ব্যাপক টুইটার ব্যবহারকারী মালবোয়েন ধারাবাহিক ভাবে বেশ কিছু ছবি সরবরাহ করেছে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের শহর ওসাকা এবং একই সাথে জাপানের কিছু আকর্ষণীয় মুহূর্তকে তুলে ধরে যা দেশটির সামরিকীকরণ এবং সামগ্রিক যুদ্ধকে আলিঙ্গন করাকে প্রদর্শন করেছে।
মালবোয়েন যে কিনা দীর্ঘ সময় ধরে জাপানে বাস সে টুইটারে জাপান নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করে। তিনি অজস্র বিষয় টুইটারে পোস্ট করে থাকেন যার মধ্যে রয়েছে সুপারমার্কেটে বিক্রি হওয়া সামান্য জনপ্রিয় গোল গোল সুশি, জাপানে যারা গাইজিন নামে পরিচিত সেই সব বিদেশীদের নিয়ে তোলা সেরা ছবি অনুসন্ধান এবং কর্পোরেট এর পুনারায় ব্রান্ডিং-এর জনপ্রিয় ধারার মত বিষয়।
এই ক্ষেত্রে মালবোয়েন যুদ্ধ পূর্ববর্তী ওসাকার বেশ কিছু ধারাবাহিক ছবি পোস্ট করেছে, যে শহরটি ১৯২৩ সালে মহা বিপর্যয়কর কানটো ভূমিকম্পে টোকিও বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে জাপানের সবচেয়ে বড় শহরে পরিণত হয়।
Osaka was already benefitting from a booming textile industry, which earned it the label “Manchester of the East”. This Expo took place in 1925. pic.twitter.com/1l8Dr5giLM
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
ক্রমশ বয়ন শিল্প কারখানার বৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে ওসাকা লাভবান হতে শুরু করে। যার ফলে ওসাকা নামের জাপানের এই শহরটিকে প্রাচ্যের ম্যাঞ্চেস্টার নামে অভিহিত করা হতে থাকে। এই বাণিজ্য মেলা ১৯২৫ সালে এই শহরে অনুষ্ঠিত হয়।
Here's one of the displays at that 1925 exhibition, showing the foodstuffs making up the daily diet of Osaka people. They certainly weren't trying to flatter themselves with that face. pic.twitter.com/qYRjTuAQtz
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
এখানে ১৯২৫ সালে সেই মেলার এক প্রদর্শনী, যেখানে দেখানো হচ্ছে ওসাকার নাগরিকদের জন্য প্রতিদিন খাবার তৈরি করার দৃশ্য। তবে নিঃসন্দেহে এই মুখের মাধ্যমে তারা নিজেরা নিজেদের মুগ্ধ করার চেষ্টা করেনি।
টুইটার থ্রেড বা ধারাবাহিক ভাবে যুক্ত এই টুইটারের শুরু যুদ্ধপূর্ব ওসাকার অনুসন্ধানের মাধ্যমে, সে সময়ে টেন্নোজি চিড়িয়াখানার অন্যতম এক বিখ্যাত বাসিন্দার জীবন অনুসন্ধানে পরিণত হয়। এর নাম ছিল রিটা, আর সে ছিল এক শিম্পাঞ্জি, ২০১০ সালে মাইওমি ইতো তার বই “জাপানের যুদ্ধকালীন সময়ে চিড়িয়াখানা সংক্রান্ত নীতিঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক নীরব শিকার” নামের বইয়ে যাকে নিয়ে তথ্য প্রদান করেছেন।
In the 1930s, one of the most popular animals at Tennoji Zoo in Osaka was Rita the chimpanzee. pic.twitter.com/zDoJXm72zj
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
১৯৩০ সালে, ওসাকার টেন্নেওজি চিড়িয়াখানার অন্যতম এক জনপ্রিয় প্রাণীর নাম ছিল রিটা নামের শিম্পাঞ্জিটি।
Here's Rita with shogi master Yoshio Kimura. pic.twitter.com/Xs4G0kEubq
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
শোগি মাস্টার (শিল্পকলায় দক্ষতা অর্জনকারী) ইয়োশিও কিমুরার সাথে রিটা
অনিবার্য ভাবে নীচে তার এই ছবি চিত্রিত করছে যুদ্ধ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জাপানে সামরিকীকরণ হতে থাকার বিষয়টিঃ
In 1940, the zoo dressed Rita up in an army uniform. pic.twitter.com/HyqEl9a04x
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
১৯৪০ সালে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রিটাকে সামরিক পোষাকে সজ্জিত করে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বেই রিটা এক সঙ্গী লাভ করে, তবে কিছুদিনের মধ্যে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে সে মৃত্যু বরণ করে।
By this time, she had a partner called Lloyd, and he got in on the act too. pic.twitter.com/OtN5u0Dtej
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
এই সময়ে সে এক সঙ্গী লাভ করে যার নাম ছিল লয়েড, এবং সে এসেই চিড়িয়াখানার দর্শকদের মনোরঞ্জনের কাজে নেমে পড়ে।
Rita had a stillbirth in 1940, and died shortly afterwards. Her predecessor at the zoo, a chimp named Taro, had died of overexertion. Rita also had a demanding schedule. pic.twitter.com/xWswnkeR0t
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
১৯৪০ সালে রীতা এক মৃত সন্তানের জন্ম দেয় এবং এর অল্প কিছুদিনের মধ্যে সেও মৃত্যু বরণ করে। চিড়িয়াখানায় তার উত্তরসূরি এক শিম্পাঞ্জি লাভ করে, যার নাম ছিল তারো, সেও প্রচণ্ড কাজের চাপে মৃত্যুবরণ করে। রিটারও প্রচণ্ড ব্যস্ত সময়সূচী ছিল।
এদিকে যখন জাপানের সামরিক সরকার লয়েড নামের শিম্পাজির নাম জাপানী রাখার জন্য চিড়িয়াখানাকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলো, যে চাপ বজায় ছিল যুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পূর্ব পর্যন্ত। রিটা তার এই পশ্চিমা নামেই মৃত্যুবরণ করে, কিন্তু লয়েডকে যুদ্ধকালীন সময়ের জাপানী সামরিক শাসকের প্রদান করা নতুন নাম গ্রহণ করতে হয়। টেন্নোজি চিড়িয়াখানায় আজো এই দুই শিম্পাজির মূর্তি রাখা আছে।
Lloyd survived, but not as Lloyd. When the Ministry of Education banned the use of English, he was renamed Katsuta. There's a statue of both chimpanzees at the zoo. pic.twitter.com/mJcVzxlww9
— Mulboyne (@Mulboyne) February 9, 2018
লয়েড আরো কিছুদিন বেঁচে ছিল,তবে লয়েড নামে নয়। যখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাপানে ইংরেজির ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, তখন লয়েডের নতুন নাম রাখা হয় কাতসুতা। এই চিড়িয়াখানায় আজো এই দুজনের মূর্তি রাখা আছে।
মালোবয়েনকে টুইটারে অনুসরণ করা যাবে এখানে।