গত সপ্তাহে রুশ সংসদে পাশ হওয়ার পর হয়ত রুশ ইন্টারনেটে “বিস্মৃতির অধিকার” নামক আইনের প্রয়োগ শুরু হয়ে যাবে, রুশ সংসদ দুমার আইন প্রণেতার ইঙ্গিত প্রদান করেছে যে এই আইনের শর্ত লঙ্ঘন করার ক্ষেত্রে যে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা হয়ত তারা নমনীয় করবে।
যে “বিস্মৃতির অধিকার” আইনের মনে চলতে না পারলে শাস্তি প্রদান করা হবে, দুমায় সেই আইন পর্যালোচনা বিষয়ক কমিটির প্রধান লিওনিদ লেভিন সংবাদ সংস্থা আরবিসিকে জানিয়েছেন যে আইনের বর্তমান ভাষ্যের পরিবর্তন প্রয়োজন। যে খসড়া আইন দুমায় জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে উল্লেখ রয়েছে আইনের এই ধারা অনুসারে আইন ভঙ্গকারীকে কর্তৃপক্ষ সরাসরি ৩০০,০০০ রুবেল (৫,০০০ মার্কিন ডলার) জরিমানা করতে পারবে। যদি কোন আদালত আবিষ্কার করে যে সে উক্ত সার্চ ইঞ্জিন ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলার আইনগত অধিকার অস্বীকার করেছে, তাহলে আদালতে আদেশে না মানার জন্য সে সার্চ ইঞ্জিনের জরিমানা সর্বোচ্চ ৩ মিলিয়ন রুবেল ( ৫৩.০০০ হাজার মার্কিন ডলার) পর্যন্ত হতে পারে।
লেভিন ব্যাখ্যা করেন, এই আইনে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে এবং সুনিশ্চিত ভাবে এর সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলে আইনে অনেকটা সরকারের জন্য পুরস্কার হিসেবে জরিমানা আরোপ করা হয়েছে, বিশেষ করে যদি কোন সার্চ ইঞ্জিন আদালতের নির্দেশ অনুসারে “বিস্মৃতির আইনের” ধারা অনুসারে চিহ্নিত লিঙ্ক মুছে ফেলার আদেশ না মানে। অন্য কথায়, ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো ব্যক্তির অনুরোধে লিঙ্ক মুছে না ফেলার ক্ষেত্রে তেমন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, যার কারণে স্বয়ংক্রিয় ভাবে তাদের প্রতি জরিমানা আরোপ করা হতে পারে।
মেইল.রু গ্রুপের এক প্রতিনিধি সংবাদ সংস্থা আরবিসিকে জানিয়েছে “বিস্মৃতির অধিকার”–এর আইনের ধারায় জরিমানার পরিমাণ সহনশীল পর্যায়ে রাখাকে; সঠিক এক পথে এগিয়ে যাওয়ার এক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে, যদিও সার্চ ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠানসমূহ এই আইনের মূল ধারার বিরোধীতা করে আসছে।
গত শুক্রবার, ৩ জুলাই তারিখে রুশ সংসদ দুমায় এই আইনটিকে চুড়ান্ত অনুমোদন জন্য উপস্থাপন করা হয়, যে আইনের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনকে তার নিজের সম্বন্ধে প্রদান করা সুনির্দিষ্ট তথ্যের লিঙ্ক মুছে ফেলতে বাধ্য করতে পারে। যদি সংসদের উচ্চকক্ষে এই আইন পাশ হয়, তাহলে সেটি স্বাক্ষরের জন্য রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পাঠানো হবে, আশা করা হচ্ছে যে এই আইনে তিনি স্বাক্ষর করবেন।
মে ২০১৪ তারিখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ন্যায়বিচার আদালত আবিষ্কার করে; যে কোন ব্যক্তি গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিনের কাছ তার নিজের সম্বন্ধে করা বিশেষ তথ্যের লিঙ্ক সরিয়ে ফেলার দাবী জানাতে পারে। এই সিদ্ধান্তের পর, গুগল একাই প্রায় ১০ লাখের বেশী ইউআরএল বা লিঙ্ক সরিয়ে ফেলার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখেছে (সে বছর গুগলের কাছে আসা এ রকম ২৭৯,০০০-এর বেশী অনুরোধ চিহ্নিত করা হয়েছে), এর মধ্যে থেকে ৪১.৩ শতাংশ লিঙ্ক সরিয়ে গুগল থেকে অপসারণ করা হয়।