বর্তমানে হাঙ্গেরী এবং ইউরোপীয় নাগরকদের কাছে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংবাদ হচ্ছে লাজলো সিজিক-সাতারি-এর মৃত্যু। সাতোরি, হাঙ্গেরির অন্যতম ভয়ঙ্কর এক নাৎসি যুদ্ধাপরাধী যে বিচারাধীন অবস্থায় শনিবার, ১০ আগস্ট তারিখে মৃত্যু বরণ করে।
হাঙ্গেরির ৯৮ বছর বয়স্ক এই নাগরিক ক্রমশ কমতে থাকা জীবিত নাৎসি যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় সবার উপরে অবস্থান করছিল। সন্দেহভাজন নাৎসি এই যুদ্ধাপরাধী বিচারধীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে, যার বিরুদ্ধে প্রায় ১৬,০০০ ইহুদিকে নিকটস্থ মৃত্যু শিবিরে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। বুদাপেষ্ট থেকে সোমবার ১২ আগস্ট তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে সাতোরির মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়।
তার আইনজীবী বিবৃতি প্রদান করেছে যে সন্দেহভাজন এই যুদ্ধাপরাধী নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে সপ্তাহান্তে হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করে। গণহত্যা থেকে বেঁচে আসা নাগরিক যারা ন্যায় বিচার প্রত্যাশী, তাদের জন্য সাতোরির মৃত্যু এক ধাক্কা।
সাইমন ওয়াইসেনথাল সেন্টার, সাতোরির বিরুদ্ধে ১৯৪১ সালে কাসা (কোসিচ) এলাকার ৩০০ নাগরিককে বিতাড়িত করার অভিযোগ আনার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছিল। ২০১২ সালে বুদাপেস্টের আইন মন্ত্রণালয় এই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেয় এই বলে যে, উক্ত সময়ে সাতোরি কাসা শহরে ছিলেন না এবং সে এতটা উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ছিল না যে এ কাজের জন্য পরিবহন সমন্বয়-এর আয়োজন করতে সে সক্ষম ছিল। জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে সংবাদ প্রদান করা হয় যে স্লোভাক পুলিশ একজন সাক্ষীকে খুঁজে বের করেছে, যার কাছে ১৯৪৪ সালে কাসা থেকে ১৫,৭০০ ইহুদিকে বিতাড়িত করার সাথে সাতোরির সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক অন্য অভিযোগের সুদৃঢ় প্রমাণ রয়েছে।
হাঙ্গেরির সরকার বলছে সাতোরি ১৯৪৪ সালে কোসিচ-এ ইহুদিদের জন্য নির্মিত নির্দিষ্ট এক বন্দী শিবিরের প্রধান ছিল। সে সময় স্লোভাক এই শহরটি ছিল হাঙ্গেরির অংশ। বন্দী শিবিরের প্রধান থাকা অবস্থায় সাতোরি বন্দীদের খালি হাতে কিংবা কুকুরকে শায়েস্তা করার চাবুক দিয়ে প্রহার করত। একই সাথে তার বিরুদ্ধে আসউইৎজ এবং অন্য নাৎসি মৃত্যু শিবিরে হাজার হাজার ইহুদিকে পাঠানোর কাজে সাহায্য করার মত অভিযোগ রয়েছে। সাতোরি, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।
১৯৪৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়ায় একই ধরনের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সাতোরিকে তার অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। জুলাই মাসে বুদাপেস্টের এক আদালত উভয় অবস্থান থেকে শাস্তি প্রদানে ঝুঁকি রয়েছে বলে তা বাতিল করে দেয়, যেহেতু হাঙ্গেরির আইনজীবীদের দায়ের করা মামলা আর ১৯৪৮ সালে তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগ একই। হাঙ্গেরির সরকারী আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে দরখাস্ত করেছে এবং এই বিষয়ে শুনানী এখন মুলতুবি রয়েছে।
সাইমন ওয়াইজেনথাল সেন্টার ২০১২ সালে সাতোরির মামলা এবং তার অবস্থান উন্মোচন করে। ইহুদি এই সংস্থার কাজ হচ্ছে যে বিচার এড়িয়ে যাওয়ার নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের পাকড়াও করে বিচারের মুখোমুখি করা।
সাতোরির মৃত্যুতে সারা বিশ্বের বেশীর ভাগ নেট নাগরিকরা তাদের হতাশা লুকাতে পারেনি।
টুইটার ব্যবহারকারী রিচার্ড.এস বলছে:
Most wanted #Nazi suspect Laszlo #Csatary dies aged 98 awaiting trial http://t.co/w00u9CiXfg He escaped justice for too long. #Wiesenthal — Richard S (@rhs718) August 13, 2013
শীর্ষ সন্দেহভাজন #নাৎ