় আরো শক্তিশালী হবে এটাও নিশ্চিত।
পিএএসের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দলকে রাষ্ট্রক্ষমতার একাধিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাবান করলেও এটি একইসঙ্গে তাদেরকে আগে থেকেই রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতিমূলক আচরণের উপর নিবিড় নজর রাখা মোলদোভার সুশীল সমাজ ও স্বাধীন সাংবাদিকদের নিরীক্ষণের সম্ভাব্য বিষয়বস্তুতে পরিণত করেছে।
নতুন শাসক গোষ্ঠীটির এই ইইউপন্থী ঝোঁক মোলদোভার বিচ্ছিন্ন ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে জড়িত রাশিয়ার সাথে সান্দুর সম্পর্ককে অবশ্যই আরো জটিল করে তুলবে এবং সম্ভবত দেশে রুশপন্থী বিরোধীদের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে।