ইসলামী বর্ষপঞ্জির নবম মাস রমজান শুরু হল। এ সময়ে মুসলমানরা রোজা রাখে, খোদা তায়ালার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে এবং তাঁদের রহমতগুলোকে উদযাপন করে।
বিশ্বজুড়ে এ মাসের উদ্দীপনাকে তুলে ধরার জন্য সম্প্রতি নেটিজেনরা ছবি তুলে বিভিন্ন সামাজিক প্রচার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
ইসলামি বর্ষপঞ্জী চাঁদের উপর নির্ভরশীল এবং মাসগুলো জ্যোতির্বিদ্যার গণনার উপর নির্ভরশীল নয়। এর মানে রমজান ২৯ কিংবা ৩০ দিনে হতে পারে এবং প্রতিটি মাসের শুরু নির্ধারণ হয় বিকেল বেলার নতুন চাঁদ দেখার পর। প্রত্যেক ইসলামিক রাষ্ট্রে নতুন চাঁদ পর্যবেক্ষণের জন্যে রয়েছে নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, আর এ কারনে সাধারণতঃ সকল মুসলিম দেশগুলোতে একই দিনে রমজান শুরু হয় না।
ইনগ্রিড ম্যাটসন (@ ইনগ্রিডম্যাটসন) টুইট করেনঃ
“ রমজান বাস্তবতা- চান্দ্র মাস শুরু হওয়ার বিভিন্ন নির্ধারনী পদ্ধতির মানে হল কোন কোন মুসলিমরা অন্যদের চেয়ে একদিন আগে রোজা রাখে”।
কখনো কখনো মাসের শুরু হওয়ার বিষয়ে রাজনীতিও ভূমিকা রাখে।
মাসজুড়ে মুসলমানেরা রোজা রাখে এবং সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌন কর্ম থেকে বিরত থাকে।
শতবর্ষ প্রাচীন রমজান লণ্ঠনের ঐতিহ্য (রমজান ফানুস) মিশরে ফাতিমিদ যুগে এটা শুরু হয়। খলিফা আল-মুইজ লিদিনিল্লাহ – এর শাসনামলে তাঁর শাসনকাল উদযাপনের জন্য প্রজারা এই লণ্ঠন ধরে থাকত যা রমজানের সাথে কাকতালীয়ভাবে মিলে যায়। বর্তমানে লণ্ঠন রমজানের প্রতীকে পরিনত হয়েছে, মাসটিতে উৎসবের আমেজ যোগ করার জন্য লণ্ঠন গুলোকে বাতি জ্বেলে সুসজ্জিত করে বড় সড়ক চত্বরে এবং শহরের রাস্তাগুলোতে ঝোলানো হয়। ইদানিংকালের লন্ঠন গুলো স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত অথবা চীন থেকে আমদানি করা।
নাদিয়া কাদি তাঁর নতুন ফানুশের ছবি শেয়ার করেছেন।, লাইলা এল শাফি টুইট করেন:
“ দাদীর কিনে দেওয়া লণ্ঠন ছাড়া রমজানের ছবি তোলা খুব দুরূহ। তাঁর আত্মা শান্তি লাভ করুক। তাঁকে ছাড়া এটা আমার প্রথম রমজান”।
অন্যদিকে নাদা রুস্তম আমদানী করা নতুন কাঠামোর লণ্ঠনের সাথে প্রথাগত লণ্ঠনের তুলনা করে তাঁর ভাবনা শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেন:
ফানুশ স্পঞ্জ বব! তাঁরা আসল ফানুশকে ধ্বংস করেছে! মোমবাতিসহ নতুনগুলো আমার পছন্দ (অথবা বাল্ব লাগানো গুলো)
রমজানের আরেকটি প্রতীক হল বন্দুক। অতীতে ভোরে এবং সন্ধ্যায় গুলি ছোড়া হত যাতে লোকজন রোজা শুরু ও শেষ করার সময় বুঝতে পারে। বর্তমানে সঠিক সময় নির্ধারনের জন্য আমাদের রয়েছে বিভিন্ন বর্ষপঞ্জি ও মোবাইল এপ্লিকেশন, তারপরেও প্রথা এখনও চালু রয়েছে, এবং এখনও শুভেচ্ছা কার্ডে নতুন চাঁদের সাথে বন্দুক কিংবা কামানের ছবি দেখা যায়।
মাজেদ সালেহ- সাময়িক ভাবে যিনি এখন ক্ষুধার্ত – এ বলে টুইট করেন যে ভুলক্রমে আগেভাগেই যদি গুলি ছোড়া হয়।
সূর্যাস্ত হলেই বন্দুক কিংবা কামান দাগা হয়, লোকজন তখন খাওয়া-দাওয়া শুরু করে, উপবাসের পর যখন খাবার খাওয়া হয় তখন তা প্রাতরাশের মত অনুভুতি যোগায়, আরবিতে একে ইফতার বলা হয়। আত্মীয় এবং বন্ধু-বান্ধব একে অপরকে বাড়িতে আমন্ত্রন জানায় এবং অনেকেই নতুন ও ভিন্ন ধরণের খাবার প্রস্তুত করে। বিভিন্ন ধরণের খাবারের ছবি নেটিজেনরা শেয়ার করেনঃ
রমজানের আগে সর্বশেষ প্রাতঃরাশের ছবি মোহামেদ আহনিন শেয়ার করেছেন। তুর্কী খাবারের ছবি সেকরান বাল্বাল শেয়ার করেছেন। রাইম রাইম্মা অন্যান্য মিশরীয় মিষ্টান্নের ছবি পোস্ট করেছেন, ফ্রান্স থেকে এবং বসনিয়া থেকেও অন্যান্যরা ছবি শেয়ার করেছে:
লোকজন যখন ক্ষুধার্ত তখন এ ধরণের খাবারের ছবি ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী কায় কুরদ কে সতর্ক করে ।
প্রাতঃ রাশের পর, আরব বিশ্বের অনেকেই টিভি খুলে রমজানের নাটক উপভোগ করে, কিন্তু সিরিয়াতে এ বছর তার কিছুটা ব্যাতিক্রম হবে।
বাহরাইনের জুজুবিএইচ টুইট [ আরবি] করেন, বাহরাইনের শহীদদের আত্মীয়- স্বজনদের বিষয় নিয়ে ভাবছি, ‘এ বছর রমজানে তাঁদের ছাড়া তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অনুভুতি কেমন হবে?’
পরিশেষে এ বছরের রমজান লন্ডনের গ্রীস্মকালীন অলিম্পিক গেমসের সাথে ঘটনাক্রমে মিলে গেছে, তাই ব্লগার টার্কিশ মমি এ দুই ঘটনার মধ্যে সাদৃশ্য বিষয়ে একটি পোস্ট লিখেন। তাঁর ২০১২ সালের রমজান ফ্লাইয়ারে লেখা হয়েছে:
গ্রীস্মের অনুষ্ঠানগুলো বিশ্বকে এক করবেঃ একদলে যারা রোজা রাখবেন তাঁদের জন্য দ্রুত পুরস্কারের ব্যবস্থা হিসেবে কোন পদক নেই; ২+ অংশগ্রহনকারী