নেপাল: ব্যর্থ অভ্যুত্থান?

বিরোধ গত বছর শুরু হয়েছিল যখন নেপালের রাজনীতিবিদরা ভূতপূর্ব মাওবাদি গেরিলাদের দেশের জাতীয় সেনাবাহিনীতে একত্মীকরন নিয়ে বির্তক শুরু করে , যারা জনপ্রিয়ভাবে পরিচিত পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) হিসেবে। তখন ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছিল যে এই প্রক্রিয়া জাতীয় সেনাবাহিনীর কাঠামো ও স্থায়ীত্বকে আঘাত করতে পারে।

২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে এবিসির ড: দিভাস প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপা বাদল আর জাতীয় বাহিনী প্রধান রুক্মাঙ্গুদ কাতোয়াল এর মধ্যে একটা বিরোধের ব্যাপারে জানিয়েছিলেন:

বাদল আর কাতোয়াল মুখোমুখি হচ্ছেন যে জাতীয় সেনাবাহিনীতে নতুন নিয়োগ চলতে থাকবে কিনা খালি পদ পূরণের জন্য। বাদল যদিও সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেন গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকারের কথা না শুনে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার জন্য, কাতোয়াল একগুঁয়ে হয়ে আছেন জাতীয় সেনাকে মাওবাদী দলের নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা থেকে রক্ষা করার জন্যে।

কাতোয়াল মাওবাদীদের সাধারনভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অকৃতজ্ঞ হতে দেখছেন আর মাওবাদীরা কাতোয়ালকে তাদের লক্ষ্য পূরনের পথে বড় বাধা হিসাবে দেখছে। তারপর থেকে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। একই পোস্টে ড: দিভাস পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ জানাচ্ছেন:

দুই দিন আগে (প্রধানমন্ত্রী) প্রাচান্ডা জেনারেল কাতোয়ালের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়ার ব্যাপারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণলয়ের একটা সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছিলেন। কাতোয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি আটজন সিনিয়র সেনা জেনারেলের নিয়োগ আর বরখাস্তের ব্যাপারে সরকারী নির্দেশনার অবজ্ঞা করেছেন।

নিলস নেপাল এর ফলশ্রুতি নিয়ে সাবধান করেছেন:

সেনারা খোলামেলাভাবে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ অবজ্ঞা করছে… শুধু তাই না, মূল বিরোধী দল সেনাকে তাদের লাগাতার বিরোধীতায় সমর্থন করছে, আর মাওবাদিরা সম্ভবত এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে নেই। এখন যখন মাওবাদিরা সেনা প্রধানকে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য ডাকছেন এটা তাকে চাকুরিচ্যুত করার প্রাথমিক ধাপ হতে পারে। তাই সকল ঐতিহ্যগত নিয়ামক এক আসন্ন সেনা অভ্যুত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটা খুবই চিন্তার বিষয় এই প্রেক্ষিতে যে শেষ সেনা অভ্যুত্থান মাত্র চার বছর আগে হয়েছিল।

কিন্তু এই ব্লগার যুক্তি দেখিয়েছেন যে অভ্যুত্থান কেন হবে না:

পিএলএ এখনো ক্যান্টনমেন্টে বসে আছে, এদের এখনো অস্ত্র আছে, আর এরা এখনো মাওবাদীদের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ত। সেনা প্রধান জানেন যে তিনি যদি কোন অজুহাতে নির্বাচিত সরকারকে বরখাস্ত করতে পারেন, তাকে শুধু খুব সংঘবদ্ধ একটা পথ বিক্ষোভের/ শহুরে জাগরনেরই সম্মুখীন হতে হবে না (এমন একটা দলের সদস্যদের কাছ থেকে যারা শহুরে এলাকায় গ্রথিত আর খুবই জঙ্গী)। তাকে সাথে সাথে নিজের বাহিনীকে গোলযোগ স্থানে পাঠাতে হবে (যারা খুব রাজী নাও থাকতে পারে) ১৮০০০ শক্তিশালী, উচ্চ উদ্বুদ্ধ গেরিলা বাহিনীর (পিএলএর) বিরুদ্ধে।

ইউনাইটেড উই ব্লগ! ফর আ ডেমোক্রাটিক নেপাল আজকে জানিয়েছে যে ‘সেনা প্রধান রুক্মাঙ্গুদ কাতোয়ালের বরখাস্তের মাওবাদিদের পরিকল্পনা বাতিলের জন্য নেপাল সেনাবাহিনীর কিছু জেনারেল পরিকল্পনা করেছেন ‘রক্তপাতহীন একটি অভ্যুত্থানের'। ডঃ দিভাস সর্বশেষ জানাচ্ছেন যে জেনারেল কাতোওয়াল নিয়মের মধ্যে কিছু করতে চেয়েছিলেন,”ভারত সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশের মত একটা তত্বাবধায়ক সরকারের শাষন”।

ইকান্তিপুর.কম এ এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এখানে দেখানো হয়েছে যে মাওবাদিরা চেয়েছিল জাতীয় সেনাবাহিনীতে পুরো ১৯০০০ ভুতপূর্ব গেরিলাদের (পিএলএ) একত্মীকরন আর বেশ কিছু পিএলএ কমান্ডারকে সেনাবাহিনীর উচ্চ পদে নিয়োগ দিতে।

ইউনাইটেড উই ব্লগ! সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন যেখানে এইসব রিপোর্টকে “ কাল্পনিক আর ভ্রান্ত” হিসাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

নিলস নেপাল মাওবাদিদের সুবিধার কথা বলেছেন:

মাওবাদিরা তাদের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন তাদের নিজেদের বাহিনী গঠনের মাধ্যমে (অনেক কষ্ট করে) আর সরকারের ক্ষমতা ব্যবহারের একচেটিয়া অধিকার খর্ব করে। তাই তাদের সেনাবাহিনীর আনুগত্য নেই (অন্তত নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে), তবে তারা হয়তো শীঘ্রই কোথাও যাচ্ছেন না।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .