নির্বাচনের আগে ইন্দোনেশীয় তরুণ ভোটারদের দাবি

Screenshot of televised presidential election debate

টেলিভিশনে প্রচারিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিতর্কের নেটমিডিয়াটামার ইউটিউব ভিডিওর পর্দাছবি। ন্যায্য ব্যবহার।

ইন্দোনেশিয়াতে ১৭ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১০.৬ কোটি যোগ্য ভোটার ৫২ শতাংশ জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের জন্যে তরুণ ভোটারদের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে প্রচারণার সময় অনেক প্রার্থীই তরুণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্রিয়ভাবে সামাজিক গণমাধ্যম মঞ্চ ব্যবহার করে তরুণদের ভোট আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করছে। এমনকি কেউ কেউ ইন্দোনেশীয় কে-পপ অনুরাগীদের কাছে পৌঁছাতে তাদের প্রচারের উপকরণে কোরীয় পপ-সংস্কৃতির বিভিন্ন থিম গ্রহণ করেছে।

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়া ইনস্টিটিউটের প্রভাষক জাস্টিন ওয়েজ্যাক নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে তরুণদের ভূমিকা ও সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।

তাদের পূর্বসূরিদের রাজনৈতিক বক্তৃতাকে প্রভাবিত, ক্ষমতাসীনকে চ্যালেঞ্জ ও শেষ পর্যন্ত ভবিষ্যৎ নির্বাচনের ফলাফল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারার মতো বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের সামাজিক সচেতনতার তীব্র অনুভূতিসহ ইন্টারনেট-সক্ষম সংযোগের একটি স্তরের অভাব ছিল।

তবে সংবাদ ওয়েবসাইট টেম্পোর সম্পাদক পেটির গার্দা ভয়ানা দেশ পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসেবে তরুণদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নে বাধা প্রদানকারী মূল সমস্যাবলী তুলে ধরেছেন

পরিবর্তনের নিয়ামক হিসেবে তরুণদের চিত্রের বিপরীতে অনেকের অনিশ্চিত কর্মসংস্থান ও জীবনযাপন পরিস্থিতি প্রতিদিনের বাস্তবতা যা মহামারীর মতো সংকট পরিস্থিতিতে তীব্রতর করছে। সীমিত সামাজিক পুঁজিসহ সুবিধাবঞ্চিত যুবকদের পরিস্থিতি আরো খারাপ।

রাজনৈতিক ব্যবস্থা তরুণদের তাদের অসন্তোষ প্রতিকারের খুব কম সুযোগ দেয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় তরুণদের রাজনৈতিক অবস্থান ক্ষুন্ন হয়েছে।

প্রচারাভিযানের সময় তরুণ ভোটাররা বিভিন্ন গণমাধ্যম সাক্ষাৎকার ও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগাভাগি করেছেন।

ববি হিদায়াত (২২) চ্যানেল সংবাদ এশিয়াকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে কাকে ভোট দেবেন তা বেছে নেওয়ার অসুবিধা সম্পর্কে বলেছেন।

তাদের সবারই সবলতা ও দুর্বলতা রয়েছে। কঠিন হলেও আমাকে সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কারণ আমরা সবাই আগামী পাঁচ বছরের জন্যে এই দেশের নেতৃত্ব নির্বাচন করছি।

তিনি আরো বলেছেন তিনি তার কাছের লোকদের পছন্দের উপর নির্ভর না করে প্রার্থীদের সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ করছেন।

যুক্তিসঙ্গতভাবে আমার পরিবার বলেছে বা আমার বন্ধুরা সবাই এই প্রার্থী বা সেই প্রার্থীকে সমর্থন করছে বলেই আমি কোনো প্রার্থীকে বাছাই করিনি। আমি প্রতিটি প্রার্থী সম্পর্কে যতোটা সম্ভব তথ্য জেনে কাকে  আমার জন্যে সঠিক মনে হচ্ছে তা বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।

ইউনিভার্সিটাস গাদজাহ মাদায় একটি আলোচনার সময় আইনের ছাত্রী লিন্ডা ক্রিস্টিয়ানি সিয়ানতুরি বেশিরভাগ সংবাদ কভারেজ আইনসভা নির্বাচনের পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি প্রার্থীদের উপর দৃষ্টি দেয় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন

বিধানসভা নির্বাচনের জন্যে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ হ্রাস পেতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রপতি প্রতিযোগিতার উপর বেশি আলো পড়লেও আইন প্রণয়ন ও করসহ সরকারকে তত্ত্বাবধান করার মতো জনগণকে সরাসরি প্রভাবিত করে এমন নীতি গঠনে আইনসভা সদস্যদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

একই অনুষ্ঠানে দর্শনের ২২ বছরের শিক্ষার্থী লাকসিটো লিন্টাং শিক্ষা ও কর্মসংস্থান বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি বিনামূল্যে শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সক্রিয় সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা বা ইন্টার্নশিপসহ স্নাতকদের জন্যে চাকরিতে সহজতর প্রবেশাধিকারের পক্ষপাতী।

ছোট ব্যবসার মালিক ও যুব কর্মী ২৪-বছরের রায়হান জাকার্তা গ্লোবকে প্রার্থীদের অর্থনৈতিক উদ্বেগ ও আইনের শাসন মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেছেন।

যুবক বয়সে একটি বাড়ির মালিক হওয়া খুব কঠিন। আমি অবকাঠামোকে অগ্রাধিকার ও বাড়ির মালিকানা সহজ করে দেওয়া কাউকে খুঁজছি.এবং শেষ পর্যন্ত আমি এমন একজনকে চাই যে ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকারের সমস্যা বিশেষ করে পুলিশের বর্বরতার সমাধান করতে পারে।

জলবায়ু প্রচারাভিযান গ্রুপ ৩৫০-এর ২৪-বছর বয়সী পরিবেশবাদ সমর্থক গিনাঞ্জার আরিয়াসুতা নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দিতে প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ করেছেন

সবার (প্রার্থীদের) এখনো খনিজ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বিকাশ এবং কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরের পরিকল্পনা রয়েছে। জলবায়ু সংকটে তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে। আমাদের এখন জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে।

নির্বাচন ও গণতন্ত্র সমিতির (পারলুডেম) তিতি জেলা আংগ্রাইনি পর্যায়ে ভোট কেনা-বেচা ও নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তনের মতো নির্বাচনী জালিয়াতির ঘটনা কমিয়ে আনতে তরুণ ভোটারদের নির্বাচন কর্মী হতে উৎসাহিত করেছেন।

আমি মনে করি কলেজ শিক্ষার্থীদের জনগণের ভোট সংগ্রহ ও ভোটারদের কারচুপিমূলক চর্চায় প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচিয়ে ভোটের স্বচ্ছতা বজায় রাখার মতো যথেষ্ট সততা রয়েছে।

তরুণ ইন্দোনেশীয়রাও ভোটারদের তথ্য ও শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিজাক মেমিলি মঞ্চে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও গুরুত্বপূর্ণ জনসমস্যাবলীর দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য খুঁজে পেতে পারে। বিজাক মেমিলির সহ-প্রবর্তক প্রাক্তন পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ আন্ধ্যতা “আফু” ফির্সেলি উতামি একটি টিইডিএক্স আলোচনায় ভোটারদের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন। তার আলোচনার সারসংক্ষেপ:

আফু মনে করে বর্তমান রাজনৈতিক আলোচনা সমস্যা, নীতি ও ধারণার পরিবর্তে শুধু চটকদার নেতাদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই আলোচনার মাধ্যমে আফু রাজনৈতিক চর্চার উদাসীনতা ভাঙতে তার নিজের অভজ্ঞতার কথা বলে তরুণ ভোটারদের পরবর্তী নির্বাচনে বুদ্ধিমত্তার সাথে বেছে নিতে উৎসাহিত করেছেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .