ইরানের সরকারপন্থী এবং বিরোধী শক্তি উভয়ে দাবি করছে যে সালেহ জালেহ তাদের পক্ষ হয়ে কাজ করার সময় শহীদ হয়েছে। ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি তারিখে যখন ইরানের শাসক বিরোধীরা তেহরান এবং অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল, সে সময় এক বন্দুকের গুলিতে সে নিহত হয়।
সানা জালেহ-এর বয়স ছিল ২৬ বছর্। সে ছিল তেহরানের শিল্পকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র। সে ছিল সুন্নি মুসলিম। তার বাড়ি ছিল ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের পাভেহ নামক এলাকায়।
একদিকে যখন ইরানের সরকারপন্থী ওয়েবসাইট দাবি করছে যে সে ছিল ইরানের বাসিজ নামক আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য, যাকে সরকার বিরোধীরা খুন করেছে। ইরানের সরকার বিরোধী সাইট বলছে যে সে একজন প্রতিবাদকারী। উভয় পক্ষ সালেহর পরিচয় চুরির দায়ে একে অন্যকে অভিযোগ করছে।
সরকারপন্থী সাইটে তার ছবি এবং সে যে বাসিজের সদস্য, এ জন্য তার কার্ডের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য দিকে বিরোধী পক্ষের সাইটে তার এক ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যে ছবিতে তাকে উচ্চ পর্যায়ের এক ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ মোনতাজারির সাথে দেখা যাচ্ছে। আয়াতুল্লাহ মোনতাজারি ইরানের অন্যতম সরকার বিরোধী চরিত্র।
রেজা সাজাদি তেহরান শিল্পকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক। সে সালেহর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার হুমকি প্রদান করা সত্ত্বে রেজা ইরানের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রচারণা সংস্থাকে (ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান) জোর দিয়ে বলেছে যে, তার বন্ধু বাসিজ নামক সংগঠনের সদস্য ছিল না।
ইউটিউবে এক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রয়েছে, যা পিঙ্ক ফ্লয়েড নামক ব্যান্ড দলের গান “দি ওয়াল”-এর অনুপ্রেরণায় নির্মিত। এর শিরোনাম “দেওয়ালের মাঝে এক টুকরো ইঁট”। এই চলচ্চিত্রে সালেহকে একটি প্রতিবাদ বার্তায় অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে।
গ্রীনফ্রেড ইরানের এক ব্লগার। সে বলছে [ফারসী ভাষায়] আজ সালেহর খুনিরা [সে এখানে সরকারপন্থী শক্তির কথা উল্লেখ করছে] তাদের হাতে নিহত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করেছ, এদিকে সরকারের নিরাপত্তা কর্মীরা সালেহর সহপাঠীদের বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে দিচ্ছে না….ভোয়েস অফ আমেরিকা পার্শিয়াকে (ইরান) দেওয়া এক সাক্ষাৎকার সালেহর ভাই বলেছে, যে সালেহ মোটেও কোন আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিল না, এবং তার সরকারপন্থী চাচাতো ভাই, তার ছবি ব্যবহার করে বাসিজের একটি ভূয়া পরিচয় পত্র তৈরি করেছে, যাতে তা সরকারপন্থী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যায়…এখন পরিবারটি চাপের মধ্যে রয়েছে।
এছাড়াও ফারইয়াদ সাবজ বলছে [ফরাসী ভাষায়] বন্ধুদের অনুপস্থিতেই তাকে কবর দেওয়া হয়।
বেশ কয়েকজন সরকারপন্থী ব্লগার যেমন পেয়নেভেশস্ত চেষ্টা করছে [ফারসী ভাষায়] সালেহর বাসিজ কার্ডের প্রতি যে সন্দেহ পোষণ করা হচ্ছে তার জবাব দিতে:
সালেহ-এর বেদনাদায়ক কাহিনী আমাকে এক উক্তির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে যা আমি বাউন্টি হান্টারদের (যারা অর্থের বিনিময়ে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের ধরে) নিয়ে নির্মিত বিখ্যাত এক ওয়েস্টার্ন চলচ্চিত্রের শুরুতে শুনেছিলাম। সেই উক্তিটি হচ্ছে “যখন জীবনের কোন মূল্য নেই, তখন মৃত্যুর অন্তত কিছুটা মূল্য রয়েছে”