দক্ষিণ কোরীয় শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মানহানির জন্যে ফরেনসিক মনোবৈজ্ঞানিক পাইও চ্যাং-ওন এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। একটি বামপন্থী সংবাদপত্রে তার সর্বশেষ কলামে [কোরীয় ভাষায়] পাইও সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় একজন এজেন্টের কথিত বেআইনী কার্যকলাপের তদন্তের জন্যে কোরীয় জাতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর (এনআইএস) সমালোচনা করেছেন। এছাড়াও তিনি তাদেরকে নিজেদের লাভের জন্যে রাজনৈতিক শক্তিধরদের সেবা করার দায়ে অভিযুক্ত করে “অপদার্থ” এবং “নখদন্তহীন” অভিহিত করেছেন।
পাইও বলেছেন মামলাটি বাক স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্যে একটি গুরুতর হুমকি। পাইও চ্যাং-ওন পাইও চ্যাং-ওনের অপরাধ ও সমাজ [কোরীয় ভাষায়] ব্লগে নিয়মিত লেখা কোরীয় জাতীয় পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন অধ্যাপক এবং সুপরিচিত ফরেনসিক মনোবিজ্ঞানী।
জাতীয় গোয়েন্দা বাহিনী মামলা দায়ের করার অব্যবহিত পরেই পাইও তার ব্লগে [কোরীয় ভাষায়] লিখেছেন [কোরীয় ভাষায়]:
민주주의가 꽃피는 민주사회라면, 누구나 자신의 생각과 견해를 표명하는 데에 있어 어떠한 두려움도 느껴서는 안됩니다.[…] 국가기관인 국정원의 국민 대상 ‘명예훼손’ 고소, 그 자체가 권력적 탄압이며 민주주의를 압살하는 폭거입니다. 게다가 그 사유도 지나가는 개가 웃을 ‘언론 기고문 등에서 국정원을 무능하다고 비판했다'는 것입니다.
একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সমাজে গণতন্ত্র বিকশিত হয়, কেউ তাদের মতামত প্রকাশ করতে ভয় পায় না […] একটি সরকারী সংস্থা হিসেবে জাতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কোন একজন ব্যক্তি নাগরিকের বিরুদ্ধে মানহানির একটি মামলা করা একটি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং একটি কট্টর কর্ম যা আমাদের গণতন্ত্রের অবনমন ঘটায়। এবং অপবাদের অভিযোগের কারণটিও এতটাই নাজুক যে এতে এমনকি রাস্তার একটি কুকুরেরও হাসি পায়; একটি উপসম্পাদকীয়তে এর অযোগ্যতার সমালোচনা করার জন্যে।
পুলিশ প্রথমে গত বছর ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ২০টি বিভিন্ন আইডি (পরিচয়) [কোরীয় ভাষায়] ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে ভ্রান্ত ও অসত্য বিভিন্ন মন্তব্য পোস্ট করে [কোরীয় ভাষায়] লিবারেল প্রার্থীর বিরুদ্ধে জনমত বিকৃত করার জন্যে এজেন্টটিকে পুনরায় তলব করা পরিকল্পনা করে। রিপোর্ট করা হয়েছে যে এজেন্টটির উদ্দেশ্য ছিল ‘উত্তর কোরিয়া পন্থী সাইটগুলোতে’ (তারা যেমন মনে করেছে) উত্তর কোরিয়ার প্রতি বন্ধুসুলভ বামপন্থীদের অনলাইন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা [কোরীয় ভাষায়]. তবে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে পুলিশ তাদের সিদ্ধান্ত উলটে ফেলে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে তারা কোনো বেআইনি কার্যকলাপের শক্ত প্রমাণ পায়নি। দক্ষিণ কোরিয়াতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সরকারী কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে কোন পক্ষ নেওয়া অবৈধ।
ভরাডুবির কিছুদিন পরে, পাইও তার অধ্যাপকের চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন [কোরীয় ভাষায়] কোরিয়া জাতীয় পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০১৩ সালের ২৯শে জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত তার সাম্প্রতিকতম ব্লগ পোস্টে পাইও আরো বলেছেন [কোরীয় ভাষায়]:
[…] 저도 거대 권력기관인 국정원과 싸우는 현 상황이 싫습니다. 누가 좋아하겠습니까? 제가 매달 진행하는 전국 순회강연 강연장소 확보에 어려움이 생길 때 마다, 혹시 극정원과의 싸움 떄문은 아닌가 의심하게 됩니다. 방송 출연 계획이 분명하지 않은 이유로 취소될 때에도 마찬가지입니다.
আমি সত্যি সত্যিই বিশাল শক্তিধর এনআইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিস্থিতিটিকে ঘৃণা করি। (আর) কেই বা এটা উপভোগ করবে? যখনই আমার জাতীয় বক্তৃতা সফরের জন্যে কোন জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন হতো তখনই আমি ভাবতাম এর সঙ্গে এনআইএস-এর সঙ্গে আমার যুদ্ধের কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা। এধরনেরই কিছু ঘটতো যখন আমার কিছুকিছু পূর্বনির্ধারিত টিভি শো’গুলোতে আমার উপস্থিতি আপাত কোন কারণ ছাড়াই বাতিল হয়ে যেতো।
গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলো অভিযোগ করেছে এই মামলা দায়েরের একমাত্র উদ্দেশ্য [কোরীয় ভাষায়] হলো সরকারের পেশী ফুলিয়ে নাগরিকদের ভ্রূকুটি করা। একইরকম প্রতিক্রিয়া সহজেই পাওয়া যাবে দক্ষিণ কোরীয় টুইটার মণ্ডলে। @ব্লু_পিএন লিখেছেন [কোরীয় ভাষায়]:
[…] 우선 국가기관이 툭하면 명예훼손의 주체가 된다는 것부터가 코리아 사회에 만연하는 저질 코메디다. 권력이 시민을 상대로 고소고발을 남발하면 대체 시민은 어떤 방법으로 국가권력을 견제하고 비판하란 말인가?
এটা কোরীয় সমাজে প্রচলিত সবচেয়ে খারাপ কৌতুক; সরকারের একটি সংস্থা খুব বারে বারেই অপবাদের অভিযোগ করছে। কর্তৃপক্ষ যদি এত ঘন ঘন ব্যক্তি নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে থাকে তাহলে কিভাবে নাগরিকরা সরকার ক্ষমতার নজরদারি এবং সমালোচনা করবে?
প্রভাবশালী প্রতিবেদক @উইলাভহানি জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন [কোরীয় ভাষায়] সেই সত্যটি যে সরকারী কোন সংস্থা আদৌ কোন মানহানি মামলার বাদী বিবেচিত হতে পারে না:
[…] 법원은 “국가기관은 명예훼손 소송 주체가 될 수 없다”고 계속 판결하고 있습니다. 국정원이 법원 판례를 몰랐을 리 없을 것.
[পূর্ববর্তী গুলোর মতোই] আদালত ধারাবাহিকভাবে বলছে যে সরকারী কোন সংস্থা আদৌ কোন মানহানি মামলার বাদী বিবেচিত হতে পারে না। কোনভাবেই এনআইএস পূর্ববর্তী এইসব রুলিং সম্পর্কে সচেতন না থেকে পারে না।
@পার্কহিউন৮১৩ লিখেছেন [কোরীয় ভাষায়]:
표교수님처럼 하면 국가기관에 고소당한다~ 겁먹어라~행동하지 마라~ 하는 심산이겠죠
তারা যেই বার্তা প্রেরণ করছে তা হলো ‘আপনি যদি অধ্যাপক পাইও ‘র মতো কাজ করেন, সরকারী সংস্থা আপনার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করবে: সন্ত্রস্ত থাকুন। সক্রিয় হবেন না।’
একটি চরম ডানপন্থী সাইটের কিছু কিছু ইন্টারনেট দানব এমনকি পাইওকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্যে পাইও’র কন্যার পিছু নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে [কোরীয় ভাষায়]. তবে ২৭শে জানুয়ারি তারিখে পাইও টুইট করেছেন [কোরীয় ভাষায়] যে এইসব লোকের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হলেও তার মেয়ে বিভিন্ন মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষিত এবং তাকে মোকাবেলা করা কঠিন, তাই তার পরিবার এসব হুমকি নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয়।