ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ইন্টারনেট ডট অর্গের প্রচারনার অংশ হিসেবে এবং ইন্টারনেট সুবিধার ব্যপ্তি বাড়াতে ইন্দোনেশিয়ায় গিয়েছিলেন।
বৌদ্ধদের মন্দির বড়বুদুরে গিয়ে জাকারবার্গ তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন:
আমি মাত্র ইন্দোনেশিয়ায় এসেছি এবং সূর্যদয় দেখার জন্য বড়বুদুরে উঠেছি। আগামীকাল ইন্টারনেট ডট অর্গের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ডেভেলপার, অপারেটর সহযোগী এবং সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ববৃন্দের সঙ্গে জাকার্তায় আলোচনা করবো।
তার এমন আলোচিত স্ট্যাটাস দেয়ার পর অনেকেই বুঝতে পারেননি তিনি কে:
Mark Zuckerberg Nikmati Sunrise di Borobudur Tanpa Layanan VIP http://t.co/EwfpM77ekE — YOGYA ISTIMEWA (@YogyaIstimewa) October 13, 2014
মার্ক জাকারবার্গ বড়বুদুরে গিয়ে সূর্যদয় উপভোগ করলেন কোন ধরনের ভিআইপি নিরাপত্তা কিংবা সুবিধা ছাড়াই।
Ha ha ha they didn't know who is Mark Zuckerberg so they asked him to take photo pic.twitter.com/re1C9cBbLc — Christien (@mchristien) October 13, 2014
জাকারবার্গ দেখা করেছেন প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে:
Ir H Joko Widodo Hari ini saya gembira karena mendapat kesempatan ‘blusukan’ bersama Founder/CEO Mark Zuckerberg ke Pasar Blok A Tanah Abang Jakarta Pusat.
আমি খুবই খুশি যে জাকার্তার তানাহ আবাং এলাকায় ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা/সিইও মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি।
জাকারবার্গ শুনে খুশি হয়েছে যে জোকা ভোটারদের সঙ্গে যুক্ত হতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন।
সকালে আমি প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে দেখা করেছি এবং আমরা আলোচনা করেছি ইন্দোনিশয়ার সবাইকে ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় যুক্ত করার সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে।
ইন্টারনেট প্রসারের দারুন সুযোগ রয়েছে এখানে এবং যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ফেসবুকে প্রচারনা চালিয়েছেন এবং ইন্টারনেটের সহায়তায় সরাসরি ২৫০ মিলিয়ন ইন্দোনেশিয়ান জনগনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন, তখন তিনি এটি বুঝতে পেরেছেন।
এর পাশাপাশি তিনি জোকোর আধুনিক নেতৃত্বের বিষয় “ব্লুসুকান” নিয়ে বলেছেন:
“ব্লুসুকান” নামের তার একটি উদ্যোগ ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের মিটিংয়ের পর আমি তানাহ আবাং মার্কেটে তিনিসহ হেঁটে গিয়েছি। এটা সাধারণ মানুষদের সঙ্গে সরাসরি দ্রুত যুক্ত হওয়ার দারুন এক সযোগ। তিনি সম্প্রতি অনলাইনে “ই-ব্লুসুকান” সুবিধা চালু করেছেন যাতে করে সকল ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ মানুষ তার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারে।
তারপর তিনি যুক্ত করেন ইন্দোনেশিয়ায় ইন্টারনেট কিভাবে জীবনযাপন উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে:
আমরা সুযোগ হয়েছিল অনেক সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার এবং তারা কিভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেটা জানার। অনেকেই ইতিমধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেছেন, নিজের কমিউনিটির উন্নয়নে কাজ করেছেন এবং সারাবিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আমরা যদি ইন্দোনেশিয়ার সকলকে ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনতে পারি সেটি তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দারুন হবে।
— তানহা আবাং থেকে
অনেকেই আশা করছেন জাকারবার্গে এ ইন্দোনেশিয়া সফরের ফলে ইন্দোনেশিয়ার সরকার আগ্রহী হবে দেশে ইন্টারনেট সুবিধা ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে এবং ইন্টারনেট স্বাধীনতার বিষয়ে গুরুত্ব দেবে।
তারা খুবই আশাবাদী জোকোর নেতৃত্বে সরকার ইন্টারনেট ব্যবহারে নীতিমালা প্রনয়ন এবং ইন্টারনেট স্বাধীনতা হস্তক্ষেপে আগ্রহী হবে এমন কোন উদ্যোগ নেবে না। তবে ইতিমধ্যে কিছু ভালো উদ্যোগও রয়েছে। দ্য মিনিস্ট্রি অব কমিউনিকেশন অ্যান্ট ইনফরমেটিক্স ইতিমধ্যে ট্রাস্ট+ নামের একটি উদ্যোগ নিয়েছে যার সাহায্যে সার্ভিস প্রোভাইডাররা ডিএনএস ফিল্টার পদ্ধতির সাহায্যে পর্নোগ্রাফি কন্টেন্ট লোকাল নেটওয়ার্কে যাতে না যেতে পারে সেটি নিয়ন্ত্রন করতে পারে। তবে কারিগরি এবং এডহক টেস্টিং ইউনিট থেকে বলা হয়েছে, এ ফিল্টার ব্যবস্থা অনেক পর্নোগ্রাফি নয় এমন কন্টেন্টও আটকে দিচ্ছে। যেমন, এ তালিকায় রয়েছে সেক্স সংক্রান্ত শিক্ষা কার্যক্রম এবং এলজিবিটি কমিউনিটির ওয়েবাসইট। এছাড়া বর্তমান সরকার বিনামূল্যে ভিডিও শেয়ার করার সাইট ভিমো বন্ধ করে দিয়েছে পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত ভিডিও আপলোডের অভিযোগে, যদিও এ সাইটের নীতিমালা মেনেই ভিডিও আপলোড করতে হয়।
এ প্রকল্পটি চালু করেছিলেন সাবেক মন্ত্রী তিপাতুল সেমবিরিং, যিনি ইসলামি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল প্রসপেরার জাস্টিস পার্টির সদস্য। এ দলটি মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের অনুপ্রেরণায় চালু হয়।
সবমিলিয়ে ইন্দোনেশিয়ার ২৮ শতাংশ মানুষ বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এর মধ্যে বড় একটি অংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্মার্টফোনের মাধ্যমে। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যা ৬৯ মিলিয়ন এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। ইন্টারনেট প্রসার এবং সংযোগের ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়ার ২০১৫ সালের মধ্যে ৫০ ভাগ ইন্টারনেট জ্ঞান নিয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।