১৯১৭ সালে তোলা বিতোলায় দুটি শিশুর ছবি এবং ২০১৭ সালে নদীসহ সেই একই স্থান। ছবিতে শিশু দুজনের একজন মাথায় ফরাসী সামরিক বাহিনীর হেলমেট পড়ে আছে। অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।
আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে, মেসিডোনিয়া ছিল তথাকথিত মেসিডোনিয়া রণাঙ্গনের অংশ, যা একই সাথে সালোনিকা (থেসালোনিকা থেকে যার উৎপত্তি) অথবা ফ্রান্সের পূর্ব রণাঙ্গনের (ফ্রন্ট ডে ওরিয়েন্ট) অংশ, যেটির অবস্থান ছিল বর্তমান গ্রীসের সীমান্ত এলাকায়।১৯১৭ সালে মার্চ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মিত্র বাহিনীর অধিকারে থাকা বিতোলা শহর অক্ষ বাহিনীর ১৩ টি কামানের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়, যে হামলায় বিষাক্ত গ্যাসও ব্যবহার করা হয়েছিল।
আবার ২০১৭ সালে ফিরে আসা, উচ্চ বিদ্যালয় কয়েকজন ছাত্রছাত্রী যারা এক প্রকল্পে অংশ নেয়, যে প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন শহরের শিশুরা যেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা সম্বন্ধে জানতে পারে, সে উদ্দেশ্যে তারা বিতোলায় “তখন এবং এখন” নামের একটি ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তারা ১৯১৭ অথবা ১৯১৮ সালে তোলা ছবির পাশে শহরের উক্ত একই স্থানের এলাকার ছবি সাজিয়ে তা তুলে ধরে।
এর ফলে প্রাপ্ত ছবিগুলো প্রদর্শন করছে যে বিগত ১০০ বছরে বিতোলা কতখানি পাল্টে গেছে। যখন এই সমস্ত ছবির কয়েকটা বোরড পান্ডায় প্রকাশিত হয়, তখন তা সোশ্যাল মিডিয়া বেশ মনোযোগ আকর্ষণ করে।
ছবি ছাড়াও এই ঐতিহাসিক সময়ের কিছু স্মৃতি হিসেবে রয়েছে সে সময়কার অবিস্ফরিত অস্ত্র- গ্রেনেড, কামানের গোলার খোসা এবং বোমা যা এখনো এই এলাকার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে। প্রতি বছর এলাকার বাসিন্দার অন্তত একবার মাটি খুঁড়ে এই সকল সামগ্রী উদ্ধার করার চেষ্টা করে
এই সার্বিক প্রকল্প যার মধ্যে স্কোপজা, টেটোভো, স্ট্রুমিকা এবং বগদানিচি অর্ন্তভুক্ত বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীর দল অর্ন্তভুক্ত, যারা বিতোলায় তাদের মত ছাত্রছাত্রীদের সাথে মিলিত ভাবে এই ওয়ার্কশপে অংশ গ্রহণ করেছে, যার ভিত্তি ছিল শান্তি নির্মাণ তত্ত্ব এবং মাঠ পর্যায়ের ভ্রমণের মাধ্যমে পুরোনো রণ ক্ষেত্রগুলো অনুসন্ধান করা। এরপর প্রতিটি দল ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করে তারা যা শিখেছে সেগুলো প্রদর্শনের জন্য, তারা এক স্বল্প দৈর্ঘ্য ভিডিও, ইন্টার অ্যাকটিভ মানচিত্র এবং এক সেনার ডাইরি প্রস্তুত করে।
সাধারণ নাগরিকেরা এর আগে যে যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছে সেটির শিক্ষা যদি তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে নতুন সংঘর্ষ প্রতিরোধে এই তরুণেরা সক্রিয় প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারে। এই বিষয়টি বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এমন এক সময়ে যখন সাম্প্রতিক বলকান যুদ্ধের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমর্থন লাভের উদ্দেশ্যে জাতীয়তাবাদীরা ক্রমাগত পুরোনো জখম উন্মোচন করছে, যার মধ্যে ২০০১ সালের মেসেডোনিয়ার সশস্ত্র সংঘর্ষ ।
গ্লোবাল ভয়েসেস- এই সকল ছবি পুনরায় প্রকাশ করার অনুমতি লাভ করেছে, এর জন্য অ্যাসোসিয়েশন অফ লোকাল ডেমোক্রেসি এজেন্সি –স্কোপজাকে ধন্যবাদ, যে প্রতিষ্ঠানটি স্কোপজার বৃটিশ দূতাবাসের সহযোগিতায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটায়। এই প্রকল্পে যারা অংশ গ্রহণ করেছিল, তারা হচ্ছে অধ্যাপক ইলজো তারজোকোভোস্কি, এবং ভিক্তোরিজা ভোদিলোভাস্কা, এভা ক্রাউস, ভেসনা ত্রাজচেভাস্কা, মারিজান কোটেভাস্কি, ব্লাগোজ জানাকেইভাস্কি এবং গোরাজদ ডিমোভাস্কি-এর মত ছাত্রছাত্রীরা।