সাম্প্রতিক সময়ে মূর্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে তুরস্ক দারুণ বাজে বাজে সব মূর্তি প্রদর্শন করছে।
তবে বিশ্বের বেশীরভাগ দেশে যেমনটা ঘটে, তুরস্কের বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যে সব মূর্তি রয়েছে সেগুলো দেশটির উক্ত বিশেষ এলাকার বিখ্যাত অথবা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির।
আমাসায়া হচ্ছে উত্তর তুরস্কের একটি শহর যা যুবরাজদের (শেহজাদ) শহর হিসেবে অতি পরিচিত, যে শহর এক অটোমান রাজকুমারের মূর্তি নির্মাণ করেছে, যা পরিপূর্ণরূপে যুক্তিপূর্ণ স্থাপত্য কাঠামোয় শহরটিকে অলঙ্কৃত করছে।
উত্তর আধুনিক মূর্তি নির্মাণের প্রচলিত ধারার এক ব্যতিক্রম হিসেবে আমাসায়ার পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের সাধারণ সব অটোমান যুবরাজ মূর্তির বদলে, নিজের সেলফি তুলেছে এমন এক যুবরাজের মূর্তি স্থাপন করে:
So people, it’s actually real: A statue unveiled in Amasya of 16th-century Ottoman Prince Mustafa… taking a selfie: pic.twitter.com/nsKthXiFTo
— Alex Christie-Miller (@AChristieMiller) May 10, 2015
কাজে নাগরিকেরা, আসল কথা হচ্ছে এটা সত্যিকারের এক মূর্তিঃ আমাসায়ার ১৬ শতকের অটোমান (ওসমান) সাম্রাজ্যের যুবরাজ মুস্তাফার এক মূর্তি উন্মোচন করা হয়েছে-যে সেলফি তুলছে।
যখন প্রচার মাধ্যম এই মূর্তিটি আবিষ্কার করে, সেই মূহূর্ত থেকে এই মূর্তির বিষয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া আসা শুরু করে। অনেকে নাগরিক মূর্তি রাখার এই স্থানকে “সেলফি কেন্দ্র (স্কোয়ার)” হিসেবে গ্রহণ করেছে-যারা এখানে এসে সেলফি তোলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা মূর্তির সাথে নিজেদের সেলফি তোলে-এদিকে অন্যরা দেশটির অন্যান্য স্থানের সেই সমস্ত মূর্তির তালিকা তৈরী করেছে যেগুলোর ইতিহাসের সাথে কোন সম্পর্ক নেই:
Amasya'da Selfie çeken şehzade, Ankara'da transformars, Bodrum süperman, Jedi Yoda'nın heykeli nerde lannn 😄😄 pic.twitter.com/j7J8okmv9X — MA (@mavigozluzencii) May 14, 2015
আমাসায়ার সেলফি তোলা অটোমান যুবরাজ, আঙ্কারার ট্রান্সফারমার মূর্তি, বোডরুম-এর সুপারম্যানের মূর্তি, জেডি ইয়োডার মূর্তি কোথায় স্থাপন করা হয়েছে?!? 😀 😀
Allah'ım şok geçiriyorum o telefon niye Samsung? Şehzade Mustafa nasıl bi i-phone alamaz? pic.twitter.com/dU0sOhGgzz
— Dr. Freud'un Gelini (@yemeklibivagon) May 9, 2015
ওহ ঈশ্বর। আমি বিস্মিত, কেন তার হাতে স্যামসং-এর মোবাইল ফোন। কেন যুবরাজ মুস্তাফার আইফোন ব্যবহারের সামর্থ্য নেই?
কিন্তু যখন যুবরাজের সেলফি উন্মাদনায় আসা টুইট সকল উপভোগ করার কথা, ঠিক তখন যুবরাজকে যে যে কারণে পছন্দ করা হত, তা দুটি নিষ্ঠুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ঃ ১০ এবং ১১ মে তারিখের পরপর দুটি ঘটনায় মূর্তির ফোন এবং তলোয়ার ভেঙ্গে যায়।
এমন তথ্য রয়েছে যে দৃশ্যত মূর্তির বিরুদ্ধে ঘটা হামলা রাজনৈতিক প্ররোচনায় সংঘঠিত অপরাধ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী, তা সত্ত্বেও ধৃত সন্দেহভাজন অপরাধীরা ব্যাখ্যা দিয়েছে যে কাজটি করার পেছনে তাদের কোন রাজনৈতিক প্ররোচনা ছিল না এবং তারা এই উপাদানগুলো ছোঁয়ামাত্রই সেগুলো ভেঙ্গে পড়ে।
তাদের এই জবানবন্দী শোনার পর স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা সন্দেহভাজন দুজন অপরাধীর উভয়কে ছেড়ে দেয়। এখন মূর্তিটি পুলিশ উক্ত এলাকা থেকে সরিয়ে তাদের নিজেদের হেফাজতে রেখে দিয়েছে।
selfie çeken şehzade heykelinin elindeki telefonu kırmışlar. Şehzade yeni telefon için 2 sene beklesin 5G'ye geçicez pic.twitter.com/ISkXNmboaz
— Levent (@fevri_sosyolog) May 10, 2015
সেলফি তোলা অটোমান যুবরাজের মূর্তির ফোন নাগরিকেরা ভেঙ্গে ফেলেছে। তাকে নতুন একটা ফোন কেনার জন্য আরো দুবছর অপেক্ষা করতে হবে, আর এদিকে আমরা এই সময়ের মধ্যে লাফ দিয়ে ৫জি নামক প্রযুক্তিতে চলে যাব।
আমাসায় পৌরসভা পরে ব্যাখ্যা প্রদান করে যে এই মূর্তি কোন বিশেষ যুবরাজের প্রতিনিধিত্ব করে না। যদিও দেখতে এটি মুস্তাফার প্রতিচ্ছবি, তবে মূর্তি স্থাপনের লক্ষ্য ছিল ঐতিহাসিক কোন বিবৃতি প্রদান নয়, বরঞ্চ নান্দনিকতার প্রদর্শন। তবে পৌরসভা প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে যে তারা মূর্তির ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পুনরায় মেরামত করে ফেলবে।