ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো এখন ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। তবে প্রচারাভিযান র্যালিগুলোতে শিশুদের এনে তাঁরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছে মর্মে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই প্রচারাভিযানগুলো শুরু হয়েছে ১৬ মার্চ এবং শেষ হবে আগামী ৫ এপ্রিল।
ইন্দোনেশিয়ায় দ্যাংদুত শিল্পী এবং পেশাদার আনন্দদানকারীদেরকে ব্যবহার করে প্রচারাভিযান চালানোর ধরনটি বেশ জনপ্রিয় হলেও বিতর্কিত। দ্যাংদুত হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার লোকসংগীতের একটি ধরণ। এতে হিন্দুস্তানি, মালয় এবং আরবি কন্ঠ্য এবং বাদ্যযন্ত্রের একটি মিশ্রণকে ভিন্ন মাত্রায় উপস্থাপন করা হয়। আজকাল কোমর চক্রাকারে দুলিয়ে দুলিয়ে এবং যৌন উত্তেজক কোমড় দোলানো নাচ সহকারে দ্যাংদুতের আধুনিক সংস্করণটি উপস্থাপন করা হয়। রাজনৈতিক খ্যাতি প্রত্যাশীরা প্রায়ই দ্যাংদুত শোভিত “মজার” মঞ্চে আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ করে তাদের সমর্থকদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করে থাকেন।
অনেক নেটিজেন প্রচারাভিযান র্যালি চলা সময়ের দ্যাংদুত পরিবেশনার বিভিন্ন ছবি পোস্ট করেছেন। তারা ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, শিশুদের এসব নির্বাচনী কর্মকান্ড দেখা উচিৎ নয়ঃ
[KONTROVERSI] “Kampanye Pornoaksi di Depan Anak-Anak” -> http://t.co/3uq4fP5WPp | pic.twitter.com/owv4TkTKRV
— Putihkan Indonesia ! (@pks_kreatif) March 21, 2014
শিশুদের সামনে পর্নোগ্রাফিক প্রচারাভিযান।
Salah satu alesan kenapa anak kecil gak boleh ikut kampanye, tapi kan gak gini juga. pic.twitter.com/ZPKNpOAgon
— ikoo (@ikochans) March 21, 2014
এই প্রচারাভিযানগুলো এভাবে হওয়াই উচিৎ নয়। আর সে কারণেই শিশুদের এসব প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করা উচিৎ নয়।
সমগ্র দেশজুড়ে আইনসভার সাধারণ নির্বাচন কমিটি প্রবিধান (পিকেপিও) নং ১৫ (কে) ২০১৩ [মনো] অনুযায়ী, প্রচারাভিযান সমাবেশে অপ্রাপ্তবয়স্কদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সকল রাজনৈতিক দল সাম্প্রতিক সময়ে তাদের প্রচারাভিযান কর্মকান্ডগুলোতে শিশুদের ব্যবহার করছে। শিশু সুরক্ষা কমিশনের (কেপিএআই) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সবগুলো প্রচারাভিযান কর্মকান্ডেই শিশুদের অংশগ্রহণের খবর পাওয়া গেছে।
এই খবরের প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো দাবি করেছে যে ইতোমধ্যে তারা তাদের সমর্থকদের প্রচারাভিযান র্যালিগুলোতে তাদের বাচ্চাদের না নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু এখনও অনেকে এই সাধারণ নির্দেশটি মানতে পারছেন না। গোলকার পার্টির প্রচার সম্পাদক আবুরিজাল বাকরি বলেছেন, গোলকার পার্টির বেশিরভাগ সমর্থক তাদের বাচ্চাদের বাড়িতে রেখে আসতে পারছেন না। কারণ, তাদের বাড়িতে বাচ্চাদের দেখাশুনা করার মতো কোন লোক বা গৃহকর্মী নেই।
আবার, জাস্টিস এন্ড প্রোস্পারিটি পার্টি (পিকেএস) জোর দিয়ে বলেছে, শিশুদের প্রচারাভিযান র্যালিগুলোতে নিয়ে আসাটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাল্য শিক্ষা প্রদানের একটি অংশ। কয়েকটি শহরে পিকেএস তাদের প্রচারাভিযান স্থলগুলোতে শিশুদের জন্য দিবা পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
Nih sebagian adik-adik yg bermain di tempat penitipan anak kampanye @pkssumut 🙂 #AyoPutihkanMedan pic.twitter.com/hOCTQjdTO0
— PKS (@PKSejahtera) March 26, 2014
এখানে একটি প্রচারাভিযান স্থলের দিবা পরিচর্যা কেন্দ্রে কয়েকটি শিশু খেলাধুলা করছে।
ক্ষমতাসীন দল ড্যামোক্রেট এবং বিরোধী দল পিডিআইপি’কে যখন প্রচারাভিযান র্যালিতে শিশুদের উপস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন উভয়ই এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে যে নির্বাচন সম্পর্কিত কর্মকান্ডে শিশুদের অংশগ্রহণ কোন সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হওয়া উচিৎ নয়।
এদিকে, শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সেতো মুলিওনো বলেছেন, যে সব পিতামাতা প্রচারাভিযান মৌসুমে তাদের বাচ্চাদের বাড়িতে একা রেখে যেতে পারেন না, সে সব পিতামাতার কোন র্যালিতে একেবারেই যাওয়া উচিৎ নয়।
এসব প্রচারাভিযান সভাতে অংশ নিলে বিনামূল্যে অনেক ধরনের জিনিসপত্র এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রী পাওয়া যায়। দূর্ভাগ্যবশত, এসব কারনে সাধারণ কর্মী সমর্থকদের পক্ষে এগুলো এড়িয়ে যাওয়া অতোটা সহজ নয়।
kamvreeet nih emang… :))) RT @kompascom: Ikut Kampanye , Anak-anak Bolos Sekolah http://t.co/OQq6WFB7Lg” pic.twitter.com/PP6NQ6Ip7C
— Rama Sugeng
(@ramasugeng) March 21, 2014
বেশ মজার কৌতুক! আরটি @কমপাসকমঃ প্রচারাভিযানগুলোতে অংশ নিতে গিয়ে শিশুরা স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে।
Kampanye akan lebih bermartabat tanpa membuat rakyat berebut tebaran uang dari panggung. — ADDIE MS (@addiems) March 27, 2014
যদি মঞ্চ থেকে টাকা ছুড়ে দিয়ে লোকেদের মাঝে টাকা নেওয়ার জন্য মারামারি না বাঁধানো হতো, তবে প্রচারাভিযানগুলো আরও বেশি মর্যাদাপূর্ণ হয়ে উঠতো।
KPAI Kecam Pemberian Uang “Kampanye” terhadap Anak-anak http://t.co/fjWqbpIFmC — Republika Online (@republikaonline) March 24, 2014
প্রচারাভিযানের সময়ে শিশুদের হাতে নগদ অর্থ প্রদানের ঘোর নিন্দা জানিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন কেপিএআই।
Anak di kampanye story : Emak tau nak.. tapi emak udah dijatah nasi bungkus dan uang saku http://t.co/YRUxZXfLgS
— (@budysantoso_40) March 28, 2014
“একটি প্রচারাভিযানে একটি শিশু” মেমে:- শিশুঃ মা, আমি শুধু স্পঞ্জি বব কার্টুন দেখতে চাই।
-মাঃ আমি জানি, সোনা। কিন্তু তারা আমাদের বিনামূল্যে দুপুরের খাবার এবং সাথে হাত খরচ বাবদ কিছু টাকা দিবে।
সুহার্তো ৩১ বছর ইন্দোনেশিয়া শাসন করেছেন। তাঁর পতনের এক বছর পর ১৯৯৯ সালে ইন্দোনেশিয়াতে প্রথম পূর্ণ গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
@পিকেএস_ক্রিয়াটিফ থেকে *থাম্বনেইলটি ব্যবহার করা হয়েছে।