কাতারের বিরুদ্ধে ১-০ গোলে জয়লাভের মাধ্যমে ইরান এশিয়া কাপ ২০১৫-এর কোয়াটার ফাইনালে পৌঁছে গেছে, যে দেশটি এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়ের অন্যতম এক দাবিদার।
“টিম মিলী” নামে পরিচিত ইরান দল ( ফারসী ভাষায় মিলী মানে “জাতীয়”) সুন্দর খেলা উপহার দেয়নি বটে, কিন্তু জালে বল পাঠানোর ক্ষেত্রে তারা এক কার্যকরী ফুটবল খেলেছে। তবে খেলায় ইরান বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল এবং তারা কাতারের বিরুদ্ধে মাত্র ১ গোলে জিতলেও, প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগালে গোলের ব্যবধান আরো বেশী হতে পারত। এই খেলাটি সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এশীয় কাপ ২০১৫-এর আরো কয়েকটি খেলা এখানে অনুষ্ঠিত হবে।
কার্লোস কুইরোজের এই জাতীয় দল, এশিয়া কাপ ২০১৫-এর যাত্রা শুরু করে বাহরাইনকে ২-০ গোলে হারিয়ে, যার মাধ্যমে তারা প্রথম তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করে। গ্রুপ সি-তে ইরানের প্রতিপক্ষ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং কাতার।
জাতিতে পর্তুগীজ কুইরোজ, দীর্ঘদিন নিজ দেশের জাতীয় ফুটবল দল সহ উল্লেখযোগ্য কিছু ক্লাবের কোচের দায়িত্ব পালন করেন,যার মধ্যে রয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদের মত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ক্লাবের নাম। পর্তুগীজ প্রচার মাধ্যম যাকে প্রায়শ অধ্যাপক হিসেবে অভিহিত করে থাকে সেই কুইরোজ, ইরান ফুটবল ফেডারেশনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ইরান জাতীয় দলকে গত ব্রাজিল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে নিয়ে যায়, যেখানে তার দলকে আর্জেন্টিনার মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয় এবং তারা নক আউট পর্বে উঠতে ব্যর্থ হয়।
এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত (এএফসি) এশিয়া কাপ হচ্ছে ১৬ জাতির এক ফুটবল প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী দল সরাসরি ফিফা কনফেডারেশন কাপে খেলার সুযোগ পাবে।
সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় ৮৫ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারে, যেখানে এই খেলা দেখার জন্য ২২৫০০ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিল এবং এর বেশীর ভাগ ছিল ইরানের সমর্থক, আর তাদের মধ্যে নারীরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল–যে ইরানে খেলার মাঠে নারীদের উপস্থিতির উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নারীরা লড়াই করছে:
#AsianCup2015 Sad that those fans who are powering #TeamMelli in Aust are banned from doing so in Iran. @RitaPanahi @JoshFrydenberg
— Vince (@gullibles) January 16, 2015
বেদনাদায়ক বিষয় হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় যে সমস্ত সমর্থক ইরান জাতীয় দলকে শক্তি যোগাচ্ছে, ইরানে এই কাজ করার ক্ষেত্রে তাদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
জোসেফিন কেনিপ স্টেডিয়ামে ইরানিদের জোরালো উপস্থিতির কথা উল্লেখ করছে:
We are in the centre of Iran tonight and it's fabulous! #AsianCup2015 #AC2015 #QATvIRN #straya @ ANZ… http://t.co/UUmHRRaPD9
— Josephine Kneipp (@kneipping) January 15, 2015
মনে হচ্ছে আমরা ইরানের মাঝখানে বসে আছি, আর এটা অসাধারণ।
অস্ট্রেলিয়ার ফটোগ্রাফার কেইথ ম্যাকইননেস ইরানের সমর্থকদের একটি ছবি টুইট করেছে, যারা তাদের ফুটবলের নায়কদের খেলা সরাসরি দেখার জন্য স্টেডিয়ামে এসেছে:
Iran fans @ANZStadium warming up @Iran_Football @afcasiancup @sydney_sider @theturfau @TweetWhiteLine #AsianCup2015 pic.twitter.com/UoAf9J0TAX
— Keith McInnes (@KeithMcInnes) January 15, 2015
অস্ট্রেলিয়া স্টেডিয়ামে ইরান ফুটবল দলের ভক্তরা এসে আওয়াজ তোলার জন্য শরীর গরম করছে।
টুইটার ব্যবহারকারীরা বলছে, ইরানের ভক্তরা ছিল প্রাণোচ্ছল একটি দল। ;
Crowd is electric at stadium Australia #Asiancup2015 @afcasiancup #qtrvsirn
— Daniel Wilson (@spudknot) January 15, 2015
অস্ট্রেলিয়া স্টেডিয়ামের দর্শকরা ছিল দারুণ উত্তেজনায়।
It sounds like there is 50k Iranians at anz,what an atmosphere!!#IRNvQTR #goiran #AsianCup2015
— Michael Sgourdas (@mjsgourdas) January 15, 2015
গর্জন শুনে মনে হচ্ছিল এএনজেড স্টেডিয়ামে ৫০ হাজার দর্শকের আগমন ঘটেছে। দারুণ এক পরিবেশ।
গ্রীষ্মের এক রাত কেবল এই খেলায় উষ্ণতা যুগিয়েছে, ইতোমধ্যে দারুণ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। চূড়ান্ত ফলাফল “টিম মিলী” একমাত্র গোলের ব্যবধানে কাতারকে পরাজিত করেছে। খেলার এই একটি মাত্র গোলে এশিয়া কাপের কোয়াটার ফাইনালে সরদার আজমোনরা নামে পরিচিত ইরান ফুটবল দল জায়গা করে নিয়েছে। গ্রুপ সিতে ইরান ছয় পয়েন্ট অর্জন করে গোল গড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পেছনে থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, আমিরাতের পয়েন্টও ছয়।
Poor defending but wonderful turn & finish by Sardar Azmoun for #Iran v #Qatar https://t.co/5vdqsTbb7Y #TeamMelli #AsianCup2015
— Eoghan mac Suibhne (@buileshuibhne) January 15, 2015
রক্ষণে দুর্বলতা ছিল, কিন্তু সরদার আজমোনাররা পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে এবং গোল করেছে।
২০০৭ সালে এশীয় ফুটবল ফেডারেশনে যোগ দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় এই বছর প্রথম এশিয়া কাপের আয়োজক হয়েছে। জাপান, ইরান, এবং দক্ষিণ কোরিয়া সহ অস্ট্রেলিয়া এবারের এশিয়া কাপ শিরোপার অন্যতম দাবিদার।
২০১৫ এশিয়া কাপ, ফিলিস্তিন জাতীয় দলের অংশ গ্রহণের কারণে স্মরণীয় হয়ে রইলো। এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ জয়ের মাধ্যমে ফিলিস্তিন এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। তারা ডি গ্রুপে পড়েছে, যে গ্রুপের অন্যদল গুলো হচ্ছে জাপান, জর্দান এবং ইরাক।