
টোকিওর আসাকুসা পার্ক (১৯২২) । ছবির উৎসঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা, পাবলিক ডোমেইন।
জানুয়ারি মাসের শুরুতে, নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরী (এনওয়াইপিএল) পাবলিক ডোমেইন ১৮০,০০০ টি ছবি নিয়ে গড়া এক ডিজিটাল সংগ্রহশালার ছবি উন্মুক্ত করে দেয়। যে কেউ যে কোন কাজে এই সমস্ত ছবি ব্যবহার করতে পারবে। বিগত শতক অথবা এ রকম কাছকাছি সময়ের পৃথিবীর যে কোন স্থানের ছবি এতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
জাপানপ্রেমীদের কাছে এনওয়াইপিএল–এর পাবলিক ডোমেইনের সংগ্রহশালা হচ্ছে সহস্র ছবির এক সম্পদশালা।
কখনো কখনো এই পুরো সংগ্রহশালা নতুন এক বইকে পুনরায় তুলে ধরে, যেমন এর এক উদাহরণ হচ্ছে “সুন্দর জাপানের প্রকৃতি এবং দৃশ্যাবলী” নামক ছবির বই। জাপানের রাজকীয় রেল বিভাগের জন্য ১৯১০ সাল-এর দিকে এই বই ছাপা হয়, যে বই-এর ছবিগুলো আলাদা ভাবে রং দিয়ে করা রঙ্গিন করা। এই সকল ছবি তুলেছিল জাপানে স্থিরচিত্রের পথপ্রদর্শক ওগাওয়া কাজুমাসা।
এই ছবির বই-এর উদ্দেশ্য ছিল সে সময় সদ্য বিদেশীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া জাপানকে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা, যারা সে সময় এই দেশের ভেতর দিয়ে অন্য দেশে যাচ্ছিল, অথবা জাপানে কাজ করছিল।

জাপান সরকারের রেলওয়ে বিভাগের এক সাধারণ মানচিত্র। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন
ওগাওয়ার ছবি, চিরায়ত জাপানের এক ভিন্ন এক স্বরকে প্রকাশ করে, যা ভিক্টোরিয়ান যুগের শেষ সময়ের এবং এডোয়ার্ড যুগের জাপানের জীবনকে তুলে ধরে।

কিয়োটোর কামোগায়ার এক গ্রীষ্মে শীতল সন্ধ্যা উপভোগ করা। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
তবে জাপানের চারপাশ এবং এর প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী নিয়ে প্রকাশিত অনেকগুলো ছবি একটি উদ্দেশ্যেকে তুলে ধরেছে, আর তা হচ্ছে ২০ শতকের শুরুর জাপানের জীবন যাপনের এক অসাধারণ ঝলক প্রদর্শন করা।

সে সময়কার টোকিওর এক আধুনিক ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সজ্জা। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
১৯১০ সালের জাপান এখনো কোন এক ভাবে একশ বছর পরেও অনেকটা একই রকম ভাবে সংরক্ষিত। যেমন, এনোশিমার উপকুলীয় এলাকা, যা কিনা টোকিও এবং ইয়োকোহামার মাঝে অবস্থিত, আজকে, এই ২০১৬ সালেও তাকে পুরোনো রূপে চেনা যায়।

এনোশিমা, টোকিওর কাছে এক জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
এখানে সেই একই স্থানের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে যেখান থেকে মাউন্ট ফুজি পর্বত দেখা যাচ্ছে:

“七里ガ浜から見た江ノ島と富士山” (শিরিগাহামা থেকে মাউন্ট ফুজি এবং এনোশিমার দৃশ্য)। ছবি সূত্রঃ ফ্লিকার ব্যবহারকারী কাজুহিরো তাসুগিতা, সিসি বাই-এসএ ২।
একই সাথে দি নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরীর পাবলিক ডোমেনের ডিজিটাল আর্কাইভ অন্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত জাপানে ঐতিহাসিক ছবিও তুলে ধরেছে-এখানে অজানা ফটোগ্রাফারের (এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে) তোলা টোকিওর নিহোনবাশী এলাকার রঙ্গিন পোস্টকার্ড, যা প্রায় ১৯২২ সালের দিকে তোলা হয়েছিল।

টোকিওর নিহোনবাশী দোরি এলাকা। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
এর ঠিক এক বছর পরে, এ অঞ্চল এবং টোকিও এবং ইয়োকোহামার অবশিষ্ট শহুরে এলাকা ১৮২৩ সালের বিখ্যাত ভয়াবহ কান্টো ভূমিকম্পে ধ্বসে পড়ে এবং মাটির সাথে মিশে যায়।
তবে, এই রঙ্গিন পোস্টকার্ডের ঠিক মাঝে যে পাথরের সেতু দেখা যাচ্ছে, তা এখনো ব্যবহার হচ্ছে, যদিও এখন এর উপর দিয়ে এক চলার পথ বা এক্সপ্রেস ওয়ে তৈরি হওয়ার কারনে এটি ঢাকা পড়ে গেছে।

নিহোনবাশী সেতু, ছবিতে দেখা যাচ্ছে উপর দিয়ে শাটো এক্সপেস-এর রাস্তা চলে গেছে। ছবি উইকিপিডিয়ার পাবলিক ডোমেইন থেকে নেওয়া।
ফটোগ্রাফার ওগাওয়া কাজুমাসা, জাপানের রাজকীয় রেল বিভাগের সিরিজ ছবির জন্য পুরো জাপান চষে বেড়িয়েছেন-এখানে ওনামিচি শহরের বিস্তৃত এক ছবি, যা হিরোশিমার বাইরে সমুদ্রের খাড়ি এলাকায় অবস্থিত।

ওনামিচির কাছে সমুদ্রের খাড়ি এলাকার এক ঝলক। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
২০১৫ সালে সেই একই স্থানের দৃশ্য।

尾道 おのみち (ওনামিচি, হিরোশিমা)। ছবি সূত্রঃ ফ্লিকার ব্যবহারকারী তোমারে চিয়াং-এর। সিসি বাই ২.০–এর অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।
মেইজি যুগে শিল্প বিপ্লবের কেন্দ্রস্থলের ছবি তোলার জন্য আরেকজন ফটোগ্রাফার জাপানের নাগাসাকিতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন, যা জাপানের সবচেয়ে পশ্চিমে অবস্থিত।
বিংশ শতকের শুরুতে নাগাসাকির মিৎসুবিসি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রের ছবি।

মিৎসুবিসি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র, নাগাসাকির উপকূল। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।
প্রতীক হয়ে ওঠা সেই হ্যামারহেড ক্রেন আজও সেভাবে দাঁড়িয়ে, যদিও এটিকে তার মূল অবস্থান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে।

নাগাসাকির মিৎসুবিসির হ্যামারহেড ক্রেন। ছবি সূত্র উইকিপিডিয়া মেরিন-ব্লু।
এই সমস্ত ছবি, যা তাদের নিজেদের মত চিত্তাকর্ষক, এই সকল ছবি এনওয়াইপিএল ডিজিটাল লাইব্রেরির ছবি সংগ্রহশালা থেকে উঠে কিছু ছবি মাত্র। যদি আপনি আরো ছবি আবিস্কার করতে চান, তাহলে মন্তব্যের ঘরে একটি মন্তব্য রেখে যান!

জাপান, আর এর জনসংখ্যা। এখানে দেশটির জনসংখ্যার তুলনামূলক ঘনত্ব তুলে ধরা হয়েছে (প্রায় ১৮৮০ সালের আদম শুমারী অনুসারে) এখানে হালকা রং কম ঘনবসতি পূর্ণ, আর গাঢ় রং দিয়ে বেশি ঘনবসতি পুর্ণ এলাকা বোঝানো হয়েছে। ছবি সুত্রঃ ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরী অফ আমেরিকা। পাবলিক ডোমেইন।