একটি এলজিবিটি (লেসবিয়ান,সমকামী,উভকামী,বহুগামী) বন্ধু পানশালায় অগ্নি-বোমা নিক্ষেপ এবং জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতার পর এই সপ্তাহের গোড়ার দিকে জেনেভাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি আর্মেনিয়ার মানবাধিকার রেকর্ড গভীরভাবে খূঁটিয়ে দেখেছে ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ বিবেচনার ১৪ বছর পর। আর্মেনিয়া নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরকারী ১৬৭টি রাষ্ট্রীয় পক্ষের একটি।
২০০৮ সালের মার্চ মাসে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এবং দক্ষিণ ককেশীয় দেশসমূহে বিচার বিভাগীয় দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নে দু’দিনব্যাপী সংলাপে কমিটির বেশিরভাগ মনযোগ আর্মেনিয়ার এলজিবিটি সম্প্রদায়ের প্রতি আচরণের উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আর্মেনিয়ার প্রতিনিধিদল মোটাদাগে এলজিবিটি বিষয়টি উপেক্ষা করেছে বলে জানা গিয়েছে।
@এইচআরএইচএফফাউন্ডেশন: আশ্চর্যজনকভাবে #আর্মেনিয়া’র প্রতিনিধিদল কেবল #এলজিবিটি অধিকার ছাড়া আর সব কিছুরই উত্তর দিয়েছে। মনে হচ্ছে [যেমন দেখা যাচ্ছে] তারা এই সম্পর্কে কথা বলতে চান না… #আর্মসিসিপিআর
@লারা_আহা: প্রকাশ্যে #এলজিবিটি জনগণ বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছে আর সরকার এটাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলছে… কমিটি খুঁজে দেখেছে #আর্মসিসিপিআর #আর্মেনিয়া #জাতিসংঘ
@এইচআরএইচএফফাউন্ডেশন: #আর্মেনিয়া’র সামগ্রিক পরিবেশটিই এরকম যে # এলজিবিটি জনগণ পুলিশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের (সহ সবার) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় #মানবাধিকারকমিটি #আর্মসিসিপিআর
আর্মেনিয়া ২০০৩ সালে সমকামীতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করলেও এবং যৌনতা বা লিঙ্গ পরিচয় ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণের কয়েকটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা সত্ত্বেও আর্মেনিয়া এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া এর অভিবাসী উভয় সমাজেই তখন থেকেই নিয়মিতভাবে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের প্রান্তিকীকরণ ঘটছে।
@গোলাপীআর্মেনিয়া: #আর্মেনিয়া বলছে আমরা এলজিবিটি অধিকারের জন্যে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু নথি স্বাক্ষর করেছি এবং রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষা দিচ্ছে #জাতিসংঘ #আর্মসিসিপিআর
মে মাসের সর্বশেষ ঘটনাটি ইয়েরেভানের শহরতলীর ডিআইওয়াই পানশালায় ক্রমেই বেড়ে উঠা দেশের নব্য-নাৎসি আন্দোলনের সদস্যদের অগ্নি-বোমা নিক্ষেপ দেখেছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ পটভূমির পৃষ্ঠপোষকদের জনপ্রিয় নিরাপদ একটি আশ্রয়স্থল হিসেবে এটা আর্মেনিয়ার এলজিবিটি সম্প্রদায়কে আকৃষ্ট করলেও তারা প্রতিহিংসার ভয়ে প্রায়শই ছায়ার আড়ালে পড়ে থাকে। সরকার হামলাগুলোতে কোন বিবৃতি না করলেও বেশ কিছু উঁচূ সারির নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বোমা নিক্ষেপের পক্ষে কথা বলেছে এবং এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার দু’জনের প্রশংসা করেছে।
@আনজিপডব্লগ: #আর্মেনিয়া যদি সমস্ত ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে তবে কেন সংসদের ডেপুটি স্পিকার শারমাযানভ #সমকামী-বিরোধী সহিংসতাকে উৎসাহিত করছেন? #আর্মসিসিপিআর
@এমএমকেআর্মেনিয়া: @গোলাপীআর্মেনিয়া আর্মেনিয়া সবসময় #এলজিবিটি অধিকার সুরক্ষা করতে ব্যর্থ, সাম্প্রতিক মে মাসের ঘটনাগুলো মনে করে দেখুন এবং শুধু এগুলোই নয়! #আর্মসিসিপিআর
@লারা_আহা: তারা যদি সমস্ত ধরনের বৈষম্যের নিন্দা করেই থাকে তবে তারা কেন সাম্প্রতিক ডিআইওয়াই’তে হামলার নিন্দা করে একটি সরকারী বিবৃতি দিলো না? #আর্মসিসিপিআর
প্রকাশ্যে সমকামী হিসেবে পরিচিত ইউরোপীয় সংসদের এসএনপি সদস্য এলিন স্মিথ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় দুর্বলতার প্রদর্শনের জন্যে তার ওয়েবসাইটে আর্মেনিয়ার সমালোচনা করে উল্লেখ করেছেন যে আর্মেনিয়ার দুর্বল মানবাধিকার রেকর্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদের লাভের সম্ভাব্য সুযোগের অন্তরায়।
“আর্মেনিয়া যদি জাতিসংঘে যোগদান করতে এবং এর আনা সব সুবিধা নিতে চায় তাহলে একে অধিকার সুরক্ষায় কিছুটা এগিয়ে আসতে হবে… আমি মনে করি সম-লিঙ্গ সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেয়া যে কোন জাতির জন্যে বড় একটি পদক্ষেপ – স্কটল্যান্ডে আমাদের হাঁটা এবং যে পথে আমরা এখনো হাঁটছি সেই দীর্ঘ ও পেঁচানো রাস্তার দিকে লক্ষ্য করে দেখুন – সেখানে কতগুলি ধাপ রয়েছে যেগুলো আসলেই আধুনিক ইউরোপের সহজ শিষ্টতার মৌলিক উপাদান।”
আর্মেনিয়ার নারীদের সম্পদ কেন্দ্র তাদের ফেসবুক পৃষ্ঠার একটি নোটে কমিটির উপসংহারমূলক প্রতিবেদনটি অন্তর্ভূক্ত করেছে যাতে বলা হয়েছে যে “এই সব ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষার জন্যে বর্তমানে নেয়া ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে রাষ্ট্রের ব্যাখ্যাগুলো লক্ষণীয়ভাবে কম।”
আর্মেনিয়ার আশেপাশের ককেশীয় প্রতিবেশীরাও যে এলজিবিটিদের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে খুব একটা এগিয়ে এসেছে তা নয়। একটি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ব্লগপোস্ট সম্প্রতি “সমকামীতাভীতি অলিম্পিক”-এ জর্জিয়া, তুর্কমেনিস্তান এবং রাশিয়াকে বিভিন্ন ‘পদক’ পুরস্কার দিয়েছে।