সৌদি আরব: দুই সৌদি উইকিপিডিয়া প্রদায়কের মুক্তির আহ্বান

 

দুজন উইকিপিডিয়া প্রদায়ক ওসামা খালেদ (বাম দিকে) এবং জিয়াদ সুফিয়ানি (ডান দিকে)-কে শান্তিপূর্ণ অনলাইন সক্রিয়তার জন্যে সৌদি আরবে ৩২ এবং ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জিসিএইচআর প্রদত্ত ছবি। অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত।

এখনি_প্রবেশাধিকার, মানবাধিকারের_জন্যে_এএলকিউএসটি, ধারা_১৯, গ্লোবাল ভয়েসেস (জিভি), উপসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্র (জিসিএইচআর) এবং আইএফইএক্স অনলাইন সক্রিয়তার জন্যে ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হওয়া দুই সৌদি চিকিৎসক এবং সক্রিয় ইন্টারনেট কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের একজন ওসামা খালিদকে ৩০ বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আরবি ভাষার উইকিপিডিয়া পোস্টে অবদানের জন্যে পরিচিত দুই তরুণ চিকিৎসক ওসামা খালিদ এবং জিয়াদ আল-সুফিয়ানি সৌদি আরবে কারাগারে দণ্ডিত হয়েছে। উভয়ই গত দশক ধরে স্বেচ্ছাসেবকদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালিত অনলাইন এনসাইক্লোপিডিয়াতে অবদান রেখেছে এবং নারী মানবাধিকার রক্ষাকারী লুজাইন আল-হাথলুল সম্পর্কিত নিবন্ধগুলি সম্পাদনা করেছে। সৌদি আরবে কোভিড-১৯ লকডাউনের সময় ২০২০ সালের গ্রীষ্মে তাদের গ্রেপ্তার করে প্রাথমিকভাবে যথাক্রমে পাঁচ এবং আট বছরের কারাদণ্ড প্রদানের পর খালিদ আবেদন করলে তার সাজা বাড়িয়ে ৩২ বছর করা হয়। উভয় ক্ষেত্রে খুব সামান্য বিবরণ জানা যায়।

খালিদের কারাদণ্ড এবং সাজা প্রদানের খবরটি প্রথম এএলকিউএসটি  ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন করে। এই সংবাদটি কাল্পনিক শহর এনইওএম নির্মাণের জন্যে তাদের জমি থেকে জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির বিরোধিতা করার জন্যে উপজাতীয় কর্মী আবদুলিলাহ আল-হুওয়াইতি এবং আবদুল্লাহ দুখাইল আল-হুওয়াইতির ৫০ বছরের কারাদণ্ডের দীর্ঘ সাজা প্রদানের আরেকটি মামলার খবরের সাথে ভাগভাগি করা হয়।

ওসামা খালিদ সৌদি আরবের অন্যতম জনমুখি এবং সুপরিচিত ইন্টারনেট স্বাধীনতার সমর্থক। তার নিজের উইকিপিডিয়া পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে উইকিপিডিয়ার অংশ হিসেবে তার কাজ তার জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে এবং ইন্টারনেটের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও প্রচার তার অন্যতম অগ্রাধিকার।

দুর্ভাগ্যবশত সৌদি আরবে অনলাইন স্বাধীনতা কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং দমন-পীড়নের মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ শুধু ইন্টারনেটের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে নয়, অনলাইনে ভিন্নমত পোষণকারী কণ্ঠকে নীরব করার জন্যে যথেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছে।

খালিদ এবং আল-সুফিয়ানির মামলা দু’টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হলেও তারা বিচ্ছিন্ন নয়। প্রকৃতপক্ষে এগুলি একটি উদ্বেগজনক নতুন প্রবণতার মাত্র দু’টি উদাহরণ যেখানে বিভিন্ন অনলাইন মঞ্চে মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের সমর্থনের কথা বলার পাশপাশি সরকারি নীতির শান্তিপূর্ণ সমালোচনার জন্যে সৌদি কর্তৃপক্ষ জনগণকে অত্যন্ত দীর্ঘ সাজা দেওয়া শুরু করেছে। এছাড়াও নারী অধিকার রক্ষাকারী সালমা আল-শিহাব এবং নুরা আল-কাহতানির দুটি অতিরিক্ত মামলা রয়েছে। টুইটারে মানবাধিকার কার্যক্রম সম্পর্কে শান্তিপূর্ণ পোস্টের জন্যে তাদের যথাক্রমে ৩৪ এবং ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

“আমরা এই গ্রেপ্তার এবং তারা ওসামা খালিদ ও জিয়াদ আল-সুফিয়ানির স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্যে যে ক্ষতি করেছে তার জন্যে আমরা দুঃখিত এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ফাউন্ডেশনটি বিশ্বজুড়ে উইকিমিডিয়া স্বেচ্ছাসেবক সম্প্রদায়ের সাথে জ্ঞানের সুযোগ লাভ একটি মানবাধিকার এই সাধারণ বিশ্বাসটি ভাগাভাগি করে,“ ছয়টি মানবাধিকার সংস্থার কাছে একটি বিবৃতিতে উইকিপিডিয়া পরিচালনাকারী অলাভজনক সংস্থা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন বলেছে৷

এখনি_প্রবেশাধিকার, এএলকিউএসটি, ধারা_১৯, গ্লোবাল ভয়েসেস, জিসিএইচআর এবং আইএফইএক্স অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ অনলাইন কার্যক্রমের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকার কারণে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও অন্যায্য বিচারের শিকার ওসামা খালিদ এবং জিয়াদ আল-সুফিয়ানির পাশাপাশি সালমা আল-শিহাব এবং নুরাহ আল-কাহতানিসহ অন্যান্য সক্রিয় ইন্টারনেট কর্মীদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

ছয়টি মানবাধিকারের বেসরকারি সংস্থা সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষকে অনলাইন এবং অফলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ জনস্বাধীনতাকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .