বলকান অঞ্চলের কিছু কিছু অংশে মার্চ মাসের প্রথম দিনের সঙ্গে যুক্ত একটি প্রথা পালন করা হয়, যাকে বলা হয় দিদিমা মার্চ দিবস। এই দিনটিতে বসন্তের আগমনকে চিহ্নিত করে সকলে প্রিয়জনদের মাঝে লাল-সাদা রেশমের থোপনা, পম-পম (ছোট ছোট পশমের বল) বা বিনুনি বাঁধা ব্রেসলেট বিনিময় করে থাকে।
হাতে বানান এই কবচগুলোর অনেক নাম আছে। যেমনঃ মারতিনকি (যা মেসিডোনিয়াতে মাপথিনকি), মারতেনিতসা (বুলগেরিয়াতে ), মারতিসর (রোমানিয়া এবং মলদোভা), মারতিস (গ্রিসে)। এগুলো শরীরের পরা হয়, পোশাকের সামনে পিন দিয়ে আটকান হয় অথবা প্রকৃতি ফুলে ফুলে ভরে না ওঠা পর্যন্ত কব্জিতে বেঁধে রাখা হয়, আর তারপর সেগুলো গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। রোমানীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শিক্ষামূলক এই ভিডিওটিতে তাদের মারতিসরকে আরো গভীরভাবে ব্যাখ্যা করেছেঃ
বলকান মানুষের দিদিমা মার্চ দিবসকে একটি অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে রক্ষা করার জন্য ২০১৩ সালে চার দেশ-ম্যাসেডোনিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও মলদোভা একত্রিতভাবে ইউনেস্কোর কাছে একটি বহুজাতিক আবেদন জমা দিয়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউনেস্কো রাষ্ট্রগুলোকে আবেদনটি পুনরায় জমা দিতে আহ্বান জানায় এবং দিবসটিকে সুরক্ষার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
চিরন্তন এই সংস্কৃতি চর্চাকে আরও উন্নীত করার জন্য ম্যাসেডোনিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া ও সার্বিয়া থেকে চারটি সংস্থা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান “শুভ দিদিমা মার্চ দিবস ২০১৬” প্রকল্পটি চালু করেছে। এই প্রকল্পে একটি ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে তিনটি দেশের হস্তনির্মিত কবচের সাথে সাথে বিভিন্ন প্যানেল, প্রামাণ্যচিত্র, সৃজনশীল কর্মশালা এবং একটি বাজার রয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের নিজেদের জন্য কবচ কিনতে পারবেন।
প্রাতিষ্ঠানিক আন্তঃসীমান্ত অংশীদারিত্বের অংশ “সংযুক্ত ইউরোপের ভেতরে জাতীয় পরিচয়” শীর্ষক প্রকল্প। ভ্রাম্যমাণ এই প্রদর্শনীর চূড়ান্ত গন্তব্য অজানা। প্রথম স্কোপজে (ম্যাসেডোনিয়া) পরিদর্শন করা হবে, এরপর ভিডিন (বুলগেরিয়া) এবং ২০১৬ সালের মার্চ মাসে বুজাউ (রোমানিয়া) পরিদর্শন করা হবে। তাঁদের এই কবচ ঐতিহ্যকে মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বকারী তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করতে ইউনেস্কোর কাছে জানান বহুজাতিক আবেদনটিকে সরাসরিভাবে সমর্থন করার জন্য প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে।
বসন্তকাল উদযাপনের এই আনন্দটিকে আর বলকান অঞ্চলে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক নয়। আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, বুলগেরিয়া থেকে দেয়া ভিডিও টিউটোরিয়ালটিতে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেভাবে নিজেই নিজের মারতিনকা/ মারতেনিতসা/ মারতিসর/ মারতিস তৈরি করে এই প্রকল্পে অংশ নিতে পারেন।