পাকিস্তানে টিকিটক ৫মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ

Photo by cottonbro from Pexels

পেক্সেলেস থেকে নেওয়া কটনব্রোর ছবি। একটি পেক্সেলেস লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত।

পাকিস্তান পাঁচ মাস আগে প্রথমবারের মতো চীনা অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করার পরে আবার চালু করে দেয়। ১১ মার্চ তারিখে দ্বিতীয়বারের মতো অ্যাপটি আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পাকিস্তান টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ (পিটিএ) টিকটকের বিষয়বস্তুকে “অশ্লীল, অনৈতিক এবং ঐতিহ্যের পরিপন্থী” বলে বর্ণনা করা খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশোয়ার উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় মেনে সকল ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারীকে মঞ্চটিতে ট্র্যাফিক না পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।

এই রায়টি ছিল ভিডিও অ্যাপটি ইসলামি জীবনবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে কর্মকে সীমাবদ্ধ করার মাধ্যমে সাংবিধানিক বিধিমালা লঙ্ঘন করে বলে পেশোয়ারের ৪০জন বাসিন্দার দায়ের করা একটি যৌথ আবেদনের প্রতিক্রিয়া।

পিটিএ টুইট করেছে:

পেশোয়ার উচ্চ আদালতের আদেশের সম্মানজনক সম্মতিতে পিটিএ পরিষেবা প্রদানকারীদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে টিকটক অ্যাপে প্রবেশাধিকার বন্ধ করার নির্দেশনা জারি করেছে। আজ (২৩ মার্চ) একটি মামলার শুনানির সময় পেশোয়ার উচ্চ আদালত অ্যাপটি অবরোধের নির্দেশ দিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে দ্বিতীয়বার মতো টিকটককে অবরোধ করা হয়েছে। গত অক্টোবরে আদালতের কোন আদেশ ছাড়াই বেআইনী বিষয়বস্তু সরাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে পিটিএ এটিকে অবরোধ করেছিল।

টিকটকের মূল সংস্থা বাইটড্যান্স পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে বিষয়বস্তু সংশোধন জোরদারের নিশ্চয়তা প্রদান করার পর এই নিষেধাজ্ঞাটি দশদিন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল

সেসময় বিশ্লেষকরা বলেছিলেন এই নিষেধাজ্ঞাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল  পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চীনের প্রতি শত্রুতা না করে বরং সেন্সর আরোপ করা।

আরো পড়ুন: Pakistan lifts ban on TikTok with conditions (শর্তসাপেক্ষে টিকটকের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে পাকিস্তান)

টিকটকের প্রতিক্রিয়া

সর্বশেষ অবরোধটির পরে টিকটক তার পরিষেবার শর্তাদি ও সম্প্রদায়গত নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী বিষয়বস্তু সনাক্ত ও পর্যালোচনা করতে বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সংশোধন কৌশলের সংমিশ্রণ ব্যবহার করে থাকে বলে একটি বক্তব্য প্রকাশ করেছে।

সংস্থাটি তার এইচ২ ২০২০ স্বচ্ছতা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছে যেখানে পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী লিখিত বিষয়বস্তু নামিয়ে নেওয়ার উদাহরণ রয়েছে। তবে সংস্থাটি যে মঞ্চে তার ব্যবহারকারীদের কোম্পানির নীতিমালার মধ্যে সীমাবদ্ধ সৃজনশীল বহিঃপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সেই কথাও স্বীকার করেছে।

টিকটক পাকিস্তানে খুব জনপ্রিয়। দেশটির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিষেধাজ্ঞাটির সমালোচনা করেছে।

টুইটার ব্যবহারকারী হুমায়ুন চৌধুরী বলেছেন:

দয়া করে ইন্টারনেটও ব্লক করুন

রাজনৈতিক ভাষ্যকার জাফর রাজা বলেছেন:

উন্মত্ত সিদ্ধান্ত। দয়া করে শুধু সমস্যাসৃষ্টিকারীদের বের করুন। বাক স্বাধীনতা ও বিনোদনের জন্যে এটি খুব বেশি নিবর্তনমূলক

মানবাধিকারকর্মী গুলালাই ইসমাইল বলেছেন:

[…] রাষ্ট্রকে কিছু নিষিদ্ধ করতে হলে সন্ত্রাসবাদ নিষিদ্ধ করুক। […] তরুণরা তোমরা ভিপিএন চালু করো, প্সাইফোন ভিপিএন একেবারে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

২০২০ সালের অক্টোবরে পাকিস্তান সামাজিক যোগাযোগের মঞ্চগুলিতে “মানহানিকর, অশ্লীল, ধর্মবিদ্বেষী ও যৌন” বিষয়কে নিষিদ্ধ করার জন্যে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করে।  এর সাথে সঙ্গতি বিধান করতে ব্যর্থ মঞ্চগুলিকে ৫০ কোটি রুপি (প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .