উরুগুয়ে: দ্বিতীয় দফা নির্বাচন শেষে মুজিকা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত

অবশেষে উরুগুয়ের নতুন এক রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন যার নাম জোসে “পেপে” মুজিকা [স্প্যানিশ ভাষায়]। তিনি বামপন্থী ব্রড ফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। ২৯ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হন। প্রথম পর্বের নির্বাচন অক্টোবর মাসের শেষ রোববারের অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে নির্বাচনে কোন প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে নি। এরপর মুজিকা দলের নেতৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেন, নিজ দলের প্রার্থী ডানিলো আসটোরি হাত থেকে। তিনি এখন ৪৮.১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এজেন্সিয়া ব্রাসিলের কাছ থেকে পাওয়া জোসে মুজিকার ছবি। এটি উইকিপিডিয়া থেকে ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স -এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

এজেন্সিয়া ব্রাসিলের কাছ থেকে পাওয়া জোসে মুজিকার ছবি। এটি উইকিপিডিয়া থেকে ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স -এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

পোর্টাল ১৮০ [স্প্যানিশ ভাষায়]-এর মতে মুজিকা হচ্ছে প্রথম গেরিলা যোদ্ধা যে কিনা দেশটির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন। তিনি ৬০ এর দশকে মুভিমিয়েন্তো দে লিবারেসিওন ন্যাশিওনাল-টুপামারোস (জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন -টুপামারোস)-এর এক অংশ ছিলেন এবং জর্জ পাচেকো আরেকো সরকারের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। তিনি টোমা দে পানডো [স্প্যানিশ ভাষায়] (পানডো দখল) এবং ফুগা দে পুনটা কারেরটাস-এ (পুনটা কারেরটাস জেল থেকে পলায়ন, এক ঐতিহাসিক পলায়নের ঘটনা, সম্প্রতি হিস্ট্রি চ্যানেল এই ঘটনার উপর একটি তথ্য চিত্র সম্প্রচার করেছে [স্প্যানিশ ভাষায়])

মুজিকা এছাড়াও মুভিমেন্টো দে পারটিসিপেশিওন পুপুলার [স্প্যানিশ ভাষায়] (জনপ্রিয় গণ আন্দোলন) নামক আন্দোলনের স্থপতি। এর মাধ্যমে তিনি ডেপুটি বা সহকারী সিনেটর থেকে পূর্ণ সিনেটর হন, এবং সম্প্রতি পশু সম্পদ, কৃষি এবং মৎস্য বিভাগের মন্ত্রিত্ব লাভ করেন।

“নি ভেনসিদোস, নি ভেনসেদোরেস” (“কেউ হারেনি, জিতেনি কেউ”), রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার পর তিনি এই বাক্যটি ব্যবহার করেন।

ব্লগ জগৎে এই নির্বাচনের ফলাফল সম্বন্ধে বেশ শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে। এক বেনামী লেখকের অবসর বিষয়ক ব্লগ ওসিওমেনটারিও [স্প্যানিশ ভাষায়] হতাশার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছে:

URUGUAY ELIGIÓ POR PRIMERA VEZ EN SU HISTORIA UN PRESIDENTE ASESINO

উরুগুয়ের ইতিহাসে এই প্রথমবার একজন খুনী রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হল।

রাজনৈতিক বিষয়ক ব্লগ এলপলভরিন [স্প্যানিশ ভাষায়]-এর লেখক জানাচ্ছে নতুন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ভুয়া এক পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে:

como el nuevo portavoz del neo liberalismo en Uruguay disfrazado de Izquierdista, continua la política digitada por el FMI [Fondo Monetario Internacional], con dos caras y dos discursos, uno cuando viaje a Venezuela y el otro cuando viaje a EEUU, como Tabare .
Nada habrá que esperar de estos nuevos neo liberales, “vuelve el pobre a su pobreza, vuelve el rico a su riqueza”.

উরুগুয়ের নব্য-উদারনৈতিকতাবাদের প্রবক্তা হিসেবে বামধারা এক ছদ্মবেশ ধারণ করেছে, তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের নীতি চালিয়ে যাবে [ইন্টারন্যাশনাল মনেটরি ফান্ড]। তিনি দুমুখো নীতি ধারণ করেন এবং দুই ধারার ভাষণ দিয়ে থাকেন। তিনি তার এই ভাষণের একটি ভেনিজুয়েলা সফরে এবং অন্যটি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দিয়ে থাকেন, যেমনটা [বর্তমান রাষ্ট্রপতি] টাবারে দিয়ে থাকে।

এই নতুন নব্য-উদারনৈতিকতাবাদীদের কাছ থেকে কিছুই আসা করা যায় না, তাদের নীতি “গরীবরা পাবে আরো দারিদ্র এবং ধনীরা পাবে আরো সম্পদ”।

যে সাইট মুজিকা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় উৎসব করছে, সে সাইটের এক ব্লগার এন্তোনিও গিওসা। তিনি একজন উরুগুয়েবাসী, কিন্তু বতর্মানে আর্জেন্টিনায় বাস করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন [স্প্যানিশ ভাষায়] যে মুজিকা তিনটি প্রধান কারণে নির্বাচিত হয়েছেন:

Primero y principal, será la continuidad del actual gobierno frenteamplista. Si bien su estilo lo diferencia un poco de Tabaré Vázquez, Mujica cumplirá a rajatabla el lineamiento planteado por el Programa Político del Frente Amplio.
Segundo, su personalidad y su carisma. Campechano, frontal, honesto, sin pelos en la lengua. Algo que a veces puede jugar en contra y cosechar rechazos, pero que también ha logrado generar una confianza casi absoluta de parte de los votantes y simpatizantes.
Tercero, el Frente Amplio logró demostrar, a partir del año 2004, que es una fuerza política que sabe ejercer el gobierno en forma responsable, efectiva y con un solo objetivo en mente: el bienestar del pueblo.

প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিন ব্রডফ্রন্টাল সরকারে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাবেন। যদিও তার কাজের ধারা বা জীবন যাপন তাবারেজ ভাজকুয়েজের থেকে সামান্য আলাদা, তারপরেও মুজিকা যা কিছু অর্জন করেছে তা প্রোগ্রামা পলিটিকো ডেল ফ্রেনটে এমপিলোর ( ব্রড ফ্রন্টের রাজনৈতিক কর্মসূচীর) মাধ্যমে।

দ্বিতীয়ত তার ব্যক্তিত্ব এবং উৎসাহ সঞ্চারের ক্ষমতা, মফ:স্বলীয় আবেদন, সম্মুখসারীতে থাকা এবং সততা, একই সাথে কঠিন বাক্য বলার মত গুণ তার রয়েছে। এটা এমন কিছু যা তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় এবং তাকে বাতিল করার জন্য বিষয়টিকে তুলে ধরা যায়, কিন্তু একই সাথে ভোটার ও অনুসারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি নিশ্চিত নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করতে সাহায্য করে। তৃতীয়ত, ব্রড ফ্রন্ট প্রমাণ করেছে যে, বেশ কিছু রাজনৈতিক শক্তি সরকারকে বাধ্য করে দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভাবে কাজ করতে: তারা প্রমাণ করেছে, একটা লক্ষ্যে স্থির থাকা প্রয়োজন: তা হল দেশের মঙ্গল সাধন করা।

২০১০ সালে মুজিকা পরবর্তী পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .