ব্রাজিল, না আর্জেন্টিনা? বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ছড়িয়েছে ফুটবল জ্বরের উত্তাপ। দেয়ালে শোভা পাচ্ছে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলোর নানা রং ও বর্ণের পতাকা। যাত্রাবাড়ি, ঢাকা। ছবি তুলেছে সৌরভ লস্কর। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (৮/৬/২০১৪)

বাংলাদেশে ছড়িয়েছে ফুটবল জ্বরের উত্তাপ। দেয়ালে শোভা পাচ্ছে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলোর নানা রং ও বর্ণের পতাকা। যাত্রাবাড়ি, ঢাকা। ছবি তুলেছে সৌরভ লস্কর। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (৮/৬/২০১৪)

বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের সারিতে। তবে ফুটবল নিয়ে উত্তেজনার কমতি নেই মোটেও। বিশ্বকাপ ফুটবল এলে এই মাতামাতি আরো চরমে উঠে। দিন-রাত একাকার হয়ে যায় খেলা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায়, তর্কে-বিতর্কে।

বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে মাতামাতির ক্ষেত্রে প্রথমেই যে দুটি দেশের নাম মাথায় আসে তা হলো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এই দুই দেশের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ক্ষোভ, টানাপড়েন যেন প্রতি চার বছর পর আমাদের দেশেও চলে আসে।ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দ্বৈরথ নিয়ে আহমদ মুসা সামহোয়্যারইনে লিখেছেন :

১২ জুন সাও পাউলোতে শুরু হচ্ছে ফুটবল যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বাংলাদেশের আপমর জনতা মূলত ভাগ হয়ে যাবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা শিবিরে। ঘরে ঘরে চলবে এই সমর্থন যুদ্ধ।এলাকা মহল্লায় কার আগে কে কত বড় পতাকা উত্তোলন করতে পারে, কাদের সমর্থক বেশি তা নিয়ে চায়ের টেবিলে ঝড় উঠেছে।

পতাকা বিক্রি করে কিছু কাঁচা পয়সার মুখ দেখছে দর্জীরা। ছবি মো: মানিকের। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (৫/৬/২০১৪)

বিভিন্ন বিশ্বকাপ খেলুড়ে দেশের জার্সি বিক্রি করে কিছু কাঁচা পয়সার মুখ দেখছে দর্জীরা। ছবি মো: মানিকের। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (৫/৬/২০১৪)

অনেকেই প্রিয় দলের জার্সি কিনছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ফুটবল জ্বরের উত্তাপ পাওয়া যাচ্ছে। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা এই দুই দলের সমর্থকদের তর্কযুক্ত কোথায় গিয়ে পৌছায় তার ইঙ্গিত দিয়েছেন মেরিনা চৌধুরী (@M_e_R_i_n_a):

ঢাকায় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা তৈরি হচ্ছে বিক্রির জন্যে। ছবি রোহিত রাজিবের। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (২১/৫/২০১৪)

ঢাকায় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা তৈরি হচ্ছে বিক্রির জন্যে। ছবি রোহিত রাজিবের। সর্বস্বত্ত্ব ডেমোটিক্স (২১/৫/২০১৪)

বিশ্বকাপের সময় বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রিও বেড়ে যায়। বাসা-বাড়ির ছাদে উড়তে থাকে প্রিয় দলের পতাকা। পতাকা উড়ানোর উত্সব দেখেই ব্লগার সবাক পাখি টুইট করেছেন:

বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার পতাকা উড়ানোর উপর করারোপ করলে সরকার কিছু টেকাটুকা কামাইতে পারতো।

পতাকা বিক্রির পরিমাণ দেখে আশিকুর রহমান রিন মন্তব্য করেছেন:

Neymar and Messi should get their “revenue share” from the flag sales in Bangladesh during World Cup: they would go Mad if they know the sales number here

নেইমার, মেসিরা বিশ্বকাপের সময়ে বাংলাদেশে পতাকা বিক্রির টাকার শেয়ার চাইতে পারে। পতাকা বিক্রির পরিমাণ জানলে তারা পাগল হয়ে যেত!

রাস্তাঘাটে, বাসা-বাড়ির ছাদে পতাকা দেখে নীলুফার শারমিন জেসি (@NilufarSharmin) লিখেছেন :

বাংলাদেশে বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি। লোকজন বাসাবাড়ির ছাদে, গাড়িতে পতাকা উড়াচ্ছে। #প্রিয় খেলা ফুটবল

বিশ্বকাপে না থাকলেও বাংলাদেশের বানানো জার্সি পরে খেলবে ব্রাজিল-সহ ৭টি দেশ। সেটা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জুবায়ের আজিজ (@ZubayerAziz) টুইট করেছেন:

ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জার্সি বাংলাদেশে বানানো। জার্সিতে #মেডইনবাংলাদেশ ট্যাগ দেখে আমি গর্বে আমার বুক ভরে গেছে।

তবে বিদেশী পতাকাগুলোর ভিড়ে বাংলাদেশের পতাকা কোথায় সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক, ব্লগার রাগিব হাসান:

কিন্তু আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের এই পতাকার ভীড়ে আমার এই সোনার বাংলার পতাকাটা কোথায়?
বাংলাদেশের পতাকা আইন অনুসারে বিদেশী পতাকা কেবল তখনি ওড়ানো চলে, যখন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয় এবং সব চাইতে উঁচুতে সগৌরবে। খেলা নিয়ে আনন্দ, উল্লাস এসব আমাদের জীবনের, আমাদের বেঁচে থাকারই অংশ। কিন্তু খেলার উন্মাদনায় বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকার মর্যাদাটা ভুললে চলবেনা, কারণ লাখো শহীদের অর্জিত এই পতাকাটা কোনো ব্রাজিলীয় বা আর্জেন্টিনীয়র রক্তে না, বরং এই বাংলার মানুষের রক্তে, আত্মত্যাগেই এসেছে। কাজে ওড়ান পছন্দের দলের পতাকা, মনের আনন্দে, কিন্তু একই সাথে বাংলাদেশের পতাকাও উড়ুক, আর উঁচুতে, আমাদের গর্বে, আনন্দ বেদনার চিরসঙ্গী হিসাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .