সৌদি আরব: ইলেক্ট্রোনিক গেমস – ভালো, খারাপ আর অজানা

নতুন প্রতিষ্ঠিত সৌদি তথ্য-প্রযুক্তি ক্লাব হচ্ছে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা কতিপয় আগ্রহী সৌদি তরুন আইটি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। পূবের রাজ্য দাম্মাম আর খোবার এর মধ্যে অবস্থিত তাদের এই ক্লাবে তারা সচরাচর চোখ এড়ানো বিষয় – যুবাদের উপর ইলেক্ট্রনিক গেমসের প্রভাব নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানটি ওয়ার্ল্ড সাইবার গেমস এর বোর্ড সদস্য আর মধ্য প্রাচ্য আর সৌদি আরবের ইলেট্রনিক স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড কাপ এর সুপারভাইজার ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসের এম. বাহজাত এর একটি উপস্থাপনা ‘ ইলেক্ট্রোনিক গেমস: নিউ মিডিয়া আউটলেট’ কে ঘিরে হয়েছে। বাহজাত বদর হাকিম এর মতো জনপ্রিয় গেমস নির্মানের জন্য প্রসিদ্ধ যা ২০০৫ এর প্রো ইভেলিউশন সকার ডিভিশনে ইএসডাব্লুসি টাইটেল জিতেছিল এবং ২০০৬ সালে শিরোনামে উঠে এসেছিল আর ২০০৪ আর ২০০৭ এ সৌদি আরবকে ফাইনালে নেয়ার জন্য অবদান রেখেছে।

উপস্থাপনার উদ্দেশ্য ছিল বাবা মাকে গেমসের লাভ আর ক্ষতিকারক দিক গুলো জানানো আর নিরাপদ গেমসের পথ চেনানো। তিনি এই অঞ্চলে ইলেক্ট্রনিক গেমস তৈরি করার সম্ভাবনার কথাও আলোচনা করেন।

“ইলেক্ট্রনিক গেমস খেলনা না, এটা আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে। আর কোন ইলেক্ট্রনিক গেমসকে ভালো বা খারাপ সাথে সাথে বলতে হয় না, দেখতে হয়, তা নিয়ে পড়তে হয়, গেমিং কমিউনিটি অনলাইন আর অফলাইনে তার ব্যাপারে কি বলছে তা শুনতে হয়। এভাবেই আপনি ঠিক করতে পারেন কোন গেম আপনার ছেলে মেয়ের জন্য ঠিক আছে কিনা,” বলেছেন বাহজাত।

এর সাথে বাহজাত জানিয়েছেন যে আমেরিকায় সপ্তাহে গড়ে কমপক্ষে ৪ ঘন্টা ভিডিও গেমস খেলা লোকের বয়স ৩৪ বছরের মধ্যে। তিনি নিউ ইয়র্কে করা একটি কৌতুহলউদ্দীপক স্টাডির কথা বলেন যেখানে সার্জনরা যারা সপ্তাহে অন্তত ৩ ঘন্টা গেমস খেলেন তারা লেপ্রোস্কোপিক সারজারিতে ৩৭% ভুল কম করেন আর যারা খেলেন না তাদের থেকে ২৭% দ্রুততার সাথে কাজ শেষ করেন। উপস্থাপনা শেষে বাহজাত কিছু প্রশ্ন আর উদ্বেগের উত্তর দেন দর্শকদের, যেখানে পুরুষ, মহিলা সবাই ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন ফাহদ সেন্টার ফর ইউথ ডেভেলপমেন্ট এ সন্ধ্য ৬ টায় (+৩ জিএমটি) হয়েছে যা সৌদি ব্লগার আর আইটি ক্লাব সদস্য সালেহ আল জাইদ সরাসরি ইয়াহু লাইভে দেখিয়েছেন। এটার পরে এমাইটির সৌদি ছাত্র আব্দুল রাহমান তারানজুনি “পৃথিবী তোমার জন্য অপেক্ষা করছে” নামে একটা উদ্দীপক ভাষণ দিয়েছেন।

সৌদি আরবে ভিডিও গেমসকে বেশিরভাগ সময় দোষ দেয়া হয় সৌদি তরুনদের মোটা হওয়ার কারন হিসেবে, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কার্টুনকে প্রথমে দোষ দেয়া হয় (সূত্র)। ইলেক্ট্রনিক্স গেমস সৌদি কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েছে আরো কিছু কারনে; সৌদি পত্রিকা আশ্রাক আল আওসাত এর এক লেখা উগ্র ভিডিও গেমসের বিরুদ্ধে সৌদি কার্যক্রমের কথা বলেছে (বিশেষ করে একটা যেখানে সৌদি আরব আর আল-কায়দার মধ্যে যুদ্ধ চলছে)। আমার মনে হয় যে গেমস এর কথা তারা বলছে সেটা কল অফ ডিউটি ৪: মডার্ন ওয়ারফেয়ার।

সৌদি বাজারে ইলেক্ট্রনিক গেমস এর মূল্য প্রায় ১৮৭ মিলিয়ন ডলার, যা সৌদি খুচরা মার্কেটের ৩০%। সৌদি গেমস বাজার বছরে ৩ মিলিয়ন ভিডিও গেমস পায়, যার মধ্যে ১০,০০০ মূল কপি আর বাকি সব নকল। এই লিঙ্কে এরুপ আরও পরিসংখ্যান আছে; সৌদি তরুনরা বছরে গড়ে ৪০০ ডলার ব্যয় করে আর ৬০% এর বেশি সৌদি পরিবারে গেমিং কনসোল আছে।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সম্প্রতি কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক্স গেমস কে ভিত্তি করে একটা গবেষণা করা হয়। তাতে দেখা গেছে যে ৭০% কিশোর ভিডিও গেমস দ্বারা খারাপ ভাবে প্রভাবিত হয়ে তা বাস্তবে রুপ দিতে চেয়েছে।

তাই ভালো আর খারাপ দিকের কোন মাপকাঠি নেই, এখানে মূল জিনিষ হল মধ্যপন্থা, যা এই রাজ্যে প্রায় নেই (এখানে সব কিছু সাদা না হয় কালো)। এই কারনে সৌদি আইটি ক্লাবে ইলেক্ট্রনিক গেমিং ডিভিশন খোলা হয়েছে, আর সৌদি তরুণরা ভালো আর নিরাপদ গেমিং অন্য তরুণদের বোঝাচ্ছে।

এই বিষয়ে বিভিন্ন ব্লগ ও সংবাদ সাইটে লেখা:

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .