
প্যারিস এ হামলার পর অভিযোজিত শান্তি চিত্র (জাঁ জুলিয়েন কৃত প্রাথমিক নকশার উপর করা)। টুইটারের মাধ্যমে – টুইটারের মাধ্যমে – পাবলিক ডোমেইন থেকে নেয়া
গত নভেম্বর ১৩, ২০১৫ তারিখে প্যারিসের উত্তর শহরতলী সন্ত দেনি এবং ১০ম ও ১১তম জেলায় গোলাগুলি এবং এবং আত্মঘাতী বোমার মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলা সংঘটিত হয়।
মোট ছয়টি জায়গায় ব্যপক গোলাগুলিতে শতাধিক বেসামরিক লোক নিহত হয়। প্রায় একই সময় তিনটি পৃথক বিস্ফোরণ হয় স্টাডে ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামের কাছাকাছি – যেখানে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে একটি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এর মধ্যে ভয়াবহতম হামলা হয় বাতাক্লা থিয়েটারে যেখানে আক্রমণকারীরা সঙ্গীতানুরাগিদের জিম্মি করে এবং অন্তত আশি জনকে গুলি করে হত্যা করে। আট আক্রমণকারী এবং দুজন আত্মঘাতী বোমাবাজ নিহত হয়েছে।
১৪ই নভেম্বরের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছে। উপরন্তু, হামলাগুলোর সময় ৩০০ এরও অধিক মানুষ আহত হয় যাদের মধ্যে ৮০ জন গুরুতর আহত হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
হামলার পরেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলাদ জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেন, এবং সাময়িকভাবে ফ্রান্সের সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনটি ১৯৬১ সালের পরে আর হয়নি।
গত জানুয়ারিতে চার্লি হেবদো আক্রমণের পর এই বছর প্যারিসে এটা সবচেয়ে খারাপ ট্রাজেডি।
সকালবেলা প্যারিসবাসির ঘুম ভাঙ্গে একটি আতঙ্কের শহরে যখন তারা দেখে পুলিশের সাজোয়া যান রাস্তায় টহল দিচ্ছে। হামলার পর দুঃখ ও সংহতির অনেক বার্তা সোশ্যাল মিডিয়া বা পাবলিক ফোরামে পোস্ট করা হয়।
সেলুলার নেটওয়ার্কগুলো ধীর গতির হয়ে যায় যখন প্রচুর মানুষ তাদের বন্ধু এবং আত্মীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফোন করা শুরু করে। অনেক পরিবার এখনও #rechercheparis (খোঁজ প্যারিস) হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে তাদের ভালোবাসার জনের হদিস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। অন্যরা #liberteegalitefraternite (স্বাধীনতাসমতাসহমর্মিতা) হ্যাশট্যাগ সহকারে বার্তা পোস্ট করে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে একাত্মতা দেখিয়েছেনঃ
#LiberteEgaliteFraternite pic.twitter.com/ZbdAXkA19i
— Léa (@KeepCalmImHere) November 14, 2015
পিট এর খাতিরে, আপনারা শুধু কি পরস্পরকে ভালবাসবেন?
“#LiberteEgaliteFraternite are values shared by all of us.” @BarackObama #PrayForParis pic.twitter.com/uAFmyW6YZb
— Georvin Bugeja (@GeorvinBugeja) November 14, 2015
(স্বাধীনতা-সমতা-সহমর্মিতা) এই গুণগুলো আমরা সবাই সমর্থন করি
অন্যরা চার্লি হেবদো হামলার পর নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া স্মরণ করছেন:
This is Beautiful. Remember the aims of a ‘Terrorist’ #LiberteEgaliteFraternite #Pray4Paris #PrayForBetterWorld pic.twitter.com/ZImXaf7zWz
— King Crow (@ChicoBangz_) November 14, 2015
এটা সুন্দর। সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যের কথা স্মরণ করুণ।
Se soigner. Comprendre. S'organiser. #LiberteEgaliteFraternite #MemePasPeur pic.twitter.com/NTxTyuakdq
— David Jourdan (@davidjourdan) November 14, 2015
“আমরা ভয় পাইনি”, কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, শোক কাটাতে হবে ও সংগঠিত হতে হবে।
আঘাত এবং বিষাদ সত্ত্বেও, অনেক প্যারিসবাসি সন্ত্রাসের রাত্রিতে দেখতে পাওয়া উদারতা ও স্বতঃস্ফূর্ত দয়া দেখানোর ব্যপারগুলোর গুণগান করেছে। উদাহরণস্বরূপ ট্যাক্সি ও উবার ড্রাইভাররা রাস্তায় আটকে পরা অসহায় পথচারীদের বিনা ভাড়ায় বাসায় পৌছিয়ে দিয়েছে।
আক্রমণের প্রকৃতি ও লক্ষ্যগুলো পরিষ্কার হয়ে ওঠার পরে প্যারিসবাসিরা #portesouvertes (খোলা দরজা) হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে যারা রাস্তায় যানজটে আটকা পরে ছিলেন তাদের সাহায্য করার চেষ্টায় টুইটার বার্তা পাঠাতে থাকেন।
আক্রমণের রাত্রিতে এই হ্যাশট্যাগটি বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। অনেকে আটকে পরা অধিবাসীদের অস্থায়ী আশ্রয় দিতে তাদের বাড়ির ঠিকানা জানিয়েছেন টুইটারের মাধ্যমেঃ
#porteouverte send me a message for a safe place in canal Saint Martin. Please be safe
— Florian Duretz (@duretzflo) November 13, 2015
আমাকে একটি ব্যক্তিগত বার্তা পাঠান সেন্ট মার্টিন খালের কাছে একটি নিরাপদ স্থানে জন্য। নিরাপদে থাকুন।
Still have 2 places if needed near metro #marcadet (L4 & L12) at 43 rue Ordener #PorteOuverte just answer this msg
— Julien Philippe (@JulienPhilippe_) November 14, 2015
প্রয়োজন হলে মেট্রো মারকাদেতের কাছাকাছি ৪৩ রু অরডেনার এ এখনও দুই জনের জন্যে জায়গা আছে। শুধু এই বার্তার উত্তরে টুইট করুন।
Ordinary French people opening their doors to those affected. #PorteOuverte is a sign that the French spirit is stronger than ever.
— The Ranting Rozzer (@RantingRozzer) November 14, 2015
সাধারণ ফরাসি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিয়েছেন। #PorteOuverte (খোলা দরজা) দেখাচ্ছে যে নিশ্চিতভাবেই ফরাসিদের মনোবল আগের চেয়ে শক্তিশালি।
un Hommage aux Parisien avec leur #PorteOuverte merci à Vous pic.twitter.com/pfsexQu93U
— papounay © (@papounay2000) November 14, 2015
পারিসবাসির এই ইচ্ছাশক্তি ও মনোবলের প্রতি শ্রদ্ধা। সবাইকে ধন্যবাদ।
অন্যান্য দেশে বা ফ্রান্সের বর্ডার সংলগ্ন শহরগুলোতেও একই চিত্র দেখা যায় যেখানে সীমানা বন্ধ হয়ে যাবার পরে নাগরিকরা আটকে পরলে জনগণ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
Any Parisians stuck in the UK, we have room at our home not too far from Heathrow airport #PorteOuverte
— Judi McIndoe (@jpm1108) November 14, 2015
যুক্তরাজ্যে আটকে পরা পারিসবাসিরা আমাদের বাড়ীতে এসে থাকতে পারেন। আমরা হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে খুব বেশী দূরে থাকই না।
জেরোম কের্ন একটি উৎসাহব্যঞ্জক চিন্তার কথা বলেছেন:
In times of adversity, the true character of a community shows through. To those offering #PorteOuverte, you make me proud to be a human.
— Jerome Kern (@jerrykern) November 14, 2015
সঙ্কটের সময় একটি জাতির প্রকৃত চরিত্র দেখা যায়। যারা #PorteOuverte (খোলা দরজা) আহবানে অবদান রেখেছেন, তারা মানুষ হিসেবে আমাকে গর্বিত করেছেন।