ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অবস্থানরত একজন ইরানি কূটনীতিবিদকে, গত ১৪ই এপ্রিল ২০১২ তারিখে অল্পবয়স্ক এক কিশোরীকে উত্যক্ত করার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। পিতামাতার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ উক্ত ইরানি কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং শেষ পর্যন্ত কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে ইরান দূতাবাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং বলে, “সংস্কৃতির ভুল বুঝাবুঝি”–র কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, ইরানি ও ব্রাজিলীয় নেট নাগরিকরা এই ঘটনায় তাদের প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনে খুব একটা দেরি করেনি।
ব্রাজিলিয়ান টিভির এক ভিডিও প্রতিবেদন [পর্তুগীজ ভাষায়] আনুযায়ী, প্রত্যক্ষদর্শী বলেছে যে, এই কূটনীতিবিদ “হাঁসের মত ডুব” দিয়ে সুইমিং পুলের চারদিকে সাঁতার কাটার ভান করেছিল। পুলিশ বলছে যে উক্ত কূটনীতিবিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সে পানির নিচে গিয়ে, নয় থেকে এবং পনের বয়সের মাঝামাঝি চারটি কিশোরীর গায়ে হাত বুলাতে শুরু করে। এদের মধ্যে কয়েকটি মেয়ে চেঁচিয়ে উঠে এবং তাদের লোকটিকে আটক করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই কূটনীতিবিদ ব্রাজিল ত্যাগ করেছে।
ইরানীরা এই সংবাদে বিস্মিত হয়েছে এবং দেশে এক কঠোর লিঙ্গীয় পৃথকীকরণ ব্যবস্থা আরোপের জন্যে সরকারের সমালোচনা করেছে, এদিকে দেশটির কূটনীতিবিদ একটি মিশ্র সুইমিং-পুলে সাঁতার উপভোগ করেছে। তারা “সংস্কৃতিকে ভুল বুঝা”-র মত অজুহাতকে উপহাস করেছে।
আযারাকান পরিহাসের সাথে “সংস্কৃতিকে ভুল বুঝা” বিষয়টি নিয়ে লিখেন এবং বলেনঃ
আমি মনে করি এই ইসলামী প্রজাতন্ত্র সাংস্কৃতিক ভিন্নতা সম্পর্কে সঠিক ধারণ পোষণ করে, কারণ এই শাসনব্যবস্থা বহু বছর ধরেই নির্লজ্জের মত নিজস্ব মানুষগুলোকে ধর্ষণ করে যাচ্ছে, ……আপনি কি কখন শুনেছেন যে কোন একটি ইসলামী শাসনব্যবস্থার প্রতিনিধি তার নোংরা কার্যকলাপের জন্য ধরা পরেছে? শাসনব্যবস্থা কি পারবে এই সময়ে আন্তর্জাতিক জনমতের চাপ থেকে পালাতে?
ব্রাজিলের প্রতিক্রিয়া আসে টুইটারে, মাগালহায় এ.এস প্রশ্ন করেছেন [পর্তুগীজ ভাষায়]:
@tovaga: Justiça e grande justiça, para que servem? É justo que o diplomata iraniano com “imunidade diplomática” abuse de crianças do DF? Só no Irã
@টোভাগা: ন্যায়বিচার এবং মহান ন্যায়বিচার, কিসের জন্যে? এটা কি ন্যায়সঙ্গত যে ইরানি কূটনীতিবিদ “কূটনৈতিক অব্যাহতির ” সুযোগে ডিএফ [ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট]-এ শিশুদের সাথে খারাপ আচরণ করবে? শুধুমাত্র ইরানে।
রক্ষণশীল সাংবাদিক রেইনালদ আযেভেদ তাঁর ব্লগে, এই ঘটনার ক্ষেত্রে ইরান দূতাবাস “সাংস্কৃতিক বৈষম্যতা”- নামক বিষয়কে অভিযুক্ত করে যে নোট প্রদান করেছে, তারও সমালোচনা করেন [পর্তুগীজ ভাষায়]- তিনি বিস্মিত যে ইরানে কি ভাবে এই ঘটনার সমাধান করা হত:
এটি একটি দেশের দূতাবাসের জন্যে এটি এক সাহসী কাজ, যে দেশটি ধর্মীয় একনায়কতন্ত্রের অধীনে বাস করে, যে দেশটি ভিন্নমতকে বুলেট ও লাঠি দিয়ে দমন করে, করে, যে দেশটি নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য আরোপ করে, তাদের নিন্দা জানায় পাথর ছুঁড়ে, এবং উন্মুক্ত দেশের সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করে।
ইরান থেকে জমহুরিয়াত লিখেন [ফারসী ভাষায়]:
ব্রাজিলের কেলেঙ্কারি, ইরানের শাসনব্যবস্থার নৈতিকতার অধঃপতন তুলে ধরে। এই বিপর্যয় শাসনব্যবস্থা প্রতিনিধিদের আচরণ সম্পর্কে জানার জন্যে বিশ্বের জন্যে শুধুমাত্র একটি জানালা…..আমাদের কারাগারগুলোতে অসংখ্য নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা রয়েছে।