দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশে ডেঙ্গুর টীকা পরীক্ষা করা হয়েছে, যার ফলাফল বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। এর ফলে এই অঞ্চলের সরকার ও গবেষকরা আশা করছেন, আগামী বছরের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গুর টীকা পাওয়া যেতে পারে বলে ঘোষণা আসতে পারে।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং ফিলিপাইনের ১০,২৭৫ টি (২ থেকে ১৪ বছর বয়সী) শিশুর উপর এই টীকার পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় টীকাটির সামগ্রিক কার্যক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন ডোজ দেওয়ার পরে টীকাটি একটি শিশুর উন্নয়নশীল ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের সম্ভাবনা ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলে। এছাড়াও ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে ৬৭ শতাংশ।
First ever dengue vaccine to show efficacy against dengue fever & haemorrhagic fever http://t.co/TamyHaR4aopic.twitter.com/zBfXG2bxIi
— VacciNewsNet (@VacciNewsNet) July 16, 2014
ডেঙ্গু জ্বর ও জ্বরের বিরুদ্ধে কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করতে প্রথম ডেঙ্গুর টীকা।
Dengue vaccine is just a year away, researchers say. http://t.co/qcgO8XThDT [http://t.co/bjpk80p3vL, 23 July 2014] pic.twitter.com/elWk7qGz9o
— University Of Malaya (@unimalaya) July 24, 2014
গবেষকরা বলছেন, ডেঙ্গু টীকা এখন শুধু একটি বছর দূরে।
ডেঙ্গু হচ্ছে এডিস মশা বাহিত একটি ক্রান্তীয় ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত এর সুপরিচিত কোন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশের ডেঙ্গুর ঝুঁকি রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষের ডেঙ্গু সংক্রমণের রিপোর্ট পাওয়া যায়; এর প্রায় ৭৫ শতাংশই দেখা যায় এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
First dengue vaccine out by July next year http://t.co/07iPGWtIx5 | Charles Buban #health#sciencepic.twitter.com/FlSRuxvo9H
— Inquirer Group (@inquirerdotnet) July 19, 2014
আগামী বছরের জুলাই মাসে প্রথম ডেঙ্গু টিকা পাওয়া যাবে।
Unprecedented spike of #dengue cases in Malaysia and 1 death due to dengue in #Singapore. Dengue is a war everyone must fight!
— Dengue.Info Asia (@DengueInfoAsia) July 31, 2014
মালয়েশিয়ায় #ডেঙ্গু রোগের নজিরবিহীন প্রাদুর্ভাব ঘটেছে এবং #সিঙ্গাপুরে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু হচ্ছে একটি যুদ্ধ, যার বিরুদ্ধে সবাইকে লড়তে হবে!
এই অঞ্চলের দ্রুত নগরায়নকে এর কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন। মালয়েশিয়া থেকে ভাইরাসবিদ দাতুক ডঃ লাম সাই কিট ডেঙ্গুকে একটি শহুরে রোগ বলা বর্ণনা করেছেনঃ
যদি একটি শহুরে এলাকায় থাকার জন্য অনেক মানুষ আসে, তাহলে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণে সমর্থ অনেক বেশি মানুষ আপনি খুঁজে পাবেন। এটির সংস্পর্শে এলেই তাদের অনেকেই ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
গত সপ্তাহে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড সরকার একটি সফল টিকা পরীক্ষার কথা ঘোষণা দেয়, যা চার প্রজাতির ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে সক্ষম। এটি এই রোগের একটি উপসর্গ। মজার বিষয় হচ্ছে, খবর বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশই ডেঙ্গুর টীকা গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছে।
পাঁচটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ওষুধ কোম্পানি সানোফি পাসচার গত দুই দশক ধরে এশিয়ান ডেঙ্গু টিকা পরীক্ষার গবেষণা কাজ চালিয়ে আসছে। তাদের সর্বশেষ সমীক্ষার সংবাদে ডেঙ্গুর টীকা পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ের ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু একই গবেষণায় টীকাটির সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ রয়েছে। লেখক ডেমিয়েন গার্ডে এটি উল্লেখ করেছেন:
টীকাটির ব্যাপক কার্যক্ষমতা সত্ত্বেও, তথ্যের দিকে নিবিষ্ট দৃষ্টি আরো সূক্ষ্ণ ছবি দেখিয়ে দিবে। ডেঙ্গু মূলত চারটি প্রজাতি থেকে আসে এবং সানোফির চিকিত্সা ধরন ১,৩ ও ৪ নং এর বিরুদ্ধে ভাল। কিন্ত ২ নং সেরোটাইপের ক্ষেত্রে এর কার্যক্ষমতা মাত্র ৩৪.৭%। এই পরিসংখ্যানে এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ রোগের চিকিৎসা তাত্পর্য অনুপস্থিত।
আগামী বছর এশিয়ান ডেঙ্গু রোগের টীকা পাওয়া গেলে, ২০২০ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু নির্মূলের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরণের পদক্ষেপ ফেলা সম্ভব হবে।