অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী ও টোরেস স্ট্রেইট দ্বীপের ভাষার বৈচিত্র্য প্রদর্শনের ক্ষেত্রে সেরা উপায় হচ্ছে একটি মাল্টিমিডিয়া অনলাইন মানচিত্র।
বুটচুলা ভাষায় গামবেই মানে হচ্ছে “একসাথে”। এটি কুইন্সল্যান্ডের হারভে বে অঞ্চলের ভাষা। এই গামবেই হচ্ছে এক বর্ণিল মানচিত্র যা দেশটির আদিবাসী ৭৮০টি ভাষা বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে। এখানকার প্রতিটি দৃশ্যমান বিন্দু এই অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন ভাষার প্রতিনিধিত্ব করছে এবং ওই সকল বিন্দুগুলোর একই রঙের বিন্দু নির্দেশ করছে এই সকল ভাষার চরিত্রগত মিল। এর মধ্যে মাত্র ২০টি ভাষা এমন, যে অল্প কিছু লোক এই ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারে তারা তাদের প্রতিদিনের আলাপচারিতায় এই ভাষা ব্যবহার করে। কাজে একই ধরনের ভাষার মাঝে যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হওয়ার বিষয়টি যৌথ সমর্থন প্রতিষ্ঠায় এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়।
কুইন্সল্যান্ড ইন্ডিজেনাস ল্যাঙ্গুয়েজ এ্যাডভাইসরি কমিটির সাথে ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ অস্ট্রেলিয়ার এক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই সাইটটি গঠন করা হয়েছে। নাইয়ুরাঙ্গু নাগারডজির জন্য যে প্রযুক্তি গ্রহণ করা হয় এটি তা শেয়ার করছে। একই ধরনের এক মানচিত্র কুইন্সল্যান্ডের ভাষাগুলোকে প্রদর্শন করছে।
এইসব ভাষা কিংবদন্তীর কাছ থেকে এই সকল অবদান সংগ্রহ করা হয়েছে, যারা আদিবাসী এবং টোরসে স্ট্রেটস আইল্যান্ডের বিভিন্ন ভাষার সমর্থক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই সকল ব্যক্তি ভাষা সংক্রান্ত ভিডিও প্রমাণ সরবরাহ করছে যা বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভাষা রক্ষণাবেক্ষণ করা ও পুনর্জীবিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এই সকল অবদান ওই সকল স্থানীয় নেতাদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যারা নিজ সম্প্রদায়ের সামনে নিজেদের তুলে ধরে, ব্যক্তিগত ভাবে আদিবাসী ভাষার প্রচারনায় যাদের উপদেশ ও সমর্থনের জন্য আহ্বান জানানো হয়।
প্রমাণ স্বরূপ ভিডিওতে ভাষাগত সম্প্রদায় কী ভাবে তাদের নিজেদের প্রতিনিধিত্ব, তাদের স্থানের নাম যাচাই করবে এবং নিজেদের ভাষার বানান কী ভাবে উচ্চারণ করবে সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে হয়েছিল। ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজেস অস্ট্রেলিয়ার মেলিন্ডা হোল্ডেন-এর মতে এই বিষয় অস্ট্রেলীয় ভাষাসমূহের জন্য প্রাসঙ্গিক যেহেতু এই সকল ভাষা এখানে অন্য উপনিবেশিক শক্তির বসতি স্থাপনের আগে কথ্য ভাষা রূপে ব্যবহৃত হত।
বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে মিশনারী, সরকারী কর্মকর্তা, ভাষাবিদ এবং অন্যান্য গবেষকেরা এদের নাম/শব্দ বানান করে এসেছে, যারা এই ভাষাগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করেছে এবং স্বয়ং সম্প্রদায়ের সদস্য।
এই মানচিত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এর সম্প্রদায়ের হাতে ফিরিয়ে দেয় যাতে এই শব্দগুলো কী ভাবে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে সে বিষয়ে সম্প্রদায় নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
আরেক জন “প্রবাদ প্রতীম ভাষাবিদকেও” এই মানচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে, যার নাম ব্রিজেট। তিনি ওয়াররাগামেই ভাষার এক লেখিকা, যিনি লিখেছেন:
আমার ভাষায় আমি একজন ডজাম্বাই। এর মানে হচ্ছে একজন বৃদ্ধা রমণী। আমি একজন ভাষাবিদ। নিজের পরিচয় প্রদানে আমি সম্প্রদায়ের ভাষাবিদ বা নিজস্ব ভাষার ভাষাবিদ শব্দটি ব্যবহার করে থাকি। আমি ইংরেজি ভাষা থেকে আমার ভাষায় অনুবাদ করি, এবং ভাষা শিক্ষার জন্য যে সমর্থন প্রয়োজন সে সকল লেখা অনুসন্ধান করি। আমি আমাদের সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রচুর কাজ করি । আমাদের সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জন্য আমাদের অনেক কিছু করার আছে, আলাপ করা এবং একমত হওয়া ভাষাকে সমর্থনের জন্য
এটিকে একটি বাড়তি উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে যাতে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায় এবং টোরেস স্ট্রেইট আইল্যান্ডের নাগরিকেরা গামবেই-এ অংশ গ্রহণ করতে পারে এবং ল্যাঙ্গুয়েজ লিজেন্ডস এবং আঞ্চলিক ভাষা কেন্দ্রের সাথে মিলে নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ভাষা নিয়ন্ত্রণ অবদান রাখতে এবং অংশগ্রহণ করতে পারে। করতে পারে। এর বিষয়বস্তু সম্প্রতি এই মানচিত্রে প্রদর্শিত হয়েছে, যা হয়ত শ্রেণীকক্ষে ব্যবহার করা যেতে পারে, প্রধান প্রধান বিষয়ে পাঠদানের ক্ষেত্রে, যার মধ্যে রয়েছে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং পৌর বিজ্ঞান। যে সমস্ত লেখা এটি সরবরাহ করেছে সেগুলো অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পাঠ্যসূচির সাথে যুক্ত এবং প্রতি বছর বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের পাঠগুলো তুলে ধরে।