কারাবন্দী স্বামীর হয়ে টুইট করার কারণে সৌদি আরবে সামার বাদাউয়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে

Human rights defender Samar Badawi has been arrested in Saudi Arabia reportedly for tweeting on behalf of her husband, jailed human rights activist and lawyer Waleed Abulkhair. Photograph shared by her sister in law Ensaf Haidar (@miss9afi) on Twitter

মানবাধিকার রক্ষায় নিয়োজিত সৌদি নাগরিক সামার বাদাউয়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে জেলে থাকা তার স্বামী মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবী ওয়ালেদ আবুলখায়িরের স্বপক্ষে টুইট করার অভিযোগে। টুইটারে ছবি প্রদর্শন করেছে সামার-এর ভাবি এনসাফ হায়দারি (@মিস৯য়াফি)।

আজকে সৌদি মানবাধিকার কর্মী সামার বাদাউয়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার কারাবন্দী স্বামী ওয়ালেদ আবুলখায়ির-এর হয়ে তার টুইটার একাউন্ট চালাচ্ছেন, তার স্বামী ওয়ালেদ সৌদি আরবের অন্যতম মানবাধিকার আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মী।

২০১৪ সালে নতুন “গণ আদেশকে অপমান করা” এবং “গণমতকে উসকে দেওয়া” নামক নতুন সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অভিযুক্ত আবুলখায়িরকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সংবাদে জানা গেছে গ্রেফতারের কয়েক ঘন্টা পরে জামিনের বিনিময়ে সামার বাদাউয়িকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে তাঁকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে

এই সংবাদটি টুইটারে তুলে ধরেন সামার-এর ভাবি এনসাফ হায়দারি, যার স্বামী, সামারের ভাই ও উদারনৈতিক ব্লগার রাফি বাদাউয়ি। উল্লেখ্য যে রাফি নিজে ইসলামকে অপমান করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে, যাকে শাস্তি হিসেবে ১,০০০ বেত্রঘাত এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

হায়দার লিখেছে :

জরুরীঃ সামার বাদাউয়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওয়ালেদ আবুলখায়ির–এর টুইটার একাউন্ট ব্যবহার করে লেখার জন্য।

এবং সে যোগ করেছে:

জরুরী: সামার বাদাউয়িকে দাহরানের কেন্দ্রীয় জেলখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে, যেখানে একই সাথে রাফি বাদাউয়ি এবং ওয়ালেদ আবুলখায়িরকে রাখা হয়েছে।

সারা বিশ্বের নেট নাগরিকেরা বাদাউয়ির গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে,যার মধ্যে মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিক রয়েছে (এই লিঙ্কে গেলে আরবী ভাষায় লেখা দরখাস্ত দেখতে পাবেন), যারা সৌদি আরবের সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাজা সংবাদ [১/১৩/২০১৬ তারিখ, গ্রিনিচ মান সময় বিকেল পাঁচটা] সংবাদে জানা গেছে গ্রেফতারের কয়েক ঘন্টা পরে জামিনের বিনিময়ে সামার বাদাউয়িকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে তাঁকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

বাদাউয়ির গ্রেফতারকে সৌদি এলহাম আল মানেয়া “অবিবেচনা পূর্ণ” এক কাজ হিসেবে বর্ণনা করছেন:

একেবারে অবিবেচকের মত কাজঃ সামার বাদাউয়িকে গ্রেফতার করা, যারা শান্তিপূর্ণ ভাবে সংস্কার দাবি করছে তাদের জন্য বর্তমান সৌদি নেতারা পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে।

ব্লগার এমান আল নাজ ফান লিখেছে :

শান্তিপূর্ন এক একটিভিস্ট এবং ২০১২ সালের সাহসী নারীর পুরস্কার বিজেতা সামার বাদায়ুইকে আজকে গ্রেফতার করা হয়েছে

এবং কানাডা থেকে জেসান আহ্বান জানাচ্ছে নাগরিকেরা যেন তারা “১০০০ বেত্রাঘাতঃ কারণ আমি যা ভাবি তাই বলি” শিরোনামে লেখা রাফি বাদাউয়ির বইটি পড়ে দেখতে বলছেন:

সামার বাদাউয়ি মানবাধিকার রক্ষার জন্য লড়েছে, যেমনটা লড়েছে তার ভাই। আইবুকসে রাখা ১০০০ বেত্রাঘাত নামে তার ভাইয়ের লেখা এই বইটি পড়ুন

অন্যরা যেমন মায়সা আল আমাউদি এবার বাদাউয়ির সাম্প্রতি করা টুইট শেয়ার করেছে, যেখানে লেখা হয়েছে:

শুধুমাত্র কোন একটা বাক্য কাউকে কারাগারে পাঠানোর জন্য যথেষ্ট।

উক্ত টুইটে বাদাউয়ি লিখেছে:

নিরবতা আমাদের খুন করছে কিন্তু আমরাও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

কিন্তু বার দাউয়ুর গ্রেফতারও সৌদি নাগরিকদের নিরব করতে পারেনি। এই ছদ্ম পরিচয়ের টুইটার ব্যবহার কারী টুইট করেছে :

নিপীড়ন বাড়ছে, দূর্নীতি এবং চৌর্যবৃতি রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এলোমেলো সিদ্ধান্ত প্রদান ক্রমশ বাড়ছে, আমাদের স্বাধীনতা এবং মর্যাদা ক্রমশ ক্রমশ কমতে থাকা ছাড়া কোন কিছু আর কমছে না।

আরেক জন টুইটার ব্যবহার কারী যারা বাদাউয়ির বিরুদ্ধে অবিচার করছে, একজিন টুইটার ব্যবহার কারী প্রার্থনা করছে যেন তাদের প্রতি স্রষ্টার ক্রোধ নেমে আসে:

তার স্বামী এখন কারাগারে। এখন সেও কারাগারে, আর তার কন্যা এতখন একা, মাতা এবং পিতাকে ছাড়া। যারা অবিচার করছে,তাদের উপর স্রস্টার ক্রোধ নেমে আসুক।

এবং নেট নাগরিকেরা শ্বাস নিতে ভুলে গেছে :

আমরা এমন এক দেশে বাস করি যেখানে শ্বাস নিতেও ভয় করে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .