ইসলামিক বিপ্লবের ৩৩ বছর পর, দেশটি ইসলামিক পণ্ডিত বা মৌলানাদের জন্য এক ধরনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে, যারা দেশটির ক্ষমতা অর্জন করেছে এবং দেশ জুড়ে তারাই শাসন করছে। তবে সবার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেনি। মোহাম্মদ সাদেঘ (আরাশ ) হোনারভার শোহজাই নামক এক ইসলামিক পণ্ডিত এবং ব্লগার, এখন তার চিন্তা এবং লেখার কারনে কারাবন্দী অন্য সকলের সাথে কারাবাসের যন্ত্রণা ভোগ করছে। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র কি গণতন্ত্রকে দমন করার জন্য ব্যবহার করেছে? এক বছর কারাদণ্ড প্রদান করার পর, তাকে পরবর্তীতে আরো চার বছরের কারাদণ্ড এবং তার সাথে বেত্রাঘাত করার শাস্তি প্রদান করা হয়।
আরাশ হোনারভার শোহজাই–এর অনলাইনে ফেসবুক ও টুইটার একাউন্ট রয়েছে এবং তার একটি ব্লগ রয়েছে। তিনি জুরিদের অভিভাবকত্ব (ভালিয়াত ফাকিহ) নামক ধারনার সমালোচক। ভালিয়াত ফাকিহ–এর অর্থ হচ্ছে, ধর্মীয় নেতৃত্বের অধীনে শাসন, বর্তমানে যে পদটি আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির দখলে। আরাশের নামে দেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে, একই সাথে তার বিরুদ্ধে দেশটির সরকার এবং ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নিন্দার অভিযোগ আনা হয়েছে। স্বাস্থ্যগত কারনে সম্প্রতি তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু বের হবার পর একটি সাক্ষাৎকারে প্রদান করার কারণে। তাকে আবার গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু গত সোমবার থেকে সে অনশন ধর্মঘট পালন করে আসছে।
ইয়োথ ফর হিউম্যান রাইটস ব্লগ বলছে [ ফারসী ভাষায়] :
আরাশ হোনারভার শোহজাই ৩৫০ নম্বর বিভাগের কয়েদিদের সাথে ছিলেন, কিন্তু পরে তাকে, ৩২৫ নম্বর বিভাগে কারাবন্দী মৌলভীদের মাঝে স্থানান্তর করা হয়, যারা তার জটিল চিন্তাধারা বুঝতে অক্ষম। কারা কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যদি সে ক্রমাগত অনশন চালিয়ে যেতে থাকে তাহলে উক্ত বিভাগের কাউকে আর ফোন গ্রহণ করার সুযোগ প্রদান করা হবে না। অন্য কারাবন্দীরা যেন মোহাম্মদ সাদেঘ হোনারভার সোজাইয়ি-এর উপর চাপ প্রদান করে তার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ এই ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে।
২০১০ সালে মোহাম্মদ সাদেঘ হোনারভার শোহজাই, ইরানের শিয়া ধর্মীয় নেতাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু লেখা পোস্ট করেন। ব্লগার, ১১৯৮ সালের এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের-এর করা রিপোর্টে ইরানের অবস্থানের বিষয়টি উদ্ধৃত করেন:
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র স্থাপনের পর থেকে প্রচণ্ডভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে আসছে। ব্যাপক সংখ্যা বিরোধী নাগরিক, যাদের মধ্যে বামপন্থী থেকে রাজতন্ত্রপন্থী ও রয়েছে, মূলত তারা এর শিকার। যে সমস্ত শিয়া ধর্মীয় নেতা ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ভালিয়াত ফাকিহ-এর মত গোঁড়া পদ্ধতির বিরোধিতা করে, তাদের অবস্থানকে সীমাবদ্ধ করার একটি প্রক্রিয়া চালু আছে।
এমন কি ইরানের মত এক ইসলামিক প্রজাতন্ত্র নামক রাষ্ট্রে, কিছু কিছু ধর্মীয় নেতা সরকারে নেক নজর থেকে বঞ্চিত থাকে।