সন্তোষ দাহিতের এই নেপালি টাইমসের নিবন্ধটি হিমালখবর.কমে প্রথমে প্রকাশিত নেপালি মূল থেকে অনুবাদ করেছেন আয়ুশা পোখরেল, যার একটি সম্পাদিত সংস্করণ একটি বিষয়বস্তু ভাগাভগি চুক্তির অংশ হিসেবে গ্লোবাল ভয়েসেসে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে।
কার্যকরভাবে তার কাঠমুন্ডুর আবর্জনা সংকট মোকাবেলার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়া সত্ত্বেও মেয়র বলেন শাহ মধ্য-পশ্চিম নেপালের লুম্বিনি প্রদেশের ডাং জেলা পরিদর্শন করে উপকৃত হতে পারেন, যেখানে শহরটি তার বর্জ্যকে জ্বালানিতে রূপান্তরিত করার সম্ভাব্যতা প্রদর্শন করেছে।
ডাঙের আধা-গ্রামীণ ঘোরাহি শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ আবর্জনা রান্নাঘরের বর্জ্য, খামারের অবশিষ্টাংশ ও গবাদি পশুর গোবরের মতো বায়োমাস যাকে দাহ্য মিথেন গ্যাসে পরিণত করা যেতে পারে। বাকিটা হলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, ধাতু বা কাচ এবং এর সামান্য অংশই জমিভরাটের স্থানে ফেলার জন্যে বাকি থাকে।
লক্ষ্মী চৌধুরীর পরিবার ঘোরাহির দুটি ওয়ার্ডের বিকল্প শক্তি ও নেপাল জ্বালানি উন্নয়ন কোম্পানির প্রযুক্তিগত সহায়তায় উপ-মেট্রোপলিটন শহরের ইউটিলিটি হিসেবে গ্যাস পাইপের সংযোগ পাওয়া ৩২ পরিবারের একটি৷ পরিবারগুলি রান্নার জন্যে জ্বালানী কাঠের এবং তারপর আমদানি করা তরলীকৃত পেট্রোলজাত গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের উপর নির্ভর করতো।
“আমাদের ছোট বেলায় দীর্ঘ দিন আমরা মাঠে-জঙ্গলে কাঠ খুঁজে আনতাম, তারপরে আমরা গ্যাস সিলিন্ডারে চলে যাই, কিন্তু এখন আমি শুধু পাইপযুক্ত গ্যাস ব্যবহার করতে পারি, যা আরো ভাল কাজ করে,” চৌধুরী বলেন।
বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনা ঘটায় তিনি সিলিন্ডারগুলিকে ভয় পেতেন, কিন্তু পাইপযুক্ত গ্যাসের সাথে এমন কোনো ভয় নেই৷ “এটি কল চালু করার মতোই সহজ,” তিনি বলেন৷
তার প্রতিবেশী সুশীলা চৌধুরীও তার রান্নাঘরে গ্যাসের পাইপ পেয়ে আনন্দিত। “রান্না করা এখন খুব সহজ, এবং রান্নাঘর ধোঁয়াহীন,” তিনি বলেন৷
ঘোরাহি করতে পারলে অন্যান্য শহরগুলো এটা করতে না পারার কোনো কারণ নেই। আসলে নেপালে সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি গৃহস্থালী বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট রয়েছে এবং এখানে ১৯৮০ এর দশকে ডিজাইন করা সস্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ-মুক্ত ভূগর্ভস্থ গম্বুজ ডাইজেস্টার সারা বিশ্বে অনুলিপি করা হয়েছে।
এছাড়াও শিল্প পর্যায়ে বায়োগ্যাস উৎপাদনের চেষ্টা করা হয়েছে। সঙ্কুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) উৎপাদনকারী বেসরকারি সংস্থা গন্ডকি উর্জা পোখারার হোটেলগুলিতে সিলিন্ডার বিক্রি করে৷ ঝাপার অনুরূপ একটি প্ল্যান্টও শহরের কিছু অংশে গ্যাস সরবরাহ করে।
সাতটি প্রদেশেই বিস্তৃত করা গেলে শিল্প-মাত্রায় জৈবগ্যাস সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া নেপালের তরলীকৃত পেট্রোলজাত গ্যাস (এলপিজি) আমদানি কমিয়ে আনবে, যা পাচ্ছে। শুধু গত অর্থবছরেই, নেপাল ভারত থেকে প্রায় ৬,০০০ কোটি নেপালী রুপি (প্রায় ৪,৯৩৩ কোটি টাকা) মূল্যের এলপিজি আমদানি করেছে।
ঘোরাহির মেয়র নারুলাল চৌধুরী জোরালোভাবে জৈবগ্যাস কর্মসূচিকে সমর্থন করে বলেছেন, “আমরা শহরের বর্জ্য থেকে জৈবগ্যাস তৈরি করছি এবং সরাসরি মানুষের বাড়ির চুলায় পাইপ দিয়ে যাচ্ছি। আমরা এই জ্ঞান অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারি।”
২.২ কোটি নেপালী রুপির (প্রায় ১.৬৪ কোটি টাকা) প্রকল্পটির লক্ষ্য এই অগ্রগামী পর্ব শেষ হওয়ার পরে শেষ পর্যন্ত ১,৫০০ পরিবারে মিথেন গ্যাস বিতরণ করা। একবার মিটার বক্স চালু হয়ে গেলে পরিবারের খরচের উপর ভিত্তি করে অর্থ আদায় করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পটি ৭৫০টি পরিবারে সম্প্রসারিত করা হবে।
“গ্যাস স্থাপনাটি পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ করলে আমরা দৈনিক ২,০০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস উৎপাদন করতে পারি। এজন্যে আমাদের প্রতিদিন ৩০ টন আবর্জনা প্রয়োজন, “প্রকল্প সমন্বয়কারী শারদা শর্মা বলেন। “ডাইজেস্টারকে খাওয়ানোর জন্যে ঘোরাহির বর্জ্য যথেষ্ট না হলে আমরা জেলা থেকে অতিরিক্ত খামারের বর্জ্য সংগ্রহ করি।”
এতদিনের অগ্রগতিতে মেয়র চৌধুরী এতটাই উৎসাহিত যে ঘোরাহিকে শীঘ্রই আবর্জনামুক্ত ঘোষণা করা যাবে বলে তিনি মনে করেন। শহরটি এমনকি ডাঙের অন্য উপ-মেট্রোপলিটন শহর লামাহির উৎপন্ন আবর্জনাও আমদানি করে।
আর শহরের জন্যে উপকারী এটি এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, এর বাসিন্দাদের জন্যে গ্যাস উৎপন্ন ও বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের পথে রয়েছে। জৈব সার প্রতি কেজি ৫০ নেপালী রুপি (প্রায় ৪১ টাকা) পর্যন্ত বিক্রি হয় এবং নেপালে সারের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি রয়েছে। বর্জ্যে ফসলের জন্যে প্রয়োজনীয় উচ্চ ঘনত্বের ফসফেট ও নাইট্রোজেন রয়েছে।
ঘোরাহি উপ-মেট্রোপলিটন শহর ও কোম্পানিটির মধ্যে চুক্তিটি ২০ বছর মেয়াদী, যার পরে গ্যাস উৎপাদন ও বিতরণ সুবিধা শহরের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এই সময়ের মধ্যে বিকল্প শক্তি ও নেপাল জ্বালানি উন্নয়ন কোম্পানি উপ-মেট্রোপলিটন শহরকে সুবিধা থেকে উৎপন্ন লাভের ৫ শতাংশ অংশ প্রদান করবে।
কাঠমুন্ডুর আবর্জনা সব এসে জমে নুওয়াকোটের বাঞ্চারে ডান্ডায় এবং না রাখা প্রতিশ্রুতি উদ্ধৃত করে স্থানীয়রা তাদের বিরোধিতা বাড়িয়েছে। কিন্তু কাঠমুন্ডু তার বর্জ্য, পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, কাচ ও ধাতু বাছাই করে জীবাণুবিয়োজ্য অংশ থেকে গ্যাস তৈরি করলে খুব কম আবর্জনাই জমিভরাটের স্থানে আসবে।
সম্ভবত নেপালের সবচেয়ে নোংরা শহরগুলির মেয়রদের তারা কীভাবে এটি করে দেখার জন্যে ঘোরাহিতে একটি শিক্ষাসফরে যাওয়া উচিত।