মিয়ানমারের উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার জন্য থাইদের উদারতার আহ্বান জানিয়ে নতুন ভিডিওগুলোতে আশা প্রকাশ

A Thai soldier stands guard at a camp for Karen refugees on the Thai/Myanmar border. Image and caption from the Flickr page of Rusty Stewart (CC License)

থাইল্যান্ডের একজন সৈনিক থাই-মিয়ানমার সীমান্তে কারেন শরণার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট একটি শিবিরে পাহারায় দাঁড়িয়ে আছেন। ছবিঃ রাস্টি স্টিয়ার্ট/ ফ্লিকর। সিসি ২.০

থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী মিয়ানমারের শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য থাইদের উৎসাহিত করতে উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘ হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) একটি ভিডিও তৈরি করেছে।

“দ্যা লাইফ অব পা থু” শিরোনামের ভিডিওটিতে শিশু শরণার্থীদের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। এটি “উদ্বাস্তুদের জন্য নামজাই” প্রচারনার একটি অংশ। প্রচারণাটির মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ভিতরে নয়টি শিবিরে বসবাসকারী ১ লক্ষ ছয় হাজার মিয়ানমার শরণার্থীদের সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে কাজ করছে। থাই ভাষায় “নামজাই” শব্দটির অর্থ “উদারতা”। প্রচারণাটি দেশের উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী শরণার্থীদের জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দেওয়ার সংস্কৃতি আরও প্রসারিত করতে চায়।

ভিডিওটিতে একজন থাই অভিনেত্রীকে একদল তরুণ শিক্ষার্থী শ্রোতাদের একটি শিশু শরণার্থীর গল্প বলতে দেখা যায়। এই ভিডিওতে পা থু একটি শিশু। কয়েকজন “খারাপ লোক” তাঁর পিতাকে অপহরণ করে তাঁকে ও তাঁর মাকে জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার আগ পর্যন্ত সে একটি খামারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো এবং তাঁর বাবা মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। অবশেষে তাঁরা একটি শরণার্থী শিবিরে পৌঁছে। ভিডিওতে এছাড়াও দেখান হয়েছে পা থু তাঁর বাড়িতে ফিরে যেতে এবং তাঁর বাবাকে আবার দেখতে চায়। ইউএনএইচসিআর এর কাজকে সমর্থন করে থাইদেরকে এই শরনার্থীদের সাহায্য করার জন্য উৎসাহিত করার মাধ্যমে ভিডিওটি শেষ হয়ঃ

মিয়ানমারের জাতীয় সরকার এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে গত ৬০ বছর ধরে যুদ্ধ চলার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের বেশিরভাগ কারেন এবং কারেন্নি সম্প্রদায়ের লোক। এখন থেকে ৩০ বছরেরও বেশি সময় আগে তাদের প্রদেশে যুদ্ধ ছড়িয়ে পরলে তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে।

থাইল্যান্ডে আশ্রয় প্রার্থীদের সাহায্য করার জন্য ইউএনএইচসিআর আর্থিক অনুদান চেয়েছেঃ

থাইল্যান্ডে আশ্রয় ও নিরাপত্তা চাওয়া ছাড়া তাঁদের আর কোন উপায় ছিল না। আশ্রয় প্রার্থীদের বেশিরভাগই শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। অতীতের মানসিক আঘাত এবং বর্তমানের কষ্ট মোকাবিলা করে তাঁদের জীবন পুনর্নির্মাণের জন্য তাঁরা সবাই সংগ্রাম করছে।

আমরা তাঁদের অতীত অভিজ্ঞতা পরিবর্তন করতে পারব না, তবে আপনাদের নামজাই এর মাধ্যমে আমরা একসাথে ভাল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে তাঁদের সাহায্য করতে পারি।

বিশেষ করে জাতিসংঘ নর মু নামে একটি শিশু শরণার্থীর মর্মভেদী গল্প শেয়ার করেছেঃ

আমার গ্রামটি সশস্ত্র মানুষে পরিপূর্ণ ছিল। কাউকে খুঁজে পাওয়ার সাথে সাথে তাঁরা তাঁদের গলা কেটে অথবা বন্দুক দিয়ে গুলি করে হত্যা করত। আমাদেরকে তাঁদের দাস হতেও বাধ্য করা হত। নারীরাও এর ব্যতিক্রম ছিল না। আমার পরিবারের সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার নানীর সঙ্গে সেখান থেকে পালিয়ে আসি।

এই অঞ্চলের অনেকেই আশা করেন, নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন, মিয়ানমারের নতুন ক্ষমতাসীন দল এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি সমঝোতার আলোচনা পুনরায় জ্বলে উঠবে। যদি দুইটি পক্ষই একটি নিষ্পত্তিতে পৌঁছাতে পারেন, তবে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ একটি চলমান গৃহযুদ্ধের অবসান হতে পারে।

থাইল্যান্ড সীমান্তে মিয়ানমারে অবস্থিত নয়টি ক্যাম্প ছাড়াও চীন সীমান্তেও অনেক বাস্তুচ্যুত লোক রয়েছে। রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা এখনও পশ্চিম মিয়ানমারে নিপীড়িত হচ্ছে এবং মালয়েশিয়াতেও মিয়ানমারের অনেক শরনার্থী রয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .