ছবিতে প্রাণীর বাচ্চাদের তুলে ধরা, বিশেষ করে বেড়াল ছানাদের, যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশী শেয়ার করা উপাদানের মধ্যে অন্যতম, এসব ছবি এত বেশী শেয়ার করা হয়েছে যে এখন তারা তাদের সুন্দর চোখ নিয়ে ঠিক আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে তাদের অপরিহার্য ভাগ্য নিয়ে। এদিকে আরেকটি ফেসবুক পাতা তাদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে যারা বেড়ালদের প্রতি আগ্রহী যদিও এতে তেমন কোন নতুনত্ব নেই।
কিন্তু সম্প্রতি ইতালিতে খানিকটা ভিন্ন কিছু ঘটেছে। জাতিগত বিদ্বেষ এবং অভিন্ন ইউরোপ বিরোধী রাজনৈতিক দল নর্দান লীগ-এর নেতা মাত্তেয় সালভিনাকে লক্ষ্য করে প্রোগেত্তো কিটেন নামের এক গ্রুপ একটি ভার্চুয়াল ফ্ল্যাশমবের সূচনা করেছে। তবে এক্ষেত্রে নাচের বদলে, প্রোগেত্তো কিচেন তার ২৬,০০০ সদস্যের সকলকে সালভিনার ফেসবুক পাতা বেড়াল এবং বেড়াল ছানার ছবি দিয়ে ভরিয়ে দিতে বলেছে।
এর সংগঠক বলছে যে তারা রাজনৈতিক কোন সংগঠন নয়, কিন্তু তার বদলে তারা আদরণীয় বেড়াল ছানার প্রতি ভালবাসার বার্তা সেই সমস্ত ব্যক্তির ফেসবুকে তুলে ধরতে চায়, যারা জীবনকে গুরুগম্ভীর দৃষ্টিতে দেখে।
৭ মে তারিখে বেড়াল ছানা নিয়ে এক ফ্লাশমব-এর আয়োজন করা হয়, কিন্তু এমনকি নির্ধারিত তারিখের পরেও অনেক রাজনীতিবিদের ফেসবুক পাতার মন্তব্য বিভাগে অনেক বেড়ালের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছে।

সালভিনির ফেসবুকের ওয়ালে পোষ্ট করা কিছু বেড়ালের ছবির এক স্ক্রিনশট
এই প্রচারণার যিনি জন্মদাতা তার ভাষায়, নামের কারণে কেবল একা সালভিনাকে বেছে নেওয়া হয়, গাত্তানি শব্দটি উচ্চারণ সাথে ছন্দ মিল রেখে। ইতালীয় ভাষায় এই শব্দের মানে হচ্ছে বেড়াল ছানা। সেই থেকে #গিত্তানিসুসালভিনি (সালভিনির প্রতি বেড়াল ছানা) নামক হ্যাশট্যাগ এবং নামের অধীনে এই প্রচারণা ছড়িয়ে পড়ে।
গাত্তেনিসুসালভিনি নামক হ্যাশট্যাগের উদ্দেশ্য অরাজনৈতিক হওয়া সত্ত্বে, এতে অংশগ্রহণকারী কিছু সমালোচক তাদের বেড়াল ছবির সাথে রাজনৈতিক সমালোচনা এবং আলঙ্কারিক ভাষা ব্যবহার করেছে।

“ওহে সালভিনি, আমি এক শংকর প্রজাতির বেড়াল “

” রোমানি (যাযাবর) বেড়াল, অবৈধ সঙ্গীতজ্ঞ “
সংগঠকেরা যতটা ভেবেছিল এই উদ্যোগ তার চেয়ে বেশী সফল হয়েছিল। এবং শীঘ্রই এটি ফেসবুক এবং টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রোগেত্তে কিটেন টুইটারে এই উদ্যোগের সফল হওয়ার বিষয়টির ঘোষণা প্রদান করেছে
Pagina #Facebook di #Salvini invasa da foto di gattini. E su #Twitter vola #gattinisusalvini http://t.co/LgpL8DPzRT pic.twitter.com/m1oRarN5II
— Agenzia ANSA (@Agenzia_Ansa) Mayo 7, 2015
বেড়াল ছানার ছবি দিয়ে সালভিনির ফেসবুকের পাতা ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে
oggi ore 15 #gattinisusalvini io e @Jacopo_llo abbiamo già la tastiera bollente [PH CC: CiccioGatti e Socialismo] pic.twitter.com/ulHgt5BjzT
— Fr4vl (@Fra_vl) Mayo 7, 2015
টুইটারে আজ বেলা দুপুর ৩ টার সময় # গাত্তানি সুসালভিনি ছড়িয়ে পড়েছে, @ জাকোপা_লো এবং আমি আমাদের কি বোর্ড প্রস্তুত রেখেছি। [PH CC: CiccioGatti e Socialismo]
#gattinisusalvini è forse una delle più brillanti opere d'arte del nuovo millennio.
— Francesco Quaranta (@fnc40) Mayo 7, 2015
নতুন এই সহস্রাব্দে গাত্তানিসুসালভিনি সম্ভবত সবচেয়ে সের শিল্পকলার কাজ
অনেকে এই উদ্যোগের সফলতায় একে স্বাগত জানিয়েছে, উইরিড-এর মতে যা একজন রাজনীতিবিদের ব্র্যান্ডের প্রতি সঠিক জবাব যে কম উপলব্ধি করতে পারে এবং স্লোগান দিয়ে সবকিছু ভরিয়ে দেয়। বেড়াল ছানার যে কমনীয়তা। রাজনীতিবিদদের প্রতি ঘৃণার প্রদর্শন তার বিপরীত এক বিষয়, পাশাপাশি বিদেশী এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রদান করা ঘৃণা সূচক বাক্যের বৈপরীত্য বিষয় হচ্ছে হাসি।
তবে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা এই প্রচেষ্টার ভক্ত নন। যেমন এর উদাহরণ হচ্ছে সমালোচকেরা উল্লেখ করছে বেড়ালের ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে নর্দান লীগের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের শক্ত কোন যুক্তি নেই।
ঘটনা হচ্ছে, এই বিষয়ে নর্দান লীগের এই নেতার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল বেড়ালের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় ব্যবহারকারীদের ব্লক করে দেওয়া, যাকে ফেসবুক পাতার এক “পুরোপুরি পরিষ্কার করার এক প্রচেষ্টা হিসেবে” দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে সে এক মিয়াও নামের এক পোষ্ট দিয়ে তার নিজস্ব ধরনের রসিকতা এর অনুমোদন প্রদান করেছে।

“আলফানো, মানব পাচারকারী থেকে উৎসাহব্যাঞ্জক দাস নিয়ন্ত্রণ। প্রজাতিকে ক্ষয়িষ্ণু করে ফেলা, মেয়াও।”
তার সমর্থকরা এক নতুন হ্যাশট্যাগ সৃষ্টি করেছে #গাত্তিনিআইকনসালভিনি (সালভিনার সাথে বেড়াল ছানারা) এই হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে সর্বত্র বিরাজমান বেড়ালের মাঝে উপস্থিত সালভিনির ছবি ছড়িয়ে দিচ্ছে)

বেড়ালছানার সাথে সালভিনি

ফেসবুকের এক পোস্টে এই ছবিটি তুলে ধরেছে, তাতে সমর্থকদের তাদের নিজেদের বেড়ালের ছবি পোষ্ট করার আহ্বান জানানো হয়েছে, এখানে লেখা আছে, আমার বেড়লা সালভিনিকে ভোট প্রদান করেছে।
একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক বেড়াল বুলডোজার চালাচ্ছে, যার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সালভিনির ইতালিতে যাযাবরদের শিবির গুড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে।

বুলডোজারে এক বেড়াল, সালভিনির জন্য বেড়াল ছানা
যদি এর উদ্দেশ্য হয় ইতালির রাজনীতিতে যে কলহ তার স্বর কে নরম করা করা, তাহলে সে ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ সফল হয়নি। অন্তত বেড়ালছানার ক্ষেত্রে এই কথা বলা যায়, এমনকি দুর্ভাগ্যক্রমে যখন তারা এক বুলডোজার চলায়, অথবা এক রাজনীতিবিদের মত পোষাক পরে থাকে, তখন তারা দেখতে দারুণ মিষ্টি।